ঢাকা ০৬:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

উত্তর-মধ্যাঞ্চলের নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:০১:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৬১৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত আছে। যমুনা নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়ে আছে হাজারো মানুষ। জলমগ্ন হয়ে আছে গ্রামীণ সড়ক ও কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি।

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া তিনটি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর ও কালিহাতীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও নিকরাইল ইউনিয়নের পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ি ও চিতুলিয়াপাড়া এলাকায়। ফলে এলাকার মানুষজন পানিবন্দি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে। তবে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে সেইসব এলাকাগুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

উজানে পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ যমুনা নদীর পয়েন্ট ৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও জেলার কাজিপুর পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপদসিমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এরই মধ্যে জেলার অভ্যান্তরিন চলনবিলসহ করতোয়া, ইছামতি, বড়াল, ফুলঝোড় ও হুড়াসাগর নদীর পানিতে জেলার ৫টি উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নের কয়েকশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে বেড়েই চলছে পানি বন্দী পরিবারের সংখ্যা।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ভারতের আসামে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার বন্যা সতর্কীকরণ পূর্ভাবাসে বলা হয়েছে জেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। তবে কোনো বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।

ফরিদপুরে পদ্মার অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে শত শত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি সহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পদ্মা পাড়ের বহু মানুষ।গত কয়েক দিনের নদী ভাঙ্গনে জেলার সদরপুর উপজেলার বিচ্ছিন্ন চর দিয়ারা নারকেল বাড়ীয়া ইউনিয়নের প্রায় দেড় কিলোমিটার এর মত এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে চরের কয়েক হাজার মানুষ ।

তবে গাইবান্ধায় কমতে শুরু করেছে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি। গত ১২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমে জেলার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের চর ও নিম্ন অঞ্চল ডুবে আছ। চর ও নিম্ন অঞ্চলে পানি ঢোকায় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।

অন্যদিকে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে।নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম,হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী,কালিগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,সদর উপজেলার রাজপুর,খুনিয়াগাছ,গোকুন্ডাসহ ৭টি পয়েন্টের আবাদিজমি,বসতভিট,গাছপালা সহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গনরোধে পানি উন্নয়ণ বোর্ড বালুর বস্তা নদীতে ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্ঠা চালাচ্ছে। এদিকে ভাঙ্গন কবলিত লোকজন বাড়ীঘর সরিয়ে অন্যত্র নিচ্ছেন।আশ্রয় নিচ্ছেন সড়কের ধারেসহ বিভিন্ন উচু স্থানে।

কুড়িগ্রামে প্রায় ৩০কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে নদ-নদীর ভাঙ্গন। এছাড়াও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫টি স্থানে ৭৮০মিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫ হাজার ২৮০টি পরিবারের প্রায় ২০হাজার মানুষ। প্লাবনে নিমজ্জিত রয়েছে জেলায় আমন, সবজিসহ প্রায় ৫ হাজার ৬৮৩ হেক্টর আবাদি জমি।

নিউজটি শেয়ার করুন

উত্তর-মধ্যাঞ্চলের নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত

আপডেট সময় : ০৮:০১:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত আছে। যমুনা নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়ে আছে হাজারো মানুষ। জলমগ্ন হয়ে আছে গ্রামীণ সড়ক ও কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি।

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া তিনটি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর ও কালিহাতীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও নিকরাইল ইউনিয়নের পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ি ও চিতুলিয়াপাড়া এলাকায়। ফলে এলাকার মানুষজন পানিবন্দি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে। তবে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে সেইসব এলাকাগুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

উজানে পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ যমুনা নদীর পয়েন্ট ৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও জেলার কাজিপুর পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপদসিমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এরই মধ্যে জেলার অভ্যান্তরিন চলনবিলসহ করতোয়া, ইছামতি, বড়াল, ফুলঝোড় ও হুড়াসাগর নদীর পানিতে জেলার ৫টি উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নের কয়েকশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে বেড়েই চলছে পানি বন্দী পরিবারের সংখ্যা।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ভারতের আসামে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার বন্যা সতর্কীকরণ পূর্ভাবাসে বলা হয়েছে জেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। তবে কোনো বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।

ফরিদপুরে পদ্মার অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে শত শত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি সহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পদ্মা পাড়ের বহু মানুষ।গত কয়েক দিনের নদী ভাঙ্গনে জেলার সদরপুর উপজেলার বিচ্ছিন্ন চর দিয়ারা নারকেল বাড়ীয়া ইউনিয়নের প্রায় দেড় কিলোমিটার এর মত এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে চরের কয়েক হাজার মানুষ ।

তবে গাইবান্ধায় কমতে শুরু করেছে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি। গত ১২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমে জেলার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের চর ও নিম্ন অঞ্চল ডুবে আছ। চর ও নিম্ন অঞ্চলে পানি ঢোকায় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।

অন্যদিকে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে।নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম,হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী,কালিগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,সদর উপজেলার রাজপুর,খুনিয়াগাছ,গোকুন্ডাসহ ৭টি পয়েন্টের আবাদিজমি,বসতভিট,গাছপালা সহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গনরোধে পানি উন্নয়ণ বোর্ড বালুর বস্তা নদীতে ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্ঠা চালাচ্ছে। এদিকে ভাঙ্গন কবলিত লোকজন বাড়ীঘর সরিয়ে অন্যত্র নিচ্ছেন।আশ্রয় নিচ্ছেন সড়কের ধারেসহ বিভিন্ন উচু স্থানে।

কুড়িগ্রামে প্রায় ৩০কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে নদ-নদীর ভাঙ্গন। এছাড়াও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫টি স্থানে ৭৮০মিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫ হাজার ২৮০টি পরিবারের প্রায় ২০হাজার মানুষ। প্লাবনে নিমজ্জিত রয়েছে জেলায় আমন, সবজিসহ প্রায় ৫ হাজার ৬৮৩ হেক্টর আবাদি জমি।