মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব ও ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মাধ্যমে নিজ দেশ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চাইছে বাইডেন প্রশাসন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ চিন্তা বাস্তবসম্মত নয়। এছাড়া এক টেবিলে বসতে রিয়াদ বা তেল আবিবেরও তেমন আগ্রহ নেই।
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার ও চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব-ইরানের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ায় পশ্চিম এশিয়ায় প্রভাব কমে যুক্তরাষ্ট্রের। এ অবস্থায় ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিকে সচেষ্ট ওয়াশিংটন।
এ বিষয়ে কাজ করার কথা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। তবে এতে সাফল্য পেতে সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
সৌদি-ইসরায়েলের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ফেরা দুই কারণে গুরুত্বপূর্ণ বাইডেন প্রশাসনের জন্য। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শক্তি প্রদর্শন ও মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির আগের ব্যর্থতা পূরণ।
বাইডেন প্রশাসন বলছে, এই দু-দেশ সম্পর্কে ফিরলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়বে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ও ইরান ব্রিকসে যোগ দিলে নতুন দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি-মার্কিন সম্পর্কও মধুর নয়। বাইডেনের রিয়াদ সফরে জামাল খাশোগির হত্যার প্রসঙ্গ উঠলে, এর বিপরীতে ইসরায়েলি সেনার হাতে সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর কথা তোলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে বলেন, সে বিষয়ে পরোয়া করেন না তিনি। এমনকি তেল উৎপাদনে পরিবর্তন আনতে ওয়াশিংটনের আহ্বানও উপেক্ষা করেছে রিয়াদ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন একটি নিরাপত্তা চুক্তিতে পৌঁছতে চায় সৌদি আরব। এর আওতায় রিয়াদ আক্রান্ত হলে পাশে থাকতে হবে ওয়াশিংটনকে। সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় এ চুক্তিতে রাজি হতে হবে বাইডেন প্রশাসনকে।
বিপাকে আছে ইসরায়েলও। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার অতি ডানপন্থী। তার ওপর চরমপন্থী জায়োনিজম আর জেটের ওপর নির্ভরশীল। ২০২২-এর ভোটের সময় থেকেই পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করার পক্ষে তারা।
এছাড়া সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকের ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের বড় চ্যালেঞ্জ হবে ৬৭ সিনেটরের সম্মতি পাওয়া। আর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের নিরসনও কঠিন ব্যাপার।
বিশ্লেষকদের মতে, এক্ষেত্রে আরও বাস্তবসম্মত চিন্তা করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রেকে। কারণ সৌদি-ইসরায়েল স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি এই সময়ে কোনো দেশের জন্যই অর্থবহ নয়।