অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ চান তথ্যমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৩:০৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৪৪৭ বার পড়া হয়েছে
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। রোববার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আহ্বান জানান।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য সারা পৃথিবীতে বৃদ্ধি পেয়েছে। টার্কিতে ইনফ্লেশন (মূল্যস্ফীতি) রেট ৮২ শতাংশে উঠেছিল। পাকিস্তানে ৩২ শতাংশের ওপরে গিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ১০ থেকে ২০ শতাংশ, রাষ্ট্র ভেদে কোনো দেশে ১০ শতাংশ, কোনো দেশে ২০ শতাংশ, জ্বালানির ক্ষেত্রে আরো বেশি। আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি ৮ থেকে ৯ শতাংশ। অন্য দেশের তুলনায় অনেক কম আছে। তবে এতে জনগণের যে অসুবিধা হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমরা ওয়াকিবহাল।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যাতে জনগণের অসুবিধা না হয়। সে জন্য নানা ধরনের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে। এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হয়েছে। আরো ৫০ লাখ মানুষকে খাদ্য সামগ্রী দেয়া হচ্ছে, ২০ টাকা দামে। এভাবে এবং বিনামূল্যেও চাল দেয়া হচ্ছে। কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে বাংলাদেশে। ওর একটা অজুহাত পেলেই দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে। এদের বিরুদ্ধে আসলে আমাদের একটা সামাজিক প্রতিরোধ দরকার।’
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেউ নোবেল পুরস্কার পেলে কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান হলে বা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এ দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিচার হয়েছে এবং সাজা ভোগ করছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল বিজয়ীদের বিচার হয়েছে এবং তারা জেলও খেটেছে। এমন উদাহরণ আছে। আমাদের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মোহাম্মদ ইউনুসের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে বলছি সত্যটা হচ্ছে এই শ্রমিকদের ৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেয়ার কথা ছিল, যেটির মূল্য হচ্ছে ১২০০ কোটি টাকা। সেটি তিনি জালিয়াতের মাধ্যমে এবং ঘুষ প্রদান করে ৪০০ কোটি টাকায় নামিয়েছিলেন। সেটিও তিনি প্রদান করেননি। সে জন্য বিচার হচ্ছে। আরো অনেক মামলা আছে। কেউ তো আইনের বা বিচারের ঊর্ধে নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে। আমাদের দেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিবৃতি দেওয়া এটি তো আমাদের দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। সে জন্য বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিকরা এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন।’
আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে সরকারে অন্তিমযাত্রা শুরু হবে বলে করা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্যের সমালোচনা করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুসারে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার তাদের। সে অনুসারে নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের চলছে।
নির্বাচন বন্ধের অপচেষ্টা করলে জনগণ রুখে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ধূলিসাৎ করা। এটিই তাদের উদ্দেশ্য। ২০১৪ সালেও তারা এমনটা করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গিয়েও তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। সেই ধরনের চেষ্টা তাদের পক্ষে করা আর সম্ভবপর না। যদি এমন অপচেষ্টা চালায়, তাহলে জনগণ প্রতিহত করবে। নির্বাচন বর্জন কিংবা অংশগ্রহণ করার এখতিয়ার যে কোনো রাজনৈতিক দলের আছে। আমি মনে করি, বিএনপি দায়িত্বশীল দল হলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কারণ গণতন্ত্রকে সংহত করা কেবল সরকারি দলেরই দায়িত্ব না, সব রাজনৈতিক দলের।’
নির্বাচনের সাথে পররাষ্ট্রনীতির সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের নীতি হচ্ছে সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। এটাই পররাষ্ট্রনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এটা অনুসরণ করছেন। এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি। নির্বাচনের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচন হয় দেশে, ভোট দেয় দেশের জনগণ। এটার সঙ্গে কোন দেশের সঙ্গে কী সম্পর্ক আছে, সম্পর্ক নেই, সেটার কোনো প্রভাব থাকা উচিত না। সব দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রেখেই দেশের অগ্রগতি অব্যাহত আছে।’