ঢাকা ১২:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে চলবে ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪৩০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলবে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্রেনটি কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যাবে। এ রুটে অক্টোবরেই পুরোদমে ট্রেন চলাচল করবে।এ তথ্য জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং জানিয়েছে, ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গাগামী ট্রেনটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় যাত্রা শুরু করবে।

উদ্বোধন প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানান, আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা-ফরিদপুর অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যেই বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান ঢাকা-পদ্মা সেতু-ভাঙ্গা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর জন্য অনুমতি দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন রেলপথে নতুন কোচ দিয়ে রেক তৈরি করে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হবে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে। আগামী বছর জুনে যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। তবে সঠিক সময় পেরিয়েও পুরোপুরি চালু না গেলেও আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

রেলওয়ে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা-পদ্মা সেতু-রাজবাড়ী রুটে একটি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের অধীনে চীন থেকে ১০০ নতুন কোচও কেনা হয়েছে। নতুন কোচ দিয়েই ট্রেন চালু করা হবে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৩ মে অনুমোদন হওয়া প্রকল্পটির আগস্ট পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। প্রকল্প অনুমোদনের সময় এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রজেক্ট প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস জানান, কেরাণীগঞ্জে নির্মাণ হচ্ছে প্রথম এলিভেটেড রেলওয়ে স্টেশন। যার দৈর্ঘ্য দেড় কিলোমিটার। লিফট ও চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে এই স্টেশনে যাত্রী ওঠা-নামা করবে।

পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রজেক্টের ব্রিজ অ্যান্ড ভায়াডাক্ট ইনচার্জ আমিনুল করিম বলেছেন, এই রেলপথে ঢাকা-মাওয়া অংশে চারটি বড় রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো শত বছরেও কিছু হবে না।

পদ্মা সেতুতে রেল নিয়ে রেলমন্ত্রী জানান, ১০ অক্টোবর উদ্বোধন হবে কমলাপুর থেকে ভাঙ্গা অংশ। সেদিন মাওয়া, জাজিরা ও শিবচরে তিনটি স্টেশন সিগনালসহ চালু হবে। এর এক সপ্তাহ পর বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল করবে। শুরুতে চলবে একটি ট্রেন। এরই মধ্যে ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচও সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে ঢাকা-যশোর রুটে ট্রেন চালানোর টার্গেট রয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটারের এ রেলপথ রাজধানীতে আনবে নতুন গতি।

রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা। নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ তৈরি হবে ট্রান্স এশিয়ান রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে। যা নতুন করে বিশ্বের বুকে পরিচয় করিয়ে দেবে আগামীর বাংলাদেশকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে চলবে ট্রেন

আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলবে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্রেনটি কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যাবে। এ রুটে অক্টোবরেই পুরোদমে ট্রেন চলাচল করবে।এ তথ্য জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং জানিয়েছে, ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গাগামী ট্রেনটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় যাত্রা শুরু করবে।

উদ্বোধন প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানান, আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা-ফরিদপুর অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যেই বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান ঢাকা-পদ্মা সেতু-ভাঙ্গা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর জন্য অনুমতি দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন রেলপথে নতুন কোচ দিয়ে রেক তৈরি করে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হবে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে। আগামী বছর জুনে যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। তবে সঠিক সময় পেরিয়েও পুরোপুরি চালু না গেলেও আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

রেলওয়ে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা-পদ্মা সেতু-রাজবাড়ী রুটে একটি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের অধীনে চীন থেকে ১০০ নতুন কোচও কেনা হয়েছে। নতুন কোচ দিয়েই ট্রেন চালু করা হবে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৩ মে অনুমোদন হওয়া প্রকল্পটির আগস্ট পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। প্রকল্প অনুমোদনের সময় এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রজেক্ট প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস জানান, কেরাণীগঞ্জে নির্মাণ হচ্ছে প্রথম এলিভেটেড রেলওয়ে স্টেশন। যার দৈর্ঘ্য দেড় কিলোমিটার। লিফট ও চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে এই স্টেশনে যাত্রী ওঠা-নামা করবে।

পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রজেক্টের ব্রিজ অ্যান্ড ভায়াডাক্ট ইনচার্জ আমিনুল করিম বলেছেন, এই রেলপথে ঢাকা-মাওয়া অংশে চারটি বড় রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো শত বছরেও কিছু হবে না।

পদ্মা সেতুতে রেল নিয়ে রেলমন্ত্রী জানান, ১০ অক্টোবর উদ্বোধন হবে কমলাপুর থেকে ভাঙ্গা অংশ। সেদিন মাওয়া, জাজিরা ও শিবচরে তিনটি স্টেশন সিগনালসহ চালু হবে। এর এক সপ্তাহ পর বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল করবে। শুরুতে চলবে একটি ট্রেন। এরই মধ্যে ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচও সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে ঢাকা-যশোর রুটে ট্রেন চালানোর টার্গেট রয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটারের এ রেলপথ রাজধানীতে আনবে নতুন গতি।

রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা। নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ তৈরি হবে ট্রান্স এশিয়ান রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে। যা নতুন করে বিশ্বের বুকে পরিচয় করিয়ে দেবে আগামীর বাংলাদেশকে।