বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাগারে বন্দি নেতাদের রোগব্যাধির ভয়াবহতার বিষয়ে আওয়ামী সরকার ও কারাকতৃপক্ষের উদাসীনতা গভীর চক্রান্তের অংশ। বিনা চিকিৎসায় কারাগারে বন্দি রেখে বিএনপির নেতাকর্মীদের জীবন বিপন্ন করাটাই তাদের নীতি। তিনি অভিযোগ করেন, কারাবন্দি বিএনপির বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে দিনযাপন করছেন। এর আগে চিকিৎসার বিষয়ে বারবার কারাকতৃর্পক্ষকে বলা হলেও কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
আজ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এই সব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘মনুষ্যত্ব, মানবতা ও মানবিকবোধ সবকিছুই এদের (সরকার) লোপ পেয়েছে। শুধু ক্ষমতা ধরে রাখতে সর্বনাশা ধ্বংসের এমন কোনো পন্থা নেই, যা তারা প্রয়োগ করছে না।’
রিজভী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাগারে বন্দি অন্যান্য নেতাদের রোগব্যাধির ভয়াবহতার বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন আওয়ামী সরকার ও কারাকতৃর্পক্ষ। এটি একটি গভীর চক্রান্তের অংশ। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য ওষুধ প্রয়োগ ও সেটির পরবর্তী জটিল সেবা প্রক্রিয়ার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালেই নেই। সরকার সেই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা না করে প্রতিহিংসা পূরণের পথেই এগুচ্ছে। দেশে-বিদেশে কারাগারে আটক অনেক বিরোধী নেতারা বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার নেওয়ার নজীর থাকলেও বর্তমান সরকার গায়ের জোরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা চলমান। আর এই বানোয়াট ও অসত্য মামলায় এদের মধ্যে অনেকেই কারাগারে আটক ছিলেন এবং এখনও আছেন। দেড় যুগ ধরে মিথ্যা মামলায় আটক অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে মারা গেছেন বা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।’
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল বিএনপির বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদের বুকে প্রচণ্ড ব্যথা উঠলে প্রথমে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ তাকে গ্রহণ করেনি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থা গুরুতর। ইতোমধ্যে তার পাঁচটি ব্লক ধরা পড়াতে পাঁচটি রিং পরানো আছে। খুব দ্রুতই তার বাইপাস সার্জারি হওয়ার কথা। তিনি একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ হলেও তার প্রতি সরকারের নির্দয় ব্যবহার এক ভয়ংকর হিংস্রতারই বহিপ্রকাশ।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুগ্ম সাংগঠনিক সেলিমুজ্জামান সেলিম, খালেকুজ্জামান খালেক প্রমুখ।