ইউক্রেনে রুশ হামলার পর বিশ্ব বিভক্ত হয়ে যাওয়ায় গত সম্মেলনে যৌথ ঘোষণার ব্যাপারে একমত হতে পারেননি জি-২০ নেতারা। এবারও তেমন শঙ্কা ছিল। তবে ভারতের দিল্লিতে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) শুরু হওয়া সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অংশ না নেওয়ায় এবার সম্ভাবনা ছিল। তেমনটিই হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট পদে থাকা ভারত।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার জানান, যৌথ ঘোষণার ব্যাপারে একমত হয়েছেন জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্বনেতারা। তিনি হিন্দিতে বলেন, ‘বন্ধুরা, আমরা এইমাত্র সুসংবাদ পেলাম। আমাদের টিমের কঠোর পরিশ্রম ও সবার সহযোগিতায় যৌথ ঘোষণার ব্যাপারে একমত হয়েছেন বিশ্বনেতারা। এ জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বিশ্বনেতারা যৌথ ঘোষণা দেওয়ার ব্যাপারে একমত কীভাবে হয়েছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি। বিশেষ করে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ইস্যুতে সব দেশ কীভাবে একমত হলো, তা বোধগম্য নয়।
ভারতের নয়াদিল্লিতে চলছে দুদিনব্যাপী জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। এই জোটের নতুন সদস্যপদ লাভ করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। শনিবার শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতেই আফ্রিকান ইউনিয়নকে নতুন স্থায়ী সদস্য হিসেবে ঘোষণা দেন নরেন্দ্র মোদি। পরে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট আজালি আসুমানিকে আলিঙ্গন করে সম্মেলন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে শনিবার জি-২০ সম্মেলনের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ভারতের নয়াদিল্লির মন্ডপম কনভেনশন সেন্টারে। সকাল ৯টার পরপরই বিশ্বনেতারা সম্মেলনের ভেন্যুতে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা মন্ডপমে পৌঁছালে মোদি তাঁদেরকে অভ্যর্থনা জানান।
শীর্ষ সম্মেলনে জি২০ নেতারা অন্যান্যের মধ্যে ডিজিটাল রূপান্তর, জলবায়ু অর্থায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস), খাদ্য নিরাপত্তা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধান খুঁজে বের করবেন।
এবারের সম্মেলনে মূলত ৬টি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হবে। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাপী ঋণ কাঠামো সংস্কার, ঋণ ব্যবস্থাপনায় স্থায়িত্ব এবং ন্যায্যতা নিশ্চিত প্রসঙ্গ। এছাড়াও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, সব ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন ইস্যুতে আলোচনা হবে এবারের সম্মেলনে।
জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ভারতে অবস্থান করছেন ৪০টি দেশের সরকার-রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধি। এবারের সম্মেলনকে আয়োজক দেশ ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে ভারতকে প্রধান বৈশ্বিক শক্তি প্রমাণ করতে চান নরেন্দ্র মোদি। এছাড়া, নিজেকে বিশ্বনেতার আসনেও বসাতে চান মোদি।