Dhaka ১০:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপকে সংযুক্ত করে রেল ও শিপিং প্রকল্প ঘোষণা

মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপকে সংযুক্ত করতে বহুজাতিক রেল ও শিপিং প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। নয়াদিল্লিতে চলমান জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিন গতকাল শনিবার এ প্রকল্প ঘোষণা করেছে আমেরিকা ও ভারত।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের অর্থনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে এ প্রকল্পকে।

দীর্ঘ এই রেল করিডোরের মাধ্যমে ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, ইসরায়েল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সংযুক্ত করা হবে। এতে ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ার পাশাপাশি ডিজিটাল সংযোগ আরও উন্নত হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, আমেরিকার নেতৃত্বে এই প্রকল্পটি কার্যকর হতে যাচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে আমেরিকার একটি সুদূরপ্রসারী বিনিয়োগ। আমেরিকা যে অন্যান্য দেশকে অংশীদার হিসেবে আলিঙ্গন করতে চায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে তার প্রতিফলন ঘটেছে।

বৈশ্বিক অবকাঠামোতে চীন ইতিমধ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে আমেরিকার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। সেই চাপ মোকাবিলা করতেই উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি বিকল্প অংশীদার ও বিনিয়োগকারী হতে চায় আমেরিকা। বাইডেন প্রশাসন সেই লক্ষ্যেই জি-২০ সম্মেলনে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ সংযুক্তকরণ করিডোর প্রকল্প ঘোষণা করেছে। জো বাইডেন বলেছেন, এটি সত্যিই একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আজ আমরা একটি বিরাট সড়ক সংযোগের উদ্যোগ শুরু করলাম। এর মাধ্যমে মূলত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় স্বপ্নের বীজ বপন করা হলো। এর মাধ্যমে শুধু ব্যবসা বাণিজ্যই বাড়বে না, বরং পারস্পরিক আস্থাও বাড়বে।

মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া প্রকল্প
সৌদি আরবের আল এখবারিয়া টিভি দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, নতুন এই প্রকল্পে বিদ্যুৎ, হাইড্রোজেন ও রেলপথের পাইপলাইন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ফলে এটি আন্তর্জাতিক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সুরক্ষায় অবদান রাখবে।

গতকাল শনিবার জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আমেরিকার উপ নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফিনার বলেন, উদ্যোগটি এই অঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে উপকৃত করবে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আমেরিকার এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত করা এবং বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং উপসাগর থেকে ইউরোপে জ্বালানি ও বাণিজ্য প্রবাহে সহায়তা করা।

আল জাজিরা জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জি-২০ জোটের অন্যান্য সদস্য দেশগুলো একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে।

রাধা কুমার নামের একজন ভারতীয় বিশ্লেষক আল জাজিরাকে বলেন, এটি একটি বিস্ময়কর উদ্যোগ। নিঃসন্দেহে উদ্যোগটি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে চ্যালেঞ্জ করবে। চীনের ক্ষমতা এত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে যে অনেক দেশ বিকল্পের প্রয়োজন অনুভব করছে। ভারত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ ছিল না, তাই এই উদ্যোগে ভারত অংশ নিয়েছে।

Tag :

ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপকে সংযুক্ত করে রেল ও শিপিং প্রকল্প ঘোষণা

আপডেট : ০৬:২৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, রোববার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপকে সংযুক্ত করতে বহুজাতিক রেল ও শিপিং প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। নয়াদিল্লিতে চলমান জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিন গতকাল শনিবার এ প্রকল্প ঘোষণা করেছে আমেরিকা ও ভারত।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের অর্থনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে এ প্রকল্পকে।

দীর্ঘ এই রেল করিডোরের মাধ্যমে ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, ইসরায়েল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সংযুক্ত করা হবে। এতে ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ার পাশাপাশি ডিজিটাল সংযোগ আরও উন্নত হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, আমেরিকার নেতৃত্বে এই প্রকল্পটি কার্যকর হতে যাচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে আমেরিকার একটি সুদূরপ্রসারী বিনিয়োগ। আমেরিকা যে অন্যান্য দেশকে অংশীদার হিসেবে আলিঙ্গন করতে চায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে তার প্রতিফলন ঘটেছে।

বৈশ্বিক অবকাঠামোতে চীন ইতিমধ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে আমেরিকার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। সেই চাপ মোকাবিলা করতেই উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি বিকল্প অংশীদার ও বিনিয়োগকারী হতে চায় আমেরিকা। বাইডেন প্রশাসন সেই লক্ষ্যেই জি-২০ সম্মেলনে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ সংযুক্তকরণ করিডোর প্রকল্প ঘোষণা করেছে। জো বাইডেন বলেছেন, এটি সত্যিই একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আজ আমরা একটি বিরাট সড়ক সংযোগের উদ্যোগ শুরু করলাম। এর মাধ্যমে মূলত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় স্বপ্নের বীজ বপন করা হলো। এর মাধ্যমে শুধু ব্যবসা বাণিজ্যই বাড়বে না, বরং পারস্পরিক আস্থাও বাড়বে।

মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া প্রকল্প
সৌদি আরবের আল এখবারিয়া টিভি দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, নতুন এই প্রকল্পে বিদ্যুৎ, হাইড্রোজেন ও রেলপথের পাইপলাইন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ফলে এটি আন্তর্জাতিক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সুরক্ষায় অবদান রাখবে।

গতকাল শনিবার জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আমেরিকার উপ নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফিনার বলেন, উদ্যোগটি এই অঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে উপকৃত করবে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আমেরিকার এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত করা এবং বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং উপসাগর থেকে ইউরোপে জ্বালানি ও বাণিজ্য প্রবাহে সহায়তা করা।

আল জাজিরা জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জি-২০ জোটের অন্যান্য সদস্য দেশগুলো একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে।

রাধা কুমার নামের একজন ভারতীয় বিশ্লেষক আল জাজিরাকে বলেন, এটি একটি বিস্ময়কর উদ্যোগ। নিঃসন্দেহে উদ্যোগটি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে চ্যালেঞ্জ করবে। চীনের ক্ষমতা এত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে যে অনেক দেশ বিকল্পের প্রয়োজন অনুভব করছে। ভারত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ ছিল না, তাই এই উদ্যোগে ভারত অংশ নিয়েছে।