আবারও পুলিশের অনুমতি না নিয়ে রাজধানীতে বিশাল মিছিল করেছে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা। তবে এই মিছিলে পুলিশের বাধা বা আটকের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের মাধ্যমে আল্লামা সাঈদীর উত্তরসূরিরা দেশে ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে কুরআনের রাজ কায়েম করেই ছাড়বো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহর জানাজায় বাধা দান, দেশের বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাজায় হামলা, সারাদেশে কয়েক শত নেতা- কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের, জালেম সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও অগণতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে এবং আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান,ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতাকর্মী ও আলেমা- ওলামার মুক্তি এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বারিধারা মাদ্রাসার সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান এবং জামাল উদ্দীন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, মু. আতাউর রহমান সরকার,নাসির উদ্দীন,ছাত্রনেতা সালাহ উদ্দীন, আসাদুজ্জামান, আ.রহিম প্রমুখ।
এ সময় মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকারের আদর্শিক দেউলিয়াত্ব ও ক্ষমতা হারানোর ভয় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তারা এখন মৃত মানুষের আতঙ্কে নির্ঘুম। সে আতঙ্ক থেকেই ঢাকায় আল্লামা সাঈদীর জানাজা করতে দেয়া হয়নি। তার গায়েবানা জানাজায়ও পৈশাচিক হামলা ও অগণিত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমনকি গত ১৫ দিনে রাজধানীর মিরপুর, দারুসসালাম, মগবাজার ও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকা থেকে শতাধিক নেতা-কর্মীকে গায়েবি মামলায়,বিনা পরওয়ানায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সহ দলের শীর্ষনেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ করে রেখেছে। তাদেরকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে অসৌজন্যমূলক ভাবে। কিন্তু সরকারের মনে রাখা উচিত ‘এক মাঘেই শীত যায় না’। আর এসব করে জামায়াতে অগ্রযাত্রাকেও কোন ভাবেই রোধ করা যাবে না। তিনি সরকারকে ষড়যন্ত্র ও অপরাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ কারাবন্দী সকল নেতাকর্মী ও আটক আলেম-উলামার নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহবান জানান। অন্যথায় জনগণের নেতাদের জনতাই মুক্ত করে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।
মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকার অপশাসন, দুঃশাসন ও গণতন্ত্র হত্যার কারণে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহার করে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা সংবিধান স্বীকৃত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতেও পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে তাণ্ডব সৃষ্টি করছে। মূলত এসব করে তারা চলমান গণআন্দোলন ও কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি পাশ কাটিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে তামাশা ও ভাঁওতাবাজির নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায়। কিন্তু জনগণ তাদের সে স্বপ্নবিলাস ও ষড়যন্ত্র কোন ভাবেই সফল ও সার্থক হতে দেবে না। তিনি সরকারকে টালবাহানা পরিহার করে অবিলম্বে পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় জনরোষে গণবিরোধী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে।