সুপার ফোর পর্বের তিন ম্যাচের ম্যাচের মধ্যে দুটিতেই হেরে যাওয়া বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে আগামী শুক্রবার লড়বে ভারতের বিপক্ষে। বাংলাদেশ এখনও এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে পারে, সে সম্ভাবনা আছে – যুক্তির বিচারে কথাটা যথেষ্ট হাস্যকর শোনায়। তাও ওই যে, আশা বলে তো একটা কথা থাকে! যুগ যুগ ধরে মানবজাতির অবিশ্বাস্য অবাস্তব সব অর্জনের পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে তো এই আশাই কাজ করেছে। ব্যাপারটা এই ক্ষেত্রেও বেশ ভালোভাবেই খাটে। খাদের কিনারায় চলে যাওয়া বাংলাদেশ দলেরও ফাইনালে ওঠার আশা যুক্তিতে না হোক, কাগজে-কলমে এখনও বেঁচে আছে। কীভাবে? দেখে নেওয়া যাক।
সুপার ফোর পর্বের তিন ম্যাচের ম্যাচের মধ্যে দুটিতেই হেরে যাওয়া বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে আগামী শুক্রবার লড়বে ভারতের বিপক্ষে। ফাইনালে উঠে চাওয়ার আশার সলতেটা যে টিমটিম করে জ্বলছে, সেটার পেছনে মূল সম্ভাবনা ওই ম্যাচটাই। বাংলাদেশের ফাইনালে ওঠার সম্ভাব্য সমীকরণে যতগুলো ‘যদি’, ‘কিন্তু’ আছে, সবকিছু এই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতবে – এটা ধরে নিয়েই। ওই ম্যাচে বাংলাদেশকে জিততেই হবে, যে করেই হোক। হেরে গেলে কোনোধরনের কোনো সম্ভাবনাই আর অবশিষ্ট থাকবে না।
ধরে নেওয়া যাক, ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতবে। ফাইনালে ওঠার জন্য যেমন-তেমনভাবে জিতলে চলবে না। একপেশে ম্যাচ বানিয়ে ভারতকে নাস্তানাবুদ করে জিততে হবে বাংলাদেশকে। পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এর মধ্যেই নেট রান রেটের জঘন্য অবস্থা বাংলাদেশের। তাই ভারতের বিপক্ষে শুধু জিতলেই চলবে না, রান রেটের অবস্থা যেন জয়ের পরেও বেশ ভালো থাকে – সেটা নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। ভারতকে হারালে বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে দুই।
শুধু এটুকু হলেই হবে না। পাকিস্তান যেন তাদের হাতে থাকা বাকি দুটি ম্যাচও জিতে যায়, সে প্রত্যাশা করতে হবে। আজ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান, দুই দিন পর খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বাংলাদেশকে ‘বাঁচিয়ে’ রাখার জন্য দুই ম্যাচেই জিততে হবে পাকিস্তানকে। বাকি দুই ম্যাচেও পাকিস্তান জিতে গেলে ছয় পয়েন্ট নিয়ে সুপার ফোরের শীর্ষ দল হয়ে ফাইনালে উঠে যাবে পাকিস্তান। আর দুই ম্যাচেই পাকিস্তান যদি বড় ব্যবধানে জেতে, সেটাও বাড়তি সাহায্য করবে বাংলাদেশকে।
এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বে বাকি আছে আর চারটি ম্যাচ। চারটির মধ্যে পাকিস্তানের দুটি ম্যাচ আর বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ বাদে বাকি থাকে ভারত-শ্রীলঙ্কার ম্যাচটা। এই ম্যাচে ভারত যেন জেতে, সেই কামনা করতে হবে। ভারত জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে দুই। অর্থাৎ বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে দিলে বাংলাদেশের যত পয়েন্ট হবে, তার সমান। তবে এ ম্যাচে ভারতের জয়ের ব্যবধানটা যেন খুব বড় না হয়, সে আশা করতে হবে। কারণ, ভারত বেশি ব্যবধানে জিতে গেলে যদি বাংলাদেশের চেয়ে নেট রান রেটে এগিয়ে যায়, তাহলে তো আবার বাংলাদেশের সমস্যা!
ওদিকে বাংলাদেশকে হারানোর কারণে শ্রীলঙ্কারও পয়েন্ট দুই। বাকি দুই ম্যাচ তাই শ্রীলঙ্কার হারতেই হবে, না হয় বাংলাদেশের চেয়ে শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট বেশি হয়ে যাবে (বাংলাদেশ যদি ভারতকে হারায়, সে ক্ষেত্রে আর কি!), তবে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে শ্রীলঙ্কা যেন বেশ বড় ব্যবধানে হারে, সেটার আশাও করতে হবে। এক নজরে জটিল এই সমীকরণ বোঝার চেষ্টা করা যাক!
এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বের অবশিষ্ট ম্যাচ :
ভারত বনাম পাকিস্তান
যা হতে হবে : বড় ব্যবধানে পাকিস্তানের জয়। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পয়েন্ট হবে চার, ভারতের শূন্য
ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা
যা হতে হবে : অল্প ব্যবধানে ভারতের জয়। সে ক্ষেত্রে ভারতের পয়েন্ট হবে দুই, শ্রীলঙ্কার দুই
পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা
যা হতে হবে : বড় ব্যবধানে পাকিস্তানের জয়। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পয়েন্ট হবে ছয়, শ্রীলঙ্কার দুই
বাংলাদেশ বনাম ভারত
যা হতে হবে : বড় ব্যবধানে বাংলাদেশের জয়। এ ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশ, দুই দলেরই পয়েন্ট হবে দুই
ছয় পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আগে ফাইনালে উঠে যাবে। ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা - তিন দেশেরই পয়েন্ট হবে দুই করে। পরাজয়ের ব্যবধান বাংলাদেশের পক্ষে গেলে রান রেটে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ বাকি দুই দলের চেয়ে। তবে কোনো ম্যাচ যদি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়, বাংলাদেশ কোনোভাবেই ফাইনালে উঠতে পারবে না।
এত কিছু হলেই বাংলাদেশ ফাইনালে উঠতে পারবে, খেলবে পাকিস্তানের বিপক্ষে!