ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে নির্যাতনের ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া রমনা জোনের সাবেক এডিসি হারুন অর রশিদকে রংপুর ডিআইজি রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মাহাবুব রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এরআগে, প্রাথমিক তদন্তে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার সত্যতা মেলায় এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বলে জানিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মাহাবুর রহমান শেখ স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, হারুন-অর রশীদ, পিপিএম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্তমানে সাময়িকভাবে বরখাস্ত এবং পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত)-কে রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, রংপুরে সংযুক্ত করা হলো।
এর আগে গতকাল রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হারুন-অর রশীদকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয় পুলিশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। সেই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, হারুন-অর-রশীদ, পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা-কে জনস্বার্থে সরকারি কর্ম হতে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন। সেহেতু সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (১) ধারার বিধান মোতাবেক আজ থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেছিলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে, রিপোর্ট পেলে জড়িত বাকিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় আপাতত ছাত্রদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে এটি সামনে এসেছে। এডিসি হারুনকেও মারধর করা হয়েছে, এ বিষয়টি এখনও আমাদের তদন্তে আসেনি। তদন্তে বিষয়টি সামনে এলে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।
ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের ঘটনায় এডিসি হারুনকে এপিবিএনে বদলি করা হয়। পরে সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। বিধি অনুযায়ী তিনি খোরপোষ ভাতা পাবেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাবির ফজলুল হক হল শাখার সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদকে শাহবাগ থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে।
ছাত্রলীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এডিসি হারুন শনিবার রাতে এক নারীর সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। সেসময় ওই নারীর স্বামী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান এবং তাদের দুজনকে একসঙ্গে পান।
সেখানে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ ফোর্স নিয়ে এসে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধর করেন পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ।