Dhaka ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লিবিয়ায় বন্যায় প্রাণহানি ৫ হাজার ছাড়িয়েছে, নিখোঁজ ১০,০০০

ঘূর্ণিঝড় ‘ড্যানিয়েলের’প্রভাবে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দুটি বাঁধ ভেঙে গিয়ে প্রবল বন্যায় প্রাণহানি ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। নিখোঁজ অন্তত ১০ হাজার। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় দুটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। এসব এলাকায় বন্যার তীব্রতা এখনো বাড়ছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩০০ জনে পৌঁছেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন ও কাতারভিত্তিক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

লিবিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ প্রতিনিধি দলের প্রধান তামের রমাদান গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সাংবাদিকদের নিখোঁজদের সংখ্যা জানান। তিনি বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা বিশাল। তবে সিএনএন স্বাধীনভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বা নিখোঁজদের সংখ্যা যাচাই করতে সক্ষম হয়নি।

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত ৫ হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ বলে নিশ্চিত করেছে দেরনার অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষ।

পূর্ব লিবিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওসমান আব্দুল জলিল লিবিয়ার আলমসার টিভিকে বলেছেন, গত দুই দিনে ১ হাজার জনেরও বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০০ জনকে ইতিমধ্যে দাফন করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেরনাতে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা। আশপাশের পুরো এলাবা বন্যায় ভেসে গেছে।

লিবিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর তব্রুকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৪৫ জন মিশরীয় রয়েছেন।

জরুরি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার মুখপাত্র ওসামা আলি বলেছেন, দেরনার হাসপাতালগুলোর মর্গ মরদেহ দিয়ে ভরে উঠেছে। অনেক মরদেহে মর্গের বাইরে রাখা হয়েছে।

এদিকে পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল ও দোকানপাট। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল বেনগাজি, দেরনা ও আল-মার্জ।

রাষ্ট্রীয় সব সংস্থাকে পূর্বাঞ্চলের বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছে লিবিয়ার অন্তর্বতী সরকার। এদিকে, তিন দিনের শোক ঘোষণা ঘোষণা করেছে দেশটির পূর্বাঞ্চল-ভিত্তিক সরকার।

লিবিয়ায় জাতিসংঘের অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা। এ সময় জরুরি ত্রাণ সহায়তার দেয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়।

গত সপ্তাহে গ্রিসে আছড়ে পড়ার পর রোববার লিবিয়ায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। এসময় ভারী বৃষ্টিতে দেশটির পূর্বাঞ্চলে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। প্লাবিত হয় রাজধানী ত্রিপোলিসহ উপকূলীয় শহরের রাস্তা-ঘাট ও বাড়িঘর। ভেঙে পড়ে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি।

লিবিয়া বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। একপক্ষ পূর্ব দিকে, অন্যপক্ষ পশ্চিম দিকের অঞ্চলগুলো শাসন করছে। এ অবস্থায় উদ্ধার অভিযান কঠিন হবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

লিবিয়ায় বন্যায় প্রাণহানি ৫ হাজার ছাড়িয়েছে, নিখোঁজ ১০,০০০

আপডেট : ০৭:১৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঘূর্ণিঝড় ‘ড্যানিয়েলের’প্রভাবে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দুটি বাঁধ ভেঙে গিয়ে প্রবল বন্যায় প্রাণহানি ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। নিখোঁজ অন্তত ১০ হাজার। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় দুটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। এসব এলাকায় বন্যার তীব্রতা এখনো বাড়ছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩০০ জনে পৌঁছেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন ও কাতারভিত্তিক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

লিবিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ প্রতিনিধি দলের প্রধান তামের রমাদান গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সাংবাদিকদের নিখোঁজদের সংখ্যা জানান। তিনি বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা বিশাল। তবে সিএনএন স্বাধীনভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বা নিখোঁজদের সংখ্যা যাচাই করতে সক্ষম হয়নি।

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত ৫ হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ বলে নিশ্চিত করেছে দেরনার অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষ।

পূর্ব লিবিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওসমান আব্দুল জলিল লিবিয়ার আলমসার টিভিকে বলেছেন, গত দুই দিনে ১ হাজার জনেরও বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০০ জনকে ইতিমধ্যে দাফন করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেরনাতে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা। আশপাশের পুরো এলাবা বন্যায় ভেসে গেছে।

লিবিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর তব্রুকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৪৫ জন মিশরীয় রয়েছেন।

জরুরি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার মুখপাত্র ওসামা আলি বলেছেন, দেরনার হাসপাতালগুলোর মর্গ মরদেহ দিয়ে ভরে উঠেছে। অনেক মরদেহে মর্গের বাইরে রাখা হয়েছে।

এদিকে পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল ও দোকানপাট। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল বেনগাজি, দেরনা ও আল-মার্জ।

রাষ্ট্রীয় সব সংস্থাকে পূর্বাঞ্চলের বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছে লিবিয়ার অন্তর্বতী সরকার। এদিকে, তিন দিনের শোক ঘোষণা ঘোষণা করেছে দেশটির পূর্বাঞ্চল-ভিত্তিক সরকার।

লিবিয়ায় জাতিসংঘের অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা। এ সময় জরুরি ত্রাণ সহায়তার দেয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়।

গত সপ্তাহে গ্রিসে আছড়ে পড়ার পর রোববার লিবিয়ায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। এসময় ভারী বৃষ্টিতে দেশটির পূর্বাঞ্চলে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। প্লাবিত হয় রাজধানী ত্রিপোলিসহ উপকূলীয় শহরের রাস্তা-ঘাট ও বাড়িঘর। ভেঙে পড়ে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি।

লিবিয়া বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। একপক্ষ পূর্ব দিকে, অন্যপক্ষ পশ্চিম দিকের অঞ্চলগুলো শাসন করছে। এ অবস্থায় উদ্ধার অভিযান কঠিন হবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।