সরকার আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ভিন্নমত দমন করছে: নুরুল হক নুর
- আপডেট সময় : ০২:২২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৫৫০ বার পড়া হয়েছে
সরকার আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ভিন্নমত দমন করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। বৃহস্পতিবার অধিকার এর সম্পাদক আদিলুর রহমান শুভ্র ও পরিচালক নাসির উদ্দীন এলানকে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। এমনকি তাকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় মুষ্টিবদ্ধ হাতটি উঁচু করতেও দেয়নি। তারই প্রতিবাদে আজকে আমরা সবাই মুষ্টিবদ্ধ হাত উচিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজবন্দিদের মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু,অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুলহক নুর এসব কথা বলেন।
নুরুলহক নুর বলেন, “সরকার আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ভিন্নমত দমন করছে। গতকাল অধিকার এর সম্পাদক আদিলুর রহমান শুভ্র ও পরিচালক নাসির উদ্দীন এলানকে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। এমনকি তাকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় মুষ্টিবদ্ধ হাতটি উঁচু করতেও দেয়নি।তারই প্রতিবাদে আজকে আমরা সবাই মুষ্টিবদ্ধ হাত উচিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
নুরুলহক নুর আরও বলেন, আদিলুর রহমানকে সাজা দিয়ে সরকার আন্তর্জাতিক ও দেশীয় প্রতিক্রিয়া দেখছে, সবাই মিলে প্রতিবাদ না করলে কারো রেহাই নেই। সময় কম, জনগণকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে হবে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আপত্তি উপেক্ষা করে গতকাল সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাস করেছে। এই সরকার নিপীড়নমূলক আইন বাতিল করবে না, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে না ওসি প্রদীপ, হারুন মুক্ত প্রশাসন গড়বে না। কারণ, সরকার টিকে আছে এই দুর্বৃত্তদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।
৮-১০ টি শিল্পগ্রুপ আজকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। গ্রামে মোবাইলের নেটওয়ার্ক নাই, ডেঙ্গুতে চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ হাসপাতালের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছে, প্রসূতি মা হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে রাস্তায় সন্তান প্রসব করছে। আর সরকার ডিজিটাল, স্মার্ট বাংলাদেশের নামে জনগণের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি করছে। কাজেই জনগণের মুক্তির জন্য এই সরকার হঠাতে হবে, এছাড়া মুক্তি নেই।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সাজানো নির্বাচন করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কুরবানির পশুর মতো রাজনৈতিক নেতাদের দাম তুলেছে, নাম সর্বস্ব রাজনৈতিক দল দিয়ে কয়েকদিন পর পর জোট ঘোষণা করাচ্ছে, যাতে এদের নিয়ে আরেকটি পাতানো নির্বাচন করতে পারে। এই ফ্যাসিবাদের দালালি করে যারা নির্বাচনে যাবে ইতিহাসের আস্তাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। ফ্যাসিবাদের দালালরা নব্য রাজাকার। এদের চিনে রাখুন। কারা গণতন্ত্রের পক্ষ আর কারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে তার প্রমাণ হবে রাজপথে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, “সাইবার নিরাপত্তা আইন, আওয়ামীলীগের গদি রক্ষার আইন। বিনা পরোয়ানায় এই আইনে গ্রেফতারের বিধান রেখেছে সরকার। এমন আইন জনগণ মানে না। জনগণের সরকার ক্ষমতায় আসলে এই কালো আইন বাতিল করা হবে।
অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান ও পরিচালক নাসির উদ্দিন এলানকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। মানবাধিকার কর্মীদের হয়রানি ও গ্রেফতার করে সরকার চরম স্বৈরতন্ত্র ও কর্তৃত্ববাদের পরিচয় দিচ্ছে। পুলিশ আলিদুর রহমানের হাত মুষ্টি করে প্রতিবাদ করতে দেয়নি। আজকে আমরা সকলে হাত মুষ্টি করে মিছিল করবো। এই মিছিল ফ্যাসিবাদ পতনের মিছিল। আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের পাশে গণঅধিকার পরিষদ থাকবে।
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন কেন? এই কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেই যাবো। কথা ও কলম দুটোই চলবে। আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। আওয়ামীলীগ সরকার বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। জনগণের সমর্থন হারিয়ে আজকে বিদেশে ধর্না ধরছে। কিন্তু আগামীতে সেলফি তুলে, করুণা ভিক্ষা করে ক্ষমতায় আসা যাবেনা। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করবে। তার মানে হাতে সময় আছে ১ মাস। এই এক মাস আমাদের সর্বোচ্চ জনশক্তি নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে। সরকার দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। জিনিসপত্রের দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছে। দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে, অথচ সরকার সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে পারছেনা। সরকার ক্ষমতায় থাকতে সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। জনগণকে বাঁচাতে এই সরকারের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে মিছিল শুরু করে পল্টন,দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে পল্টনে মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানিরট্যাংকির মোড়ে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ঢাকা জেলায় আহ্বায়ক এডভোকেট শওকত, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব,যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।