Dhaka ০৮:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোর রোডে থাকছেন চঞ্চল-জয়া?

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে নির্মাতা এফ এম শাহীনের শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‌‌‘মাইক’। এবার এই নির্মাতা ঘোষণা দিলেন নতুন সিনেমার। যেটি নির্মাণ হবে মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের বিখ্যাত কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ অবলম্বনে। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য এ সিনেমায় অভিনয়ে থাকছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পীরা। সিনেমাটির নাম রাখা হয়েছে ‘যশোর রোড’।

অনেকেই জানেন, তবুও কবিতাটি প্রসঙ্গে একটু বলে নেওয়া যাক, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেন ভারতে। শরণার্থী শিবিরে তাঁদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ স্পর্শ করেছিল গিন্সবার্গকে। কারণ, সেপ্টেম্বরে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন, নিজ চোখে দেখেছেন যুদ্ধের বিভীষিকা। ঘুরে বেড়িয়েছেন বেনাপোল সীমান্তবর্তী বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবির। বাংলাদেশি মানুষের দুঃখ, যন্ত্রণা, দুর্ভোগ তখন স্পর্শ করে কবির হৃদয়। দেশে ফিরে গিয়ে তিনি লেখেন ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ নামের কবিতাটি। এতে ফুটে উঠে যশোর রোডের শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধচিত্র। সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল কবিতাটি। নোবেলজয়ী গায়ক বব ডিলান কবিতাটি নিয়ে একটি গানও তৈরি করেছেন। ভারতীয় সংগীতশিল্পী মৌসুমী ভৌমিকের কণ্ঠেও উঠে এসেছে সেই কবিতা। এবার এই ‘সেপ্টম্বর অন যশোর রোড’ উঠে আসছে রূপালি পর্দায়।

নির্মাতা এফ এম শাহীন বললেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বড় একটি ঘটনা এক কোটি মানুষের ভীনদেশে আশ্রয় গ্রহণ। সেখানে তাঁরা অসহনীয় কষ্টের মধ্যে সময় পার করেছেন। এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তুলে এনেছেন মার্কিন কবি গিন্সবার্গ। সবচেয়ে বেশি শরণার্থী অবস্থান নিয়েছিল কলকাতায়। যশোর রোডটি ছিল সেখানে যাওয়ার পথ। পাকিস্তানিদের ভয়ে অনেকেই যশোর রোড হয়ে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল। সেই যাত্রাটাই তুলে ধরা হবে সিনেমায়। এই যাত্রাপথে জন্ম, মৃত্যু, বাধা, যুদ্ধসহ সে সময়ের সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করা হবে।’

দুই বাংলার তিন হাজারের বেশি শিল্পী-কলাকুশলী নিয়ে তৈরি হবে সিনেমাটি। তবে এখন পর্যন্ত চুক্তিস্বাক্ষর প্রক্রিয়া শুরু হয়নি বলে জানান নির্মাতা শাহীন। শিল্পী বাছাই নিয়ে তিনি বললেন, ‘সিনেমাটি বড় ক্যানভাসে নির্মাণের জন্য তিন বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। গল্পের প্লট অনুযায়ী দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীদের নিয়েই কাজটি করতে চাই। আমাদের ভাবনায় আছেন চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, ওপার বাংলা থেকে মিঠুন চক্রবর্তী, ঋত্বিক চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্যসহ আরও অনেকে। অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা চলছে। তবে, কারও সঙ্গে এখনো চুক্তি হয়নি।’

জানা গেছে, চলতি মাসেই আয়োজন করে ‘যশোর রোড’ সিনেমার ঘোষণা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। সেখানেই জানানো হবে চূড়ান্ত অভিনয়শিল্পীদের নাম। তারপর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই হবে সিনেমাটির দৃশ্যধারণ।

সিনেমাটির গল্প ভাবনা, চিত্রনাট্য ও বাংলাদেশ অংশের প্রযোজক হিসেবেও থাকছেন এফ এম শাহীন। ওপার বাংলার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নামটি এখনই প্রকাশ করতে চাইছেন না তিনি।

যশোর রোডে থাকছেন চঞ্চল-জয়া?

আপডেট : ০৬:৫১:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে নির্মাতা এফ এম শাহীনের শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‌‌‘মাইক’। এবার এই নির্মাতা ঘোষণা দিলেন নতুন সিনেমার। যেটি নির্মাণ হবে মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের বিখ্যাত কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ অবলম্বনে। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য এ সিনেমায় অভিনয়ে থাকছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পীরা। সিনেমাটির নাম রাখা হয়েছে ‘যশোর রোড’।

অনেকেই জানেন, তবুও কবিতাটি প্রসঙ্গে একটু বলে নেওয়া যাক, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেন ভারতে। শরণার্থী শিবিরে তাঁদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ স্পর্শ করেছিল গিন্সবার্গকে। কারণ, সেপ্টেম্বরে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন, নিজ চোখে দেখেছেন যুদ্ধের বিভীষিকা। ঘুরে বেড়িয়েছেন বেনাপোল সীমান্তবর্তী বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবির। বাংলাদেশি মানুষের দুঃখ, যন্ত্রণা, দুর্ভোগ তখন স্পর্শ করে কবির হৃদয়। দেশে ফিরে গিয়ে তিনি লেখেন ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ নামের কবিতাটি। এতে ফুটে উঠে যশোর রোডের শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধচিত্র। সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল কবিতাটি। নোবেলজয়ী গায়ক বব ডিলান কবিতাটি নিয়ে একটি গানও তৈরি করেছেন। ভারতীয় সংগীতশিল্পী মৌসুমী ভৌমিকের কণ্ঠেও উঠে এসেছে সেই কবিতা। এবার এই ‘সেপ্টম্বর অন যশোর রোড’ উঠে আসছে রূপালি পর্দায়।

নির্মাতা এফ এম শাহীন বললেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বড় একটি ঘটনা এক কোটি মানুষের ভীনদেশে আশ্রয় গ্রহণ। সেখানে তাঁরা অসহনীয় কষ্টের মধ্যে সময় পার করেছেন। এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তুলে এনেছেন মার্কিন কবি গিন্সবার্গ। সবচেয়ে বেশি শরণার্থী অবস্থান নিয়েছিল কলকাতায়। যশোর রোডটি ছিল সেখানে যাওয়ার পথ। পাকিস্তানিদের ভয়ে অনেকেই যশোর রোড হয়ে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল। সেই যাত্রাটাই তুলে ধরা হবে সিনেমায়। এই যাত্রাপথে জন্ম, মৃত্যু, বাধা, যুদ্ধসহ সে সময়ের সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করা হবে।’

দুই বাংলার তিন হাজারের বেশি শিল্পী-কলাকুশলী নিয়ে তৈরি হবে সিনেমাটি। তবে এখন পর্যন্ত চুক্তিস্বাক্ষর প্রক্রিয়া শুরু হয়নি বলে জানান নির্মাতা শাহীন। শিল্পী বাছাই নিয়ে তিনি বললেন, ‘সিনেমাটি বড় ক্যানভাসে নির্মাণের জন্য তিন বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। গল্পের প্লট অনুযায়ী দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীদের নিয়েই কাজটি করতে চাই। আমাদের ভাবনায় আছেন চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, ওপার বাংলা থেকে মিঠুন চক্রবর্তী, ঋত্বিক চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্যসহ আরও অনেকে। অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা চলছে। তবে, কারও সঙ্গে এখনো চুক্তি হয়নি।’

জানা গেছে, চলতি মাসেই আয়োজন করে ‘যশোর রোড’ সিনেমার ঘোষণা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। সেখানেই জানানো হবে চূড়ান্ত অভিনয়শিল্পীদের নাম। তারপর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই হবে সিনেমাটির দৃশ্যধারণ।

সিনেমাটির গল্প ভাবনা, চিত্রনাট্য ও বাংলাদেশ অংশের প্রযোজক হিসেবেও থাকছেন এফ এম শাহীন। ওপার বাংলার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নামটি এখনই প্রকাশ করতে চাইছেন না তিনি।