পিছিয়ে পড়ে আবারও জিতল লিভারপুল
- আপডেট সময় : ০৬:২৩:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৫৫৯ বার পড়া হয়েছে
নিজেদের মাঠে সাত মিনিটেই এগিয়ে গিয়েছিল উলভস। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা সেই লিভারপুলই দ্বিতীয়ার্ধে আড়মোড়া ভেঙে প্রতিপক্ষে জালে বল জড়াল তিনবার। ৩-১ গোলের জয়ে আপাতত পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে লিভারপুল। এর আগে বোর্নমাউথ ও নিউক্যাসলের বিপক্ষেও পিছিয়ে পড়ার পর জিতেছিলেন সালাহরা। অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো টটেনহাম বা ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হারাতে হবে শীর্ষস্থান। রাত আটটায় ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে মাঠে নামছে সিটি, টটেনহ্যামের প্রতিপক্ষ শেফিল্ড ইউনাইটেড।
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচ শুরুর সময় নিয়ে বেশ সমালোচনা করেছিলেন লিভারপুলের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। মাত্রই আন্তর্জাতিক ম্যাচ শেষ হয়েছে দুইদিন আগেই। এর মধ্যে ক্লাবের হয়ে দিনের প্রথম ম্যাচেই খেলোয়াড়দের মাঠে নামার ব্যাপারটা নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন এই জার্মান কোচ। আন্তর্জাতিক বিরতি থেকে ফেরার পর এভাবে দিনের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমে লিভারপুল কখনই সুবিধা করতে পারে না। আজকেও একই দিকে এগোচ্ছিল উলভারহ্যাম্পটনের বিপক্ষে ম্যাচটা।
লাতিন আমেরিকান খেলোয়াড়েরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে উলভারহ্যাম্পটন ম্যাচের ২৪ ঘন্টা আগেও লিভারপুলে পা রাখতে পারেননি। এ নিয়ে ম্যাচ শিডিউলের ব্যাপারে বেশ রাগারাগি করেছিলেন ক্লপ। প্রথমার্ধে লিভারপুলের খেলা দেখেও ক্লপের সন্দেহের কথাই মনে পড়েছে বারবার। ঠিক এ কারণেই ব্রাজিলের গোলকিপার আলিসন বেকার ও আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার ছাড়া কোনো লাতিন তারকাকে মূল একাদশে নামাননি ক্লপ। বেঞ্চে ছিলেন লুইস দিয়াজ ও দারউইন নুনিয়েস। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৬৫০ মিটার উঁচুতে থাকা বলিভিয়ার লাপাজে দুইদিন আগেই খেলে আসা ম্যাক অ্যালিস্টারের খেলা দেখেও মনে হচ্ছিল, ঠিক পারছেন না উলভসের মাঝমাঠের সঙ্গে। দমিনিক সোবোসলাই, কার্টিস জোন্স বা দিওগো জোতারা অবশ্য তাঁর মতো অত উঁচুতে না খেললেও পারফরম্যান্স দেখে সেটা মনে হয়নি।
এর মধ্যেই সাত মিনিটে গোল খেয়ে বসে লিভারপুল। রক্ষণের মূল তিন তারকা ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার-আরনল্ড, ভার্জিল ফন ডাইক ও ইবরাহিমা কোনাতে ছিলেন না – রাইটব্যাক হিসেবে খেলা জো গোমেজ উলভসের পর্তুগিজ উইঙ্গার পেদ্রো নেতোর গতির কাছে বারবার খাবি খাচ্ছিলেন। নেতোর ক্রসেই উলভসকে এগিয়ে দেন কোরিয়ার স্ট্রাইকার হোয়াং হি চান। প্রথমার্ধে আরও সুযোগ পেয়েছিল উলভস। নেতোর আরেক ক্রস ঠিকমতো মাথা লাগাতে না পেরে ব্যবধান ২-০ করতে পারেননি ব্রাজিলের স্ট্রাইকার ম্যাথিউস কুনিয়া। সুযোগ অবশ্য লিভারপুলও পেয়েছিল। প্রথমার্ধের ঠিক শেষদিকে বক্সের মধ্যে ঠিকঠাক পা লাগাতে পারেননি ডাচ স্ট্রাইকার কোডি গ্যাকপো, সালাহ আর সোবোসলাইয়ের দুটি শটও বক্সের মধ্যে পড়িমড়ি করে আটকে দেন উলভসের গোলকিপার জোসে সা ও ডিফেন্ডার ক্রেইগ ডসন।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই ম্যাক অ্যালিস্টারকে বসিয়ে লুইস দিয়াজকে মাঠে নামান ক্লপ, লিভারপুলের খেলাও আস্তে আস্তে ধারালো হতে থাকে। ৬৩ মিনিটে বক্সের সামনে জটলার মধ্য থেকে বল বের করে সালাহর উদ্দেশ্যে পাস দেন জোতা, বক্সে ঢুকে যাওয়া গ্যাকপোকে দেখে বল বাড়িয়ে দেন সালাহ। পুরো ম্যাচে তেমন ভালো না খেলা গ্যাকপোর সাফল্য আসে শেষ টাচেই। গোলটা করেই নুনিয়েসের জন্য মাঠ ছাড়েন এই ফরোয়ার্ড।
নুনিয়েস ও এলিয়ট নামার পর আরও ধারালো হয়ে যায় লিভারপুল। আর ওদিকে সালাহ তো ছিলেনই। ৮৫ মিনিটে সালাহর পাসেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন লেফটব্যাক অ্যান্ডি রবার্টসন। লিভারপুলের হয়ে ২০০ তম লিগ ম্যাচ খেলার উপলক্ষে এর চেয়ে ভালোভাবে হয়তো রাঙাতে পারতেন না তিনি!
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল কেড়ে এনে ডানে থাকা সালাহকে পাস দেন নুনিয়েস, সালাহর প্রথম পাস উলভসের ডিফেন্ডারের গায়ে আটকে গেলেও পরের পাস ঠিকই খুঁজে নে হার্ভি এলিয়টকে। দুর্দান্ত শটে ব্যবধান ৩-১ করেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। যদিও জালে জড়ানোর আগে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হুগো বুয়েনোর পায়ে লাগার কারণে গোলটা আত্মঘাতী হিসেবেই ধরা হয়েছে।
৫ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগের শীর্ষে লিভারপুল।