বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু জনপ্রতি ৬ বছর ৮ মাস করে কমে যাচ্ছে। দূষণের তালিকায় বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তান। সবশেষ ‘এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেস্ক’ অনুযায়ী ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বের অন্যতম দূষিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। এর ফলে অঞ্চলটির বিভিন্ন দেশের বাসিন্দাদের জনপ্রতি পাঁচ বছরেরও বেশি আয়ু কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট-এপিক।
দ্রুত শিল্পায়ন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুর মান কমিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে। দূষণের মাত্রা বর্তমান শতাব্দীর শুরুর তুলনায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। যার কারণে স্বাস্থ্যের ঝুঁকিও অনেক বেড়ে গেছে। স¤প্রতি এসব তথ্য জানিয়েছে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইন্সটিটিউট-এপিক।
‘এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স-২০২৩’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের দেশ- বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু জনপ্রতি প্রায় সাত বছর কমে যাচ্ছে। এলাকাভেদে এই অবস্থা আরও করুণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত প্রতি ঘনমিটারে বাতাসের সর্বোচ্চ দূষণ কণার মান ৫ মাইক্রোগ্রাম। বাংলাদেশের বাতাসে দূষণকারী এসব গ্যাসীয় কণার উপস্থিতি তার চাইতে ১৪ থেকে ১৬ গুণ বেশি। বিশেষ করে ঢাকা ও গাজীপুরের বাতাসের খারাপ অবস্থার কথা প্রতিবেদনে আলাদা করে উলেখ করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে চললে গাজীপুরবাসীর গড় আয়ু বাড়তো ৮ বছর ৩ মাস।
এশিয়ার অন্যান্য দেশের বাসিন্দাদের জনপ্রতি কমে যাচ্ছে পাঁচ বছরেরও বেশি আয়ু। প্রতিবেদনে সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লী। এই শহরের মানুষের গড় আয়ু দশ বছরের বেশি কমে গেছে। ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বের দূষণের প্রায় ৫৯ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য ভারতকে দায়ী করছে এপিক।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে সামগ্রিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণ করলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের গড় আয়ু দুই বছর তিন মাস বাড়ানো সম্ভব। যাতে বছরে বিশ্বের এক কোটি ৭৮ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা পাবে।