ওয়াশিংটন এবং তেহরানের মধ্যে বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া শেষ হতে না হতেই ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ এবং দেশটির গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, `আজ আমরা ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ এবং ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিচ্ছি। অন্যায়ভাবে অন্যদেশের নাগরিকদের আটকে রাখার অপরাধে তাদের ওপর লেভিনসন আইনের অধীনে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এবং আমরা এই অঞ্চলে (মধ্যপ্রাচ্য) ইরানের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য চাপ অব্যাহত রাখব। খবর আনাদোলু এজেন্সি।
তেহরানে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ নাগরিক কাতারের দোহা হয়ে নিজ দেশে রওনা হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
ইরানের ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন কট্টরপন্থী রাজনীতিক মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। ক্ষমতায় এসেই তার দেশে পরমাণু কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এতে পশ্চিমাদের বিরাগভাজনে পরিণত হন তিনি।
সবশেষ, ১৫ সেপ্টেম্বর মাহসা আমিনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ইরানের ২৯ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে- ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিস)‘র ১৮ জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং ইরানের আইন প্রয়োগকারী বাহিনী (এলইএফ) এবং ইরানের কারাগার সংস্থার প্রধানসহ ২৯ জন ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পোশাক পরিধানে নিয়ম অনুসরণ না করায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে নৈতিক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন ইরানি কুর্দি নারী মাহসা আমিনি। এরপর পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হয়।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষাখাত, জ্বালানি এবং আর্থিক খাতের পাশাপাশি অভিজাতদের প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ব্লিঙ্কেনের একটি লিখিত বিবৃতি অনুসারে, ‘স্টেট এবং ট্রেজারি বিভাগ ১৫০ এর বেশি রুশ নাগরিক এবং প্রতিষ্ঠানের উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে।` কারণ হিসেবে বলা হয়, ইউক্রেনে রুশ বিশেষ সামরিক অভিযানের সঙ্গে জড়িত থাকায় নিষেধাজ্ঞার খড়গের আওতায় পড়ছেন তারা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাকে। সাধারণত নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি দেয়ার জন্য এমন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় যেসব দেশে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যাতায়াত, বিনিয়োগ বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে। আবার অনেক সময় এক দেশ আরেক দেশের ওপর প্রতিশোধ হিসেবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।