এমন দৃশ্য অবিশ্বাস্য! অভাবনীয়! প্রিয় তারকাকে এক ঝলক দেখার জন্য রাস্তাঘাটে মানুষের ঢল নামার দৃশ্য অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু তারকাটি যখন সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কেউ হন, এবং তাঁকে দেখার জন্য যখন ইরানের রাস্তায় মানুষজন দুই দেশের সকল বৈরিতা ভুলে পাগলের মতো দৌড়াদৌড়ি করা শুরু করে, তা অবশ্যই অবিশ্বাস্য বৈকি!
আর এই অবিশ্বাস্য ঘটনাটা বাস্তব হয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কল্যাণে। সৌদি আরব আর ইরানের ভৌগোলিক-রাজনৈতিক বৈরিতার ইতিহাস আজকের নয়। এমনকি, সাত বছর পর এই প্রথম সৌদির কোনো ক্লাব ইরানে খেলতে যাচ্ছে, এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্বের ম্যাচ খেলতে রোনালদোর ক্লাব আল নাসর গিয়েছে ইরানের রাজধানী তেহরানে, ইরানি ক্লাব পার্সেপোলিসের বিপক্ষে খেলার জন্য। সেখানেই রোনালদোকে ঘিরে শুরু হয়েছে উন্মাদনা। মানুষজন রাজনৈতিক বৈরিতা, দেশীয় ক্লাবের প্রতি আবেগ - সবকিছু ভুলে মেতেছে রোনালদো-উন্মাদনায়।
বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, আল নাসরের অফিশিয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টও পোস্ট করেছে এমন ভিডিও। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তেহরানের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে রোনালদোদের বহনকারী বাস। আর সে বাসের পেছন পেছন ‘রোনালদো’, ‘রোনালদো’ চিৎকার করে ছুটছেন হাজারো ইরানি মানুষ। লক্ষ্য আর কিছু নয়, প্রিয় তারকার এক ঝলক যদি পাওয়া যায়!
রাস্তার আশেপাশে দাঁড়িয়ে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করতে, ছবি তুলতে দেখা গেছে অনেককে। রোনালদোর পোস্টার, জার্সি বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। আল নাসরের সে জার্সি পরে মানুষজন নেমে পড়েছেন রাস্তায়। যেন আল নাসর সৌদির নয়, তাঁদেরই ক্লাব!
শুধু তাই নয়, রোনালদোরা যে হোটেলে উঠেছেন, সেখানেও ঢুকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ, নিরাপত্তারক্ষীরা হিমশিম খাচ্ছেন রীতিমতো। হোটেলের লবিতে মানুষজনের ধাক্কাধাক্কি, হুড়োহুড়ির ঘটনাও ঘটেছে। তেহরানের এসপিনাস প্যালেস হোটেলে উঠেছেন আল নাসরের খেলোয়াড়েরা। হোটেলের পুরো একটা তলা বরাদ্দ করা হয়েছে আল নাসরের খেলোয়াড়দের জন্য, রোনালদো নিজে পেয়েছেন আলাদা বিশেষ এক স্যুইট।
‘অতিথি’ বরণ করতে কমতি করেনি ইরান কর্তৃপক্ষ। ঐতিহ্যবাহী ইরানি কার্পেট উপহার দেওয়া হয়েছে রোনালদোকে। রোনালদোর প্রাণখোলা হাসি দেখে মনে হয়েছে, উপহার পেয়ে বেশ খুশিই হয়েছেন তিনি!
রোনালদো-ম্যানিয়া তো এমনই হওয়া উচিত, তাই না?
https://twitter.com/i/status/1703758418756952272