পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে এবং এই মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ ভবনে অনুষ্ঠিত ১৮তম এশিয়া কোঅপারেশন ডায়লগ (এসিডি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ আহবান জানান।
বৈঠকে ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের, যারা রোহিঙ্গা নামে পরিচিত, বাংলাদেশ মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে দ্রুত তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে সেজন্য সমাধান খুঁজে বের করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গারা যদি তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে না পারে, যদি তাদের নিজ দেশে স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ দেয়া না হয়, তাহলে এই বিপুল জনগোষ্ঠী এশিয়াসহ অন্যান্য অঞ্চলেও নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হতে পারে। রোহিঙ্গা সঙ্কটের ইস্যু আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখতেও তিনি বৈঠকে অনুরোধ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসিডির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং এশীয় দেশগুলোর ঐক্যকে আরো শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি এসিডি’র পৃষ্ঠপোষকতায় মানবসম্পদ উন্নয়নে দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তাব করেন- যাতে এশিয়ার বিশাল মানবসম্পদকে এই অঞ্চলের উন্নয়ন চাহিদা মেটাতে কাজে লাগানো যায়।
ড. মোমেন বিশ্বের ক্রমবর্ধমান ও জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কার্যকর বহুপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং এশীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করার জন্য এসিডির মিশনের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে খাদ্য, পানি, জ্বালানি এবং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আগ্রহের কথা জানান।
বৈঠকে এসিডি-এর সেক্রেটারি জেনারেল, বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ এসিডি সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।