রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান পাল্টা আক্রমণে ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য দূর পাল্লার উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার কথা ভাবছে আমেরিকা। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। দেশটির গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এনবিসি নিউজ ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক হয়। সে সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন কিয়েভকে অল্প সংখ্যক আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম বা এটিএসিএমএস ক্ষেপণাত্র দেওয়া হবে বলে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে প্রতিশ্রুতি দেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, অস্ত্রগুলো আগামী সপ্তাহেই ইউক্রেনে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে আমেরিকা। একই ধরনের খবর প্রকাশ করেছে আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকার কাছ থেকে একক ওয়ারহেডের পরিবর্তে ক্লাস্টার বোম্বলেট সজ্জিত এটিএসিএমএস ক্ষেপণাত্র পেতে যাচ্ছে ইউক্রেন।
তবে আমেরিকা বা ইউক্রেন কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করেনি। শুধু গত বৃহস্পতিবার বাইডেন-জেলেনস্কি বৈঠকের পর ইউক্রেনকে ৫২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সমারিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেয় হোয়াইট হাউস। এর মধ্যে আব্রামস ট্যাংক রয়েছে, যেগুলো আগামী সপ্তাহে কিয়েভে পৌঁছার কথা রয়েছে।
বৈঠক শেষে কানাডা সফরে যান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। কানাডা সফরে যাওয়ার আগে জেলেনস্কি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকটি ফলপ্রসু হয়েছে। আশা করি আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারব। এটি শুধু সময়ের ব্যাপার।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কয়েক মাস ধরেই আমেরিকার কাছে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এটিএসিএমএম চেয়ে আসছিলেন।
এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল বন্দরে অবস্থিত রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে ‘সফল’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এই হামলায় অন্তত একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর সেভাস্তোপোল এলাকায় রাশিয়ার বসানো প্রশাসন বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকার সতর্কতা দিয়েছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করেন। তখন ইউক্রেনকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করতে খানিকটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিল আমেরিকা। তবে যুদ্ধ শুরুর অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই আমেরিকার অবস্থানের নাটকীয় পরিবর্তন হয়। বাইডেন প্রশাসন কিয়েভে দূর পাল্লার রকেট সিস্টেম হিমার্স ও প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল পাঠাতে শুরু করে। তবে একিএসিএমএস পাঠানোর ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন বাইডেন। তিনি আশঙ্কা করছিলেন, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক শক্তিধর রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষ ঘটাতে পারে।