রাজধানীর মিরপুরে জলাবদ্ধ সড়কে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ৪ জনের মৃত্যুর দায় নিতে রাজি নয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানে দক্ষিণ ঢাকার নগরভবনে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এ কথা বলেন।
মিরপুরের একটি মাদ্রাসার অবৈধ লাইনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন ডিএনসিসির মেয়র।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আমি সাথে সাথেই খোঁজ নিয়েছি। মাদ্রাসা থেকে যে অবৈধ লাইন নিয়েছে, তাঁকেই এ দায়িত্ব নিতে হবে। মৃত্যুর দায় তাঁকেও নিতে হবে। এই অবৈধ কাজ যে করেছে, তাঁকেই সে দায়িত্ব নিতে হবে। তাঁকেই শাস্তি দিতে হবে। এর জন্য যা যা করার দরকার, তাঁর বিরুদ্ধে আমরা আইনের আশ্রয় নেব। সে কেন অবৈধ লাইন নিয়েছে?’
এ সময় মেয়র দাবি করেন, নগরীর জলাবদ্ধতার ব্যাপ্তিকাল আগের তুলনায় কমেছে। ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টির পরেও কম সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব হয়েছে বলেও দাবি তাঁর।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত টানা ৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে যায় রাজধানীর জীবন। এই সময়ে ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর এতেই জলাবদ্ধতায় নাকাল হতে হয় নগরবাসীকে। ভারী বর্ষণে পানি ঢুকে পড়ে বাসা ও দোকানপাটে। রাত ১২টার পর বৃষ্টি কমলেও শুক্রবারও অনেক এলাকাই ছিল পানির নিচে।
এর মধ্যেই, রাত সাড়ে ১০টার দিকে মায়ের বাসা থেকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিজ বাসায় ফিরছিলেন গৃহবধূ মুক্তা বেগম। চিড়িয়াখানার শিয়ালবাড়ী ও মিরপুর কমার্স কলেজের মাঝামাঝি এলাকায় রাস্তায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান মুক্তা বেগম, তার স্বামী মিজানুর ও ৭ বছরের মেয়ে লিমা।
তিনজনকে পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে ছটফট করতে দেখে সাহায্যের জন্য ছুটে যান এলাকার তরুণ মোহাম্মাদ অনিক। কিন্তু বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান তিনিও। তবে বেঁচে যায় মুক্তা-মিজানুর দম্পতির ৭ মাসের শিশু হোসাইন। বাবার কোল থেকে পড়ে শিশুটি পানিতে ডুবতে ডুবতে ভেসে যাওয়ার সময় টেনে তোলেন এক তরুণ। তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজন মিলে গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে দ্রুত ভর্তি করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।