সরকারের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছে বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) চিঠিতে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।
গত ২০ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানায় ইইউ। পরের দিন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, বাজেট স্বল্পতার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত জুলাইয়ে ঢাকা সফর করে ইইউর একটি প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। প্রায় দুই সপ্তাহের এ সফরে কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, নির্বাচন কমিশন, নাগরিক সমাজ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করে পর্যবেক্ষক দলটি।
ইইউর চিঠির জবাবে কি বলা হয়েছে, জানতে চাইলে ইসি আহসান হাবিব খান বলেন, ‘সরকারসহ সব পক্ষের কাছে যে সহযোগিতা পাচ্ছি, তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। ইইউ ছোট পরিসরে হলেও পর্যবেক্ষক পাঠাবে বলে আশা করে ইসি। ইইউকে চিঠির জবাব এভাবে দেওয়া হয়েছে।’
এ সময় আমেরিকার ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে আহসান হাবিব বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। আপনারা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কী মনে করছেন, এ ভিসানীতি বাংলাদেশের নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে- এমন প্রশ্নের উত্তরে আহসান হাবিব বলেন, এটি কিন্তু যে দেশ সে দেশের নীতি এবং যে দেশের জন্য এটি করা হচ্ছে সেই দেশের সরকারের আলোচ্য বিষয়।
তিনি বলেন, এ সম্বন্ধে কিন্তু ইলেকশন কমিশন, আমার সাংবিধানিকভাবে যে দায়িত্ব আছে, সে কাজ করে যাব এবং আপনারা দেখবেন আমরা সঠিকভাবে কাজ করছি কি না। আমাদের পক্ষের যে কাজগুলো আছে হান্ড্রেডপার্সেন্ট পূরণ করছি কি না এটা আপনারা দেখবেন।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইতোমধ্যে বাংলাদেশিদের জন্য ওই ভিসানীতি কার্যকর করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বলা হচ্ছে, তিন শতাধিক ব্যক্তি ওই তালিকায় রয়েছে।
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী নভেম্বরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণ করা হবে।
গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক বাংলাদেশির ওপর নতুন ভিসা নীতি প্রয়োগ শুরু করেছে আমেরিকা।
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় যারা পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন সরকার ও বিরোধী দলীয় রাজনীতিক এবং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার দায়ে এঁদের ওপর এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা।
অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ভিসা পাবেন না বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। এতে বলা হয়, এঁদের কেউ আমেরিকা প্রবেশ করতে পারবেন না। এমন আরও কাউকে পাওয়া গেলে তাঁদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের ওপর।
অবশ্য কাদের ওপর এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ হবে, তার কোনো তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।