নওগাঁর মান্দায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আত্রাই নদের পানি। পানি বাড়তে থাকায় তলিয়ে যাচ্ছে নদের দুই তীরের ফসলি জমির আউশ ও আমন ধান। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে আত্রাই নদ ও ফকিন্নি নদীর বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত কয়েকদিন ধরে টানা বর্ষণ হচ্ছে। এছাড়া ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতেও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ঢলের সব পানি আত্রাই নদ দিয়ে প্রবাহিত হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি বাড়বে। আবহাওয়া পরিষ্কার না হলে নদের পানি কমার সম্ভাবনা নেই।
এদিকে সোমবার বেলা ১১টার দিকে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে বন্যার আগাম প্রস্তুতিমূলক সভা হয়েছে। এতে আত্রাই নদ ও ফকিন্নি নদীর ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য ৫ ইউনিয়নের অনুকূলে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, রোববার সকাল থেকে আত্রাই নদে পানি বাড়তে শুরু করে। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে মদনচক, লক্ষ্মীরামপুর, বানডুবি, খুদিয়াডাঙ্গা, পশ্চিম নুরুল্লাবাদ, গোয়ালমান্দা, পারনুরুল্লাবাদ করাতিপাড়া, চকরামপুর, কয়লাবাড়িসহ অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
মান্দা বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ইব্রাহীম হোসেন জানান, ২০১৭ সালের বন্যায় চকরামপুর ও কয়লাবাড়ি বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এর মধ্যে চকরামপুর বেড়িবাঁধের ভাঙনস্থানটি মেরামত করা হলেও কয়লাবাড়ি ভাঙনস্থানটি এখনও খোলা রয়েছে। নদের পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে সোমবার রাতেই ভাঙনস্থান দিয়ে বেড়িবাঁধে পানি ঢুকতে শুরু করবে। এতে বাঁধের অন্তত ২০০ বিঘা জমির আমন ধান তলিয়ে যাবে। পানিবন্দি হয়ে পড়বে ২০০ পরিবার।
লক্ষ্মীরামপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, নদের পানি বাড়তে থাকায় লক্ষ্মীরামপুর পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, শুকনা মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দফায় দফায় স্থানটি পরিদর্শন করে গেলেও বাঁধ টেকসই করতে কোনো পদক্ষেপ নেননি। সঠিক সময়ে বাঁধটি সংস্কার করা হলে বন্যা মৌসুমে এলাকার লোকজনকে আতঙ্কে দিন কাটাতে হতো না।
স্থানীয়দের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফইজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।