ঢাকা ০৬:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষের অবস্থা বিরাজ করছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১০:০২:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪৩০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে তাকে পৃথিবী থেকে সরাতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষের অবস্থা বিরাজ করছে আর অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ১৬৭ জন ঘনিষ্ঠ লোক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আনন্দ-ফুর্তি করছেন।’

আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে এ লিফলেট বিতরণ করা হয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘মানুষকে খুদায় রেখে, মানুষকে অনাহারে রেখে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি করে তিনি ১৬৭ জন ঘনিষ্ঠ লোক নিয়ে, তার একেবারে প্রিয়ভাজন লোক নিয়ে ১৮ দিনের সফরে আমেরিকা গেছেন। তার (প্রধানমন্ত্রীর) কাজ এক ঘণ্টার, জাতিসংঘের অধিবেশনে একটি বক্তৃতা দেওয়া। অথচ ১৮ দিন থাকবেন ১৬৭ জন তার ঘনিষ্ঠ লোকজন নিয়ে। কী মজায় আছেন প্রধানমন্ত্রী, কী আনন্দ, কী ফুর্তি, মানুষ খাবার কিনতে পারে না, অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা কারাবন্দি থাকাকালে যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তিনি বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতা নাসিম সাহেব বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন, মোফাজ্জল হোসেন মায়া, হাজী সেলিম গেছেন বিদেশে, কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যেতে পারেন না। আইনমন্ত্রী আইন দেখান। এই আইন তো নৌকা মার্কার আইন। দেশে তো এখন নৌকা মার্কার আইন চলছে। এটা জনগণের আইন না। এই আইন হচ্ছে বাকশালি আইন। দেশের প্রচলিত আইনে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সময় শেখ হাসিনা বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেছেন। আর বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আইন লাগে। কারণ, উদ্দেশ্য একটাই বেগম খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকে সরাতে চান শেখ হাসিনা।’

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আজকে সারা দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে। মানুষ দাবি করতে ভয় পায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে কেন? প্রধানমন্ত্রী বলছেন—আন্তর্জাতিক চাপ আছে। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গণতন্ত্রকামী দেশগুলো বলে, তখন তিনি বলেন—বাইরের চাপের কাছে মাথানত করব না।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশের মানুষ খেতে পারছে না মধ্যবিত্তরা। যারা কারো কাছে কিছু চাইতে পারে না, তারা নীরবে কান্না করছে, তাদের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। এই সরকার সিন্ডিকেট-বান্ধব। চিনির কেজি ১৩৫ টাকা সরকার নির্ধারণ করেছে, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়। সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যারা এই বাজার নিয়ে ফটকাবাজি করে তারা তো আওয়ামী লীগের লোক। যারা সিন্ডিকেট করছে, তারা আওয়ামী লীগের লোক। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে মন্ত্রী আছেন।’

বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতিশীল জানিয়ে বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমি গতকাল (সোমবার) তাঁকে (খালেদা জিয়া) দেখতে গিয়েছিলাম, যার অদম্য সাহস আমাদেরকে তরুণ বয়সে ছাত্রজীবনে প্রেরণা দিয়েছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে যার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি, তাকে আজকে রাষ্ট্রীয় কষাঘাতে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে নিঃশেষ করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসা দরকার, তার চিকিৎসকরা দাবি করছেন। কিন্তু, এই সরকারের কানের মধ্যে পাথর ঢুকে গেছে। সরকার চিকিৎসকদের দাবি, জনগণের দাবি শুনতে পায় না। কারণ, তাদের একটি অশুভ উদ্দেশ্য আছে কীভাবে বেগম জিয়াকে নিঃশেষ করা যায়।’

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ারসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষের অবস্থা বিরাজ করছে : রিজভী

আপডেট সময় : ১০:০২:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে তাকে পৃথিবী থেকে সরাতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষের অবস্থা বিরাজ করছে আর অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ১৬৭ জন ঘনিষ্ঠ লোক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আনন্দ-ফুর্তি করছেন।’

আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে এ লিফলেট বিতরণ করা হয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘মানুষকে খুদায় রেখে, মানুষকে অনাহারে রেখে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি করে তিনি ১৬৭ জন ঘনিষ্ঠ লোক নিয়ে, তার একেবারে প্রিয়ভাজন লোক নিয়ে ১৮ দিনের সফরে আমেরিকা গেছেন। তার (প্রধানমন্ত্রীর) কাজ এক ঘণ্টার, জাতিসংঘের অধিবেশনে একটি বক্তৃতা দেওয়া। অথচ ১৮ দিন থাকবেন ১৬৭ জন তার ঘনিষ্ঠ লোকজন নিয়ে। কী মজায় আছেন প্রধানমন্ত্রী, কী আনন্দ, কী ফুর্তি, মানুষ খাবার কিনতে পারে না, অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা কারাবন্দি থাকাকালে যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তিনি বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতা নাসিম সাহেব বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন, মোফাজ্জল হোসেন মায়া, হাজী সেলিম গেছেন বিদেশে, কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যেতে পারেন না। আইনমন্ত্রী আইন দেখান। এই আইন তো নৌকা মার্কার আইন। দেশে তো এখন নৌকা মার্কার আইন চলছে। এটা জনগণের আইন না। এই আইন হচ্ছে বাকশালি আইন। দেশের প্রচলিত আইনে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সময় শেখ হাসিনা বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেছেন। আর বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আইন লাগে। কারণ, উদ্দেশ্য একটাই বেগম খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকে সরাতে চান শেখ হাসিনা।’

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আজকে সারা দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে। মানুষ দাবি করতে ভয় পায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে কেন? প্রধানমন্ত্রী বলছেন—আন্তর্জাতিক চাপ আছে। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গণতন্ত্রকামী দেশগুলো বলে, তখন তিনি বলেন—বাইরের চাপের কাছে মাথানত করব না।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশের মানুষ খেতে পারছে না মধ্যবিত্তরা। যারা কারো কাছে কিছু চাইতে পারে না, তারা নীরবে কান্না করছে, তাদের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। এই সরকার সিন্ডিকেট-বান্ধব। চিনির কেজি ১৩৫ টাকা সরকার নির্ধারণ করেছে, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়। সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যারা এই বাজার নিয়ে ফটকাবাজি করে তারা তো আওয়ামী লীগের লোক। যারা সিন্ডিকেট করছে, তারা আওয়ামী লীগের লোক। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে মন্ত্রী আছেন।’

বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতিশীল জানিয়ে বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমি গতকাল (সোমবার) তাঁকে (খালেদা জিয়া) দেখতে গিয়েছিলাম, যার অদম্য সাহস আমাদেরকে তরুণ বয়সে ছাত্রজীবনে প্রেরণা দিয়েছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে যার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি, তাকে আজকে রাষ্ট্রীয় কষাঘাতে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে নিঃশেষ করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসা দরকার, তার চিকিৎসকরা দাবি করছেন। কিন্তু, এই সরকারের কানের মধ্যে পাথর ঢুকে গেছে। সরকার চিকিৎসকদের দাবি, জনগণের দাবি শুনতে পায় না। কারণ, তাদের একটি অশুভ উদ্দেশ্য আছে কীভাবে বেগম জিয়াকে নিঃশেষ করা যায়।’

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ারসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।