পাথরবিহীন রেললাইন যাত্রা শুরু হচ্ছে বাংলাদেশে
- আপডেট সময় : ০৬:১৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে
রেললাইনে পাথর নেই। এমন দৃশ্য বাংলাদেশে কল্পনাও করা যায় না। কিন্তু কল্পনা নয়, দেশেই তৈরি হয়েছে ১৭ কিলোমিটার রেললাইন। যেখানে কোনো পাথর ব্যবহার করা হয়নি। পাথরবিহীন রেললাইন যাত্রা শুরু হচ্ছে বাংলাদেশে। মাটি থেকে ২০ দশমিক ৫ মিটার ওপরে, অনেকটা মেট্রো রেলের মতো ১২০ কিলোমিটার গতিতে ঢাকা থেকে যশোরের পথে ছুটবে রেল। পদ্মা সেতু হয়ে ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন পেরিয়ে গেছে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, আড়িয়াল খাঁ, মধুমতিসহ ১০টি নদী।
জলাবদ্ধতাসহ পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব ঠেকাতে প্রকল্পটিতে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেয়ার কথা জানালো নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।
পদ্মা সেতুর রেল লিংক প্রকল্পের আওতায় চলছে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথের নির্মাণ কাজ। যেখানে পদ্মা সেতু ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের পাগলা বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর দিয়ে সিরাজদীখানের কুচিয়ামারা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার পথ তৈরি হয়েছে মাটি থেকে উঁচুতে ভায়াডাক্টের ওপরে। নদীসহ পরিবেশ রক্ষার জন্যই এই বিশেষ ব্যবস্থা। ওপর থেকে নিচে পাথর পড়ে যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে; সে জন্যই পাথরবিহীন এ রেললাইন।
সিআরইসি ডিভিশন ১ এর সহকারী পরিচালক (নিরাপত্তা) তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, আমরা নদীটাকে ভরাট না করে টেস্টাল ব্রিজের মাধ্যমে কাজটি করেছি। এর ফলে আমাদের ওয়াটার পোর্ট ঠিক আছে এবং আমরা কাজটাও করতে পারি। নেভিগেশনের কাজ শেষে আমরা টেস্টাল ব্রিজটি সরিয়ে নিয়ে গেছি।
পদ্মা ছাড়াও বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, কুমার, আড়িয়াল খাঁ, আফ্রি, মধুমতিসহ ১০টি নদীর ওপর দিয়ে গেছে এই রেলপথ। এসব পথে থাকছে ২০টি স্টেশন। যার ১৪টিই নতুন। পুরো পথের বেশিভাগই জলাভূমি ও নিচু এলাকা হওয়ায় পানি চলাচল বাধামুক্ত রাখাটাই ছিলো বড় চ্যালেঞ্জ, বলছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
সিআরইসি ডিভিশন ৩ এর সহকারী পরিচালক (নিরাপত্তা) নাহিদুজ্জামান নাহিদ বলেন, জলাবদ্ধতার দিক চিন্তা করে প্রচুর পরিমাণ কালভার্ট দেয়া হয়েছে। যাতে কৃষক ও আশপাশের জনবসতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেল লাইনের নির্মাণে কাটা পড়েছে এক লাখ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। তাই নতুন করে তিন গুণেরও বেশি গাছ লাগানোসহ পরিবেশ রক্ষায় সবোর্চ্চ উদ্যোগ নেয়ার কথা জানালেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন।
সিআরইসি’র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ আশিক রহমান বলেন, একেকটা জেলায় একেক ধরনের ভূসংস্থান। মৎস্য ও বন্যপ্রাণীর যাতে কোনো ধরণের ক্ষতি না হয়, এর ওপর নির্ভর করে আমরা পদ্মা ব্রিজ রেলিং প্রজেক্ট চলমান রেখেছি।
পদ্মা সেতু হয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে ট্রেন। নতুন এই পথে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত যাওয়া যাবে মাত্র আড়াই ঘন্টায়।