পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানকে অ্যাটক কারাগার থেকে আদালিয়া কারাগারে স্থানান্তর করা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। গতকাল সোমবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তাঁকে আদালিয়া কারাগারে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এ ধরনের কোনো চিঠি পাননি।
পাকিস্তানের সম্প্রচারমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, ইমরান খান এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পাঞ্জাবের অ্যাটক কারাগারে বন্দি রয়েছেন। সেখান থেকে তাঁকে রাওয়ালপিন্ডির আদালিয়া কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। আদালতের এ আদেশের কয়েক ঘণ্টা পর ইমরানের আইনজীবীরাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইমরান খানের আইনজীবী দলের মুখপাত্র নাঈম পাঞ্জোতা বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আদিয়ালার কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’ তবে আদিয়ালা জেল প্রশাসন এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে, ইমরান খানকে এখনও সেখানে স্থানান্তর করা হয়নি।
পরে এক এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে নাঈম পাঞ্জোতা লেখেন, আমাকে বলা হয়েছিল যে ইমরান খানকে আদালিয়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। আবার তিনি অ্যাটক কারাগারে রেয়েছেন কিনা সেটিও বোঝার উপায় নেই।
ইমরান খানের আইনজীবী দলের আরেক সদস্য শের আফজাল মারওয়াত বলেন, ইমরানকে বিকেল ৪টায় আদালিয়ায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট পিটিআই প্রধানকে দেওয়া কারাগারের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি করার সময় ইমরান খানকে আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তর করার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমের ফারুক বলেন, ইমরান খান ইসলামাবাদে নিবন্ধিত সাইফার মামলায় বিচারাধীন বন্দী। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে তিনি আরও ভালো মানের কারাগারের সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখেন।
পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। কারাগারে নেওয়ার পর থেকেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই দাবি করে অ্যাটক কারাগারের পরিবর্তে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়ে আসছিলেন ইমরান খানের আইনজীবীরা।
রাওয়ালপিন্ডি শহরের আদিয়ালা রোডের কারগারটি পাকিস্তানের সবচেয়ে সমৃদ্ধ কারাগার। সেখানে ইমরান খানের মতো ভিআইপি কারাবন্দিদের প্রাপ্য সব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানা মামালা ছাড়াও ইমরানের বিরুদ্ধে আরও শতাধিক মামলা ঝুলছে। এ অবস্থায় তাঁর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ কমে আসছে।
এদিকে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) জানিয়েছে, তারা ২০২৪ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন হতে যাচ্ছে।