ঢাকা ১০:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কানাডায় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে শিখদের ব্যাপক বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:২৫:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪৩০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হারদ্বীপ সিং নিজ্জার হত্যার বিচার চেয়ে ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনগুলোর সামনে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ করেছে কানাডীয় শিখরা। ভারত সরকারকে দায়ী করে কানাডার পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর অভিযোগের এক সপ্তাহ পর, কানাডার বিভিন্ন শহরে ভারতীয় কূটনীতিক মিশনগুলোর সামনে বিক্ষোভ করলো শিখরা। কানাডায় বর্তমানে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি শিখ বাস করেন।

এসময় তারা এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবির পাশাপাশি খালিস্তানের স্বাধীনতার দাবিও জানায়। তারা ভারতের পতাকায় আগুন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ করে।

শিখ জনগোষ্ঠী ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মাত্র দুই শতাংশ হলেও পাঞ্জাবে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। অন্যদিকে পাঞ্জাবের বাইরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিখ বাস করেন কানাডায়। উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে বসবাসরত শিখের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ ৭০ হাজার।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কানাডায় শিখ জনগোষ্ঠী অনেক বিক্ষোভ করেছে যা কার্যত ভারতকে বিরক্ত করে চলেছে। এছাড়া ভারত ২০২০ সালে নিজ্জারকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে ঘোষণা করে এবং নিজ্জারকে হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর আনা অভিযোগটিকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি।

তবে ট্রুডোর এই অভিযোগ কানাডার শিখ সম্প্রদায়ের আন্দোলন ও তাদের দাবির ওপর সবার নজর এনে দিয়েছে। সোমবার টরন্টোর বিক্ষোভে অংশ নেন কুলজিত সিং। শিখস ফর জাস্টিস গ্রুপের এই সদস্য বলছেন, ‘ভারত সরকার নোংরা কৌশল ব্যবহার করেছে এবং কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।’

অবশ্য ভারতের বিরুদ্ধে ট্রুডোর এই অভিযোগ সামনে আসার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ট্রুডোর এই অভিযোগ ভারত ও কানাডার মধ্যে কুৎসিত কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে, যদিও এই দুটি দেশের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং ভালো বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে।

উত্তেজনার একপর্যায়ে উভয় দেশ একে অপরের একজন করে কূটনীতিককে বহিষ্কার করে এবং গত বৃহস্পতিবার থেকে কানাডিয়ান নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা স্থগিত করে ভারত। এছাড়া কানাডা ভারতে তার কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে এনেছে এবং বলেছে, কানাডিয়ান কিছু কূটনীতিক সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি পেয়েছেন।

সিবিসি নিউজ গত সপ্তাহে অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার হত্যার বিষয়ে মাসব্যাপী তদন্তে কানাডিয়ান সরকার মনুষ্য ও সাংকেতিক উভয় ধরনের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছে।

এছাড়া কানাডা সরকারের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, গত জুন মাসে কানাডিয়ান এই নাগরিকের হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার বিষয়ে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কানাডার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে।

এছাড়া হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চলতি মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের সময় ওই উদ্বেগ জানান তিনি।

এছাড়া একই বিষয়ে মোদির কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন মিত্র আরও কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।

এদিকে ভারতের নয়াদিল্লীতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। খালিস্তানপন্থীরা কানাডায় ভারতের কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তার জন্যে হুমকি বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লী।

নিউজটি শেয়ার করুন

কানাডায় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে শিখদের ব্যাপক বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৭:২৫:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

হারদ্বীপ সিং নিজ্জার হত্যার বিচার চেয়ে ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনগুলোর সামনে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ করেছে কানাডীয় শিখরা। ভারত সরকারকে দায়ী করে কানাডার পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর অভিযোগের এক সপ্তাহ পর, কানাডার বিভিন্ন শহরে ভারতীয় কূটনীতিক মিশনগুলোর সামনে বিক্ষোভ করলো শিখরা। কানাডায় বর্তমানে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি শিখ বাস করেন।

এসময় তারা এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবির পাশাপাশি খালিস্তানের স্বাধীনতার দাবিও জানায়। তারা ভারতের পতাকায় আগুন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ করে।

শিখ জনগোষ্ঠী ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মাত্র দুই শতাংশ হলেও পাঞ্জাবে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। অন্যদিকে পাঞ্জাবের বাইরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিখ বাস করেন কানাডায়। উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে বসবাসরত শিখের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ ৭০ হাজার।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কানাডায় শিখ জনগোষ্ঠী অনেক বিক্ষোভ করেছে যা কার্যত ভারতকে বিরক্ত করে চলেছে। এছাড়া ভারত ২০২০ সালে নিজ্জারকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে ঘোষণা করে এবং নিজ্জারকে হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর আনা অভিযোগটিকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি।

তবে ট্রুডোর এই অভিযোগ কানাডার শিখ সম্প্রদায়ের আন্দোলন ও তাদের দাবির ওপর সবার নজর এনে দিয়েছে। সোমবার টরন্টোর বিক্ষোভে অংশ নেন কুলজিত সিং। শিখস ফর জাস্টিস গ্রুপের এই সদস্য বলছেন, ‘ভারত সরকার নোংরা কৌশল ব্যবহার করেছে এবং কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।’

অবশ্য ভারতের বিরুদ্ধে ট্রুডোর এই অভিযোগ সামনে আসার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ট্রুডোর এই অভিযোগ ভারত ও কানাডার মধ্যে কুৎসিত কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে, যদিও এই দুটি দেশের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং ভালো বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে।

উত্তেজনার একপর্যায়ে উভয় দেশ একে অপরের একজন করে কূটনীতিককে বহিষ্কার করে এবং গত বৃহস্পতিবার থেকে কানাডিয়ান নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা স্থগিত করে ভারত। এছাড়া কানাডা ভারতে তার কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে এনেছে এবং বলেছে, কানাডিয়ান কিছু কূটনীতিক সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি পেয়েছেন।

সিবিসি নিউজ গত সপ্তাহে অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার হত্যার বিষয়ে মাসব্যাপী তদন্তে কানাডিয়ান সরকার মনুষ্য ও সাংকেতিক উভয় ধরনের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছে।

এছাড়া কানাডা সরকারের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, গত জুন মাসে কানাডিয়ান এই নাগরিকের হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার বিষয়ে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কানাডার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে।

এছাড়া হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চলতি মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের সময় ওই উদ্বেগ জানান তিনি।

এছাড়া একই বিষয়ে মোদির কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন মিত্র আরও কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।

এদিকে ভারতের নয়াদিল্লীতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। খালিস্তানপন্থীরা কানাডায় ভারতের কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তার জন্যে হুমকি বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লী।