০৯:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পশ্চিমাঞ্চল রেলের ৫১টি স্টেশন বন্ধ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০৯:৪৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ৯৯ দেখেছেন

জনবল সংকটে বন্ধ আছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ৫১টি স্টেশন। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের। ব্যাহত হচ্ছে কৃষি পণ্য বিপণন ও ব্যবসা বাণিজ্য। এ ছাড়া দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় বেদখল হচ্ছে এসব স্টেশনের শত কোটি টাকার সম্পদ। শূন্যপদে নিয়োগ দিয়ে দ্রুত স্টেশনগুলো চালুর আশ্বাস দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে এ মূহুর্তে চালু স্টেশনের সংখ্যা ১২৪টি। পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুয়াখড়া স্টেশনটি চালু হয় ব্রিটিশ আমলে। চলনবিলসহ আশেপাশের উপজেলার কৃষিপণ্য ও মাছ এই রেল স্টেশন দিয়ে পাঠানো হতো সারা দেশে। তবে লোকবল সংকটে প্রায় দুই দশক ধরে বন্ধ স্টেশনটি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত পড়ে থাকায় বেদখল হয়ে গেছে রেল কর্মচারীদের বাসভবন, প্লাটফর্মসহ রেলের বিপুল সম্পত্তি। ফাটল দেখা দিয়েছে স্টেশন ভবনেও।

গুয়াখড়া এলাকার এক বাসিন্দা জানান, এই স্টেশন আগে ভালো ছিল। এখন দেখারও কোনো লোক নেই, মাস্টারও নেই। ইটগুলো খসে পড়ছে। বিভিন্ন মালামাল হারিয়ে যাচ্ছে। দেখার মতো লোকই নেই। স্টেশনটা মেরামত করলে তাদের অনেক সুবিধা হয় বলে জানালেন তিনি।

আরেক স্থানীয়ও জানালেন একই মতামত, স্টেশনের ঘরগুলোর অবস্থা একেবারে নাজেহাল। ইটগুলো খুলে খুলে পড়ছে। অনেকেই অনেক জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।

গুয়াখড়ার আরেক বাসিন্দা বলছেন, আগে একটা লোকাল ট্রেন থামত। এখন আর থামে না। ঘরগুলো পড়ে আছে। এখানে কোনো স্টেশন মাস্টারও নেই, কোনো লোকজনও নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাটমোহরের গফুরাবাদ স্টেশনটিও বন্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরে। কৃষিপণ্য বিপণনসহ নানা কারণে এলাকার মানুষকে যেতে হচ্ছে দূরের স্টেশনে। এতে খরচ ও ভোগান্তি দুই-ই বেড়েছে।

গফুরাবাদ এলাকার বাসিন্দা জানান, এ এলাকায় অনেক বিল বাওড় রয়েছে। এখান বিভিন্ন প্রজাতির মাছ হয়। কিন্তু স্টেশন চালু না হওয়ায় লাভ করতে পারছি না।

আরেক স্থানীয় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা শুনে আসছি যে, স্টেশনটা আবার চালু হবে। স্টেশনটা হলে আমরা খুবই লাভবান হব।’

রেলওয়েতে জনবল সংকটে খুলনা-ঈশ্বরদী রুটের ১২টি, ঢালারচর-রাজশাহী রুটের ৬টি, ঈশ্বরদী-শান্তাহার রুটের ৫টি, যশোর-বেনাপোল রুটের ২টি স্টেশনসহ মোট ৫১টি স্টেশন বন্ধ হয়ে আছে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ জানিয়েছেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের স্টেশন মাস্টারসহ ৬০২টি পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ২৯০ জন। তবে বেশ কয়েকজন নতুন স্টেশন মাস্টার প্রশিক্ষণে আছে।

শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘স্টেশন বন্ধ থাকার মুল কারণ হলো জনবল সংকট। সম্প্রতি আমরা কিছু স্টেশন মাস্টার পেয়েছি তারা নব নিযুক্ত। এই স্টেশন মাস্টারের কাজটা খুবই টেকনিক্যাল কাজ এবং তাদের ভুলের কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। সে জন্য তাদেরকে ট্রেনিং দেওয়া ছাড়া তো জব দেওয়া যায় না। এর মধ্যে কয়েকজন ট্রেনিং করে আসছে তারা অলরেডি কাজ করছে। আরেকটি টিম ট্রেনিং একাডেমিতে আছে। তারাও ট্রেনিং শেষ করে মাঠে কাজ ধরবেন। মুলত তারা যখন মাঠে চলে আসবে তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে‌।’

শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

পশ্চিমাঞ্চল রেলের ৫১টি স্টেশন বন্ধ

আপডেট : ০৯:৪৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জনবল সংকটে বন্ধ আছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ৫১টি স্টেশন। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের। ব্যাহত হচ্ছে কৃষি পণ্য বিপণন ও ব্যবসা বাণিজ্য। এ ছাড়া দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় বেদখল হচ্ছে এসব স্টেশনের শত কোটি টাকার সম্পদ। শূন্যপদে নিয়োগ দিয়ে দ্রুত স্টেশনগুলো চালুর আশ্বাস দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে এ মূহুর্তে চালু স্টেশনের সংখ্যা ১২৪টি। পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুয়াখড়া স্টেশনটি চালু হয় ব্রিটিশ আমলে। চলনবিলসহ আশেপাশের উপজেলার কৃষিপণ্য ও মাছ এই রেল স্টেশন দিয়ে পাঠানো হতো সারা দেশে। তবে লোকবল সংকটে প্রায় দুই দশক ধরে বন্ধ স্টেশনটি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত পড়ে থাকায় বেদখল হয়ে গেছে রেল কর্মচারীদের বাসভবন, প্লাটফর্মসহ রেলের বিপুল সম্পত্তি। ফাটল দেখা দিয়েছে স্টেশন ভবনেও।

গুয়াখড়া এলাকার এক বাসিন্দা জানান, এই স্টেশন আগে ভালো ছিল। এখন দেখারও কোনো লোক নেই, মাস্টারও নেই। ইটগুলো খসে পড়ছে। বিভিন্ন মালামাল হারিয়ে যাচ্ছে। দেখার মতো লোকই নেই। স্টেশনটা মেরামত করলে তাদের অনেক সুবিধা হয় বলে জানালেন তিনি।

আরেক স্থানীয়ও জানালেন একই মতামত, স্টেশনের ঘরগুলোর অবস্থা একেবারে নাজেহাল। ইটগুলো খুলে খুলে পড়ছে। অনেকেই অনেক জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।

গুয়াখড়ার আরেক বাসিন্দা বলছেন, আগে একটা লোকাল ট্রেন থামত। এখন আর থামে না। ঘরগুলো পড়ে আছে। এখানে কোনো স্টেশন মাস্টারও নেই, কোনো লোকজনও নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাটমোহরের গফুরাবাদ স্টেশনটিও বন্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরে। কৃষিপণ্য বিপণনসহ নানা কারণে এলাকার মানুষকে যেতে হচ্ছে দূরের স্টেশনে। এতে খরচ ও ভোগান্তি দুই-ই বেড়েছে।

গফুরাবাদ এলাকার বাসিন্দা জানান, এ এলাকায় অনেক বিল বাওড় রয়েছে। এখান বিভিন্ন প্রজাতির মাছ হয়। কিন্তু স্টেশন চালু না হওয়ায় লাভ করতে পারছি না।

আরেক স্থানীয় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা শুনে আসছি যে, স্টেশনটা আবার চালু হবে। স্টেশনটা হলে আমরা খুবই লাভবান হব।’

রেলওয়েতে জনবল সংকটে খুলনা-ঈশ্বরদী রুটের ১২টি, ঢালারচর-রাজশাহী রুটের ৬টি, ঈশ্বরদী-শান্তাহার রুটের ৫টি, যশোর-বেনাপোল রুটের ২টি স্টেশনসহ মোট ৫১টি স্টেশন বন্ধ হয়ে আছে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ জানিয়েছেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের স্টেশন মাস্টারসহ ৬০২টি পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ২৯০ জন। তবে বেশ কয়েকজন নতুন স্টেশন মাস্টার প্রশিক্ষণে আছে।

শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘স্টেশন বন্ধ থাকার মুল কারণ হলো জনবল সংকট। সম্প্রতি আমরা কিছু স্টেশন মাস্টার পেয়েছি তারা নব নিযুক্ত। এই স্টেশন মাস্টারের কাজটা খুবই টেকনিক্যাল কাজ এবং তাদের ভুলের কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। সে জন্য তাদেরকে ট্রেনিং দেওয়া ছাড়া তো জব দেওয়া যায় না। এর মধ্যে কয়েকজন ট্রেনিং করে আসছে তারা অলরেডি কাজ করছে। আরেকটি টিম ট্রেনিং একাডেমিতে আছে। তারাও ট্রেনিং শেষ করে মাঠে কাজ ধরবেন। মুলত তারা যখন মাঠে চলে আসবে তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে‌।’