পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূলে বৈশ্বিক অঙ্গীকার আরো জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এ আহ্বান জানান তিনি। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে যতদিন পরমাণু অস্ত্র থাকবে, ততদিন আমরা কেউ নিরাপদ নই। কারণ পারমাণবিক অস্ত্র সারা বিশ্বে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মৃত্যু ও ধ্বংস ঘটায়। কেবলমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের সম্পূর্ণ নির্মূলই মানবজাতির এই হুমকির বিরুদ্ধে সুনিশ্চিত সমাধান।
মোমেন বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নির্মূল এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি বাংলাদেশের সুদৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি এই চুক্তির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রথম বৈঠক, এতে গৃহীত রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র এবং ৫০-দফা কর্মপরিকল্পনাকে স্বাগত জানান। পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র ও নিউক্লিয়ার আমব্রেলা রাষ্ট্রসহ সব রাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকির কথাও তুলে ধরেন, তা উদ্দেশ্যমূলক হোক বা দুর্ঘটনাজনিত হোক। তিনি বলেন, এই বিধ্বংসী অস্ত্রগুলো পরিচালনা করার বহুমুখী চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। তিনি পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলোকে সন্ত্রাসবাদী বা অন্য অননুমোদিত অপশক্তির হাতে পারমাণবিক অস্ত্র পড়ার ঝুঁকি এড়াতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
পারমাণবিক প্রযুক্তির গবেষণায় অধিকতর বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং মানবজাতির স্বার্থে এর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের সম্ভাবনা অন্বেষণের আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি পারমাণবিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বন্ধ করে সেই অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা, টেকসই উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রকল্পে ব্যবহারের আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী শান্তির সংস্কৃতি লালন, পরমাণুমুক্ত বিশ্বের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা এবং নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানান।
সভায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের উপ-রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।