নিজের কোনো জমি নেই- দেশে এমন মানুষের সংখ্যা ৯১ লাখ। আর মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ (এক-তৃতীয়াংশ) মানুষের নেই মানসম্মত আবাস। এমন পরিস্থিতিতে আজ সোমবার বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব বসতি দিবস। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে কেউ ভূমিহীন থাকবে না- এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭ পরিবারকে জমিসহ নতুন ঘর দিয়েছে সরকার।
রাজধানীর কড়াইল বস্তির বাসিন্দা ঝর্না বেগম। পরিবারের পাঁচ সদস্যের বসবাস এই ঘরে। পশুপাখি এবং মানুষের একসঙ্গে বসবাস। রান্নাও একই ঘরে।
ঝর্না বেগম বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। চলফেরা করতে সমস্যা হয়। একটু খোলামেলা পরিবেশ পেলে ভালো হতো।’
এমন গল্প রাজধানীর প্রতিটি বস্তিতে। কারও আবার নেই এক টুকরো জমিও। মানসম্মত আবাস তাদের কাছে কেবলই স্বপ্ন। রাজধানীতে অনেকের আবার সেই সামর্থ্যটুকুও নেই, থাকতে হচ্ছে ফুটপাতে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা জরিপের তথ্য বলছে, নিজের কোনো জমি নেই, দেশে এমন মানুষের সংখ্যা ৯১ লাখ। আরেক পরিসংখ্যান বলছে, মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ মানুষের নেই মানসম্মত বাসযোগ্য ও নিরাপদ আবাস। নিরাপদ আবাস নিশ্চিতে সরকারকে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।
নগরপরিকল্পনাবিদ আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, ‘সমাজের মানুষের খাদ্য, বাসস্থানসহ মৌলিক অধিকারগুলো বাস্তবায়ন হবে, এটাই নিয়ম। সরকার গৃহহীনদের গৃহ করে দিচ্ছে, এটা নিশ্চয়ই খুব প্রশংসনীয়। এছাড়াও শত শত মানুষ এখনো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। নিশ্চয় এদেরও একটি করে ঘর হবে। মানুষকে গৃহহীন রেখে উন্নয়নের যথাযথ সুফল পাওয়া যায় না।’
তবে গৃহহীন মানুষদের ঘর দিচ্ছে সরকার। ২ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৭ গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭ পরিবারকে দেওয়া হয়েছে জমিসহ নতুন ঘর। এখন পর্যন্ত ৯ জেলার ২১১ উপজেলা গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত হয়েছে।
মানসম্মত বাসযোগ্য ও নিরাপদ আবাস নিশ্চিতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে বিশ্ব বসতি দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ। সেই থেকে অক্টোবরের প্রথম সোমবার উদযাপন হয়ে আসছে দিবসটি।