নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু আজ
- আপডেট সময় : ০৫:২৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩
- / ৪২০ বার পড়া হয়েছে
প্রতি বছর অক্টোবরের প্রথম সোমবার থেকে শুরু হয় নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা। প্রথা অনুযায়ী আজ সোমবার চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এ বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা।
নিয়মানুযায়ী এ বছরেও ছয়টি বিভাগে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হবে—চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, অর্থনীতি, সাহিত্য ও শান্তি। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকে শান্তি পুরস্কার। আগামী ৬ অক্টোবর নরওয়ের ওসলো থেকে ঘোষণা করা হবে শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম। অন্য বিভাগের পুরস্কারগুলো ঘোষণা করা হয় সুইডেন থেকে। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এ বছর নোবেল পুরস্কার কার ঘরে উঠবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্লেষকেরা মাথা চুলকাতে শুরু করেছেন। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে অভ্যুত্থান বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে গেছে।
সুইডেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ের অধ্যাপক পিটার ওয়ালেনস্টিন বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো হয় এ বছর যদি নোবেল কমিটি শান্তিতে কোনো পুরস্কার না দেয়। বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ, তা বুঝানোর জন্য এটি হবে সবচেয়ে ভালো উপায়।’
এর আগে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় ১৯৭২ সালে কোনো উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়নি। নরওয়ের নোবেল কমিটির সেক্রেটারি ওলাভ এনজোলস্টাড এএফপিকে বলেন, ‘ফলাফল কী হবে তা বলা কঠিন। তবে ১৯৭২ সালের মতো ঘটনা ঘটা অসম্ভব নয়।’
ইরানের নারী, ইউক্রেন অথবা জলবায়ু
এবারের শান্তি পুরস্কারের জন্য ইরানের নারীদের আন্দোলন, ইউক্রেন যুদ্ধ ও জলবায়ু ইস্যু ঘুরেফিরে আসছে আলোচনায়। অনেক বিশ্লেষকই বলছেন, পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মাশা আমিনি নামের এক তরুণীর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর পর সারা ইরানের নারীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ-আন্দোলন গুরুত্ব পেতে পারে এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কারের আলোচনায়। সেক্ষেত্রে অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ফ্রিডম ইন ইরানের অধিকারকর্মী মাসিহ আলিনেজাদ এবং নার্গেস মোহাম্মদীনের হাতে উঠতে পারে এবারের শান্তি পুরস্কার।
এ ছাড়া ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের নথিভুক্তকারী সংস্থাগুলো এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নিয়েও গুঞ্জন চলছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ঘরে এবারে শান্তি নোবেল গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আবার জলবায়ুকর্মীদের হাতে যদি এবারের শান্তি পুরস্কার যায়, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ এ বছরের রেকর্ড তাপমাত্রা ও চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া সমগ্র মানবজাতিকে হুমকির মুখে ফেল দিয়েছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান ড্যান স্মিথ এএফপিকে বলেন, ‘আমি মনে করি জলবায়ু পরিবর্তন এ বছরের শান্তি পুরস্কারের জন্য সত্যিই একটি ভাল ক্ষেত্র।’
এ ক্ষেত্রে তিনি সুইডেনের জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থানবার্গ এবং ব্রাজিলের বন উজাড়ীকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী আদিবাসী নেতা রাওনি মেটুকটায়ার নাম উল্লেখ করেন।
সময়ের প্রতিফলন জরুরি
১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার প্রবর্তনের পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ১৭ জন নারী এ পুরস্কার পেয়েছেন। এদের মধ্যে সর্বশেষ গত বছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন ফরাসী নারীবাদী লেখক অ্যানি আর্নো। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, নোবেল কমিটিকে আরও সময়পোযোগী, আধুনিক ও সমতাকেন্দ্রীক হতে হবে। যদিও ২০১৮ সালে ‘মি টু’ কেলঙ্কারির পর সু্ইডিস অ্যাকাডেমি নোবেল পুরস্কারে বড় ধরনের সংস্কার এনেছে এবং পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
স্টকহোম ইউনিভার্সিটির সাহিত্যের অধ্যাপক ক্যারিন ফ্রানজেন এএফপিকে বলেন, ‘ইউরোপকেন্দ্রীক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নোবেল কমিটির বেরিয়ে আসা উচিত। এ পুরস্কারকে আরও সমতাভিত্তিক হতে হবে এবং এতে সময়ের প্রতিফলন থাকাটা জরুরি।’