উত্তরের ৫ জেলায় বন্যার শঙ্কা
- আপডেট সময় : ০৪:৪২:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩
- / ৪৪১ বার পড়া হয়েছে
ভারতে প্রবল বৃষ্টি ও সিকিমে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এতে বাংলাদেশের তিস্তার তীরবর্তী উত্তরের ৫ জেলায় বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এসব জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
পাউবো বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তার বাংলাদেশ অংশের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এতে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা লালমনিরহাট, নীলফামারি, রংপুর, কুড়িগ্রাম এবং গাইবান্ধার তিস্তার তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা হতে পারে।
পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, বুধবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর বিকেল ৩টা পর্যন্ত রংপুরে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। কাউনিয়া পয়েন্টের পানি আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোর নাগাদ বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করছে পাউবো।
এ ছাড়া ভারতের গজলডোবা পয়েন্টে তিস্তার পানি গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে প্রায় ২৮৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দোমুহুনী পয়েন্টে বুধবার সকাল থেকে প্রায় ১১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বর্তমানে ধীরগতিতে হ্রাস পাচ্ছে।
ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ‘ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।’
তিস্তা নদীর নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা প্রিন্স বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বাড়ছে। বুধবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে অবস্থান করছে। ডালিয়া পয়েন্টের পানি আজ রাত পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর পর্যন্ত উঠতে পারে।’
আসফাউদ্দৌলা বলেন, ‘আজ রাতে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকাসমূহ প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এরপর মধ্যরাত পর্যন্ত কিছুটা হ্রাস পেয়ে পরবর্তীতে পুনরায় পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।’ ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে সতর্কবার্তা দিয়ে বন্যা মোকাবেলায় সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। মাইকিং করে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের।
এদিকে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।