আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে দুটি শর্তপূরণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আইএমএফের দেওয়া বেশির ভাগ সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। সে বিষয়ে তাদেরকে অবহিতও করা হয়েছে। যেসব শর্ত পূরণ করতে পারেনি তার কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। শর্তপুরণ না হওয়া খাত দুটি হচ্ছে- নেট রিজার্ভ সংরক্ষণ ও রাজস্ব আদায়।
বুধবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফের রিভিউ মিটিং শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
কেন শর্ত পুরণ করা যায়নি সে বিষয়ে আইএমএফ কিছু জানতে চেয়েছি কী এমন প্রশ্নে মেজবাউল হক বলেন, উনারা তো বিষয়টি জানেন। তারা প্রতিনিয়তই আমাদের কার্যক্রম মনিটরিং করছে। তাই এনিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেননি। আজকে রিভিউ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে তারা ব্যাংকের বিভিন্ন সেক্টরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন; তখন হয়তো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।
এর আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশ ব্যাংকে বেশকিছু শর্ত দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম শর্ত হলো- বাজার ভিত্তিক সুদ হার নির্ধারণ, বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভের প্রতিবেদন প্রকাশ, ডলারের বাজার ভিত্তিক বিনিময় হার নির্ধারণ এবং ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতা পূরণ করা।
এদিকে আইএমএফ গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার যে নির্দেশনা দিয়েছে তার চেয়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা কম আদায় করেছে সংস্থাটি। এ জন্য চলতি অর্থবছরে জিডিপির অনুপাত ০.৫ শতাংশ বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে হবে এনপিআরকে। আইএমএফের শর্ত অনুসারে নতুন অর্থবছরে এনবিআরের যে স্বাভাবিক লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তার চেয়ে আরও প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে হবে।
জুনের মধ্যে যেসব শর্ত বাংলাদেশ পূরণ করতে পেরেছে সুদের হার নির্ধারণে করিডোর ব্যবস্থা চালু করা ও আইএমএফের বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ প্রতিবেদন প্রকাশ করা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রস আন্তর্জাতিক রিজার্ভের (জিআইআর) এর তথ্য প্রকাশ করে। নিট আন্তর্জাতিক রিভার্জ (এনআইআর)-এর প্রকাশ করে না। বর্তমানে জিআইআর হিসেবে রিজার্ভ রয়েছে ২১.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে রিয়েছে ২৭.০৫ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া সেপ্টেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শর্ত অনুযায়ী সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ থাকার কথা ছিল ২৫.৩২ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এনআইআর হিসাবে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি জিআইআর হিসেবেও ব্যর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবেন। এসময় তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে একাধিক বৈঠক করবে সংস্থাটি।