০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিপদসীমার উপরে তিস্তার পানি

সিকিমে আকস্মিক বন্যা, বাংলাদেশে ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কা

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের চুংথাম এলাকায় প্রবল বৃষ্টিতে প্রাকৃতিক জলাধার ফেটে পানি গিয়ে ঢুকছে তিস্তায়। ফলে বিপদসীমার উপরে তিস্তার পানি। আকস্মিক বন্যায় উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদে ২৩ সেনা সদস্য নিখোঁজ হয়েছেন।

আজ সোমবার ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।

আকস্মিক বন্যার পানিতে কালিম্পংয়ে ভেসে গেছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। চুংথামে ভেঙে গেছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ড্যাম। নর্থ সিকিমের সিংতামের কাছে তিস্তায় প্রবল জলোচ্ছ্বাস।

এদিকে তিস্তার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত সেনা ছাউনি। সূত্রের খবর, সেনা ছাউনি থেকে নিখোঁজ ২৩ সেনা জওয়ান। তলিয়ে গেছে একাধিক সেনার গাড়ি।

জানা যায়, প্রবল বৃষ্টির জেরে উত্তর সিকিমের লোনক লেকে ফাটল ধরে। সেই লেকের বিপুল পরিমাণ জলে চুংথাম বাঁধ ভেঙে তা নামছে তিস্তা নদীতে। তাতেই তিস্তার জলস্তর প্রায় ১৫-২০ ফুট বেড়ে যায়। রাতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে পাহাড়ি গ্রাম গুলোতে। স্থানীয় বাসিন্দা জানাচ্ছেন যে, আচমকাই জলস্তর দোতলা বাড়ির সমান বেড়ে যায়।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রে জানা যায়, আজ সিংতামে যে সেনার ছাউনি ছিল সেই ছাউনিতে বন্যার পানি প্রবেশ করে। তিস্তা নদীর পানিতে তলিয়ে যায় সেনাবাহিনীর ৪১টি গাড়ি। খোঁজ মিলছে না ২৩ জওয়ানের। তারা ভেসে গিয়েছে নাকি পাহাড়ের খাদে পড়ে গিয়েছে তা জানতে পারা যায়নি। শুরু হয়েছে তল্লাশি। এর মধ্যে আবার ধস নামতে শুরু হয়েছে। এত বড় ঘটনা সিকিমের বুকে এই প্রথম জানাচ্ছেন সেনাবাহিনী।

এদিকে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ড্যাম ভেঙে যাওয়ায় জলপাইগুড়ির তিস্তায় দু-কূল ছাপিয়ে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সমতলে। বিপদ এড়াতে নদীর পারের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে।

এদিকে সিকিম সরকার প্রদেশটিতে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে এবং জনগণকে তিস্তা নদী থেকে দূরে থাকতে বলেছে। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি প্রশাসন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নদীর নিম্ন জলাধার এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং একটি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি তবে সরকারি সম্পত্তির অনেক ক্ষতি হয়েছে। সিংটামে কিছু লোক নিখোঁজ হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। ত্রাণ তৎপরতা চলছে।

বুধবার (৪ অক্টোবর) সকাল সাত’টা নাগাদ গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজ থেকে সকাল ৯টায় ২ লক্ষ ৫১ হাজার ৫৩৫ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। যা এখনও পর্যন্ত এ বছরের পরিমাণের সর্বোচ্চ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমস্ত রকমের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।

এদিকে তিস্তা নদী সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশে করেছে। ফলে গাজলডোবা, দোমোহনি, মেখলিগঞ্জ, ঘিস, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিপদসীমার উপরে তিস্তার পানি

সিকিমে আকস্মিক বন্যা, বাংলাদেশে ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কা

আপডেট : ০৬:০৩:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের চুংথাম এলাকায় প্রবল বৃষ্টিতে প্রাকৃতিক জলাধার ফেটে পানি গিয়ে ঢুকছে তিস্তায়। ফলে বিপদসীমার উপরে তিস্তার পানি। আকস্মিক বন্যায় উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদে ২৩ সেনা সদস্য নিখোঁজ হয়েছেন।

আজ সোমবার ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।

আকস্মিক বন্যার পানিতে কালিম্পংয়ে ভেসে গেছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। চুংথামে ভেঙে গেছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ড্যাম। নর্থ সিকিমের সিংতামের কাছে তিস্তায় প্রবল জলোচ্ছ্বাস।

এদিকে তিস্তার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত সেনা ছাউনি। সূত্রের খবর, সেনা ছাউনি থেকে নিখোঁজ ২৩ সেনা জওয়ান। তলিয়ে গেছে একাধিক সেনার গাড়ি।

জানা যায়, প্রবল বৃষ্টির জেরে উত্তর সিকিমের লোনক লেকে ফাটল ধরে। সেই লেকের বিপুল পরিমাণ জলে চুংথাম বাঁধ ভেঙে তা নামছে তিস্তা নদীতে। তাতেই তিস্তার জলস্তর প্রায় ১৫-২০ ফুট বেড়ে যায়। রাতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে পাহাড়ি গ্রাম গুলোতে। স্থানীয় বাসিন্দা জানাচ্ছেন যে, আচমকাই জলস্তর দোতলা বাড়ির সমান বেড়ে যায়।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রে জানা যায়, আজ সিংতামে যে সেনার ছাউনি ছিল সেই ছাউনিতে বন্যার পানি প্রবেশ করে। তিস্তা নদীর পানিতে তলিয়ে যায় সেনাবাহিনীর ৪১টি গাড়ি। খোঁজ মিলছে না ২৩ জওয়ানের। তারা ভেসে গিয়েছে নাকি পাহাড়ের খাদে পড়ে গিয়েছে তা জানতে পারা যায়নি। শুরু হয়েছে তল্লাশি। এর মধ্যে আবার ধস নামতে শুরু হয়েছে। এত বড় ঘটনা সিকিমের বুকে এই প্রথম জানাচ্ছেন সেনাবাহিনী।

এদিকে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ড্যাম ভেঙে যাওয়ায় জলপাইগুড়ির তিস্তায় দু-কূল ছাপিয়ে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সমতলে। বিপদ এড়াতে নদীর পারের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে।

এদিকে সিকিম সরকার প্রদেশটিতে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে এবং জনগণকে তিস্তা নদী থেকে দূরে থাকতে বলেছে। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি প্রশাসন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নদীর নিম্ন জলাধার এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং একটি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি তবে সরকারি সম্পত্তির অনেক ক্ষতি হয়েছে। সিংটামে কিছু লোক নিখোঁজ হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। ত্রাণ তৎপরতা চলছে।

বুধবার (৪ অক্টোবর) সকাল সাত’টা নাগাদ গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজ থেকে সকাল ৯টায় ২ লক্ষ ৫১ হাজার ৫৩৫ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। যা এখনও পর্যন্ত এ বছরের পরিমাণের সর্বোচ্চ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমস্ত রকমের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।

এদিকে তিস্তা নদী সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশে করেছে। ফলে গাজলডোবা, দোমোহনি, মেখলিগঞ্জ, ঘিস, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।