ঢাকা ১১:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

উদ্বোধনের অপেক্ষায় চোখ ধাঁধানো তৃতীয় টার্মিনাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪২৫ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উদ্বোধন সামনে রেখে নান্দনিকতায় মোড়ানো হয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। কাল শনিবার (৭ অক্টোবর)প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টার্মিনালটি সীমিত আকারে উদ্বোধন করবেন। আর এটি যাত্রীদের ব্যবহারের উপযোগী হবে ২০২৪ সালে। টার্মিনালের মূল অবকাঠামো এখন প্রস্তুত, চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। দেশের প্রধান বিমানবন্দরের পুরনো দুটি টার্মিনালের আয়তন ১ লাখ বর্গমিটার। আর ৩য় টার্মিনাল তৈরি হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জুড়ে।

দৃষ্টিনন্দন টার্মিনালের ভবনটির নকশা করেছেন সিঙ্গাপুরের স্থপতি রোহানি বাহরিন। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, ভারত, ফিলিপাইন, চায়না, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপের ভেলানাসহ বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের নকশাও করেছেন তিনি। তবে নান্দনিকতায় ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল ছাড়িয়ে গেছে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি ও তুরস্কের ইস্তানবুল বিমানবন্দরকেও।

বর্তমানে শাহজালালে যে দুটি টার্মিনাল আছে, সেগুলো বছরে প্রায় ৭০ লাখ যাত্রীকে সেবা দিতে পারে। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এ বছরে প্রায় ২ কোটি যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

নতুন এই টার্মিনালে একসঙ্গে পার্ক করা যাবে ৩৭টি উড়োজাহাজ, পুরনো দুটিতে করা যায় ২৯টি। থাকছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহি উড়োজাহাজ এয়ারবাস এ-৩৮০ এর উপযোগী দুইটিসহ মোট ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ।

নতুন এ টার্মিনালে রয়েছে অত্যাধুনিক ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট। স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ সুবিধাসহ বহির্গমন ও আগমনী ইমিগ্রেশন কাউন্টার ১২৮টি। নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ৪০টি কেবিন এক্সরে মেশিন, ২৭টি ব্যাগেজ ও ১১টি বডি স্ক্যানার। বহির্গমনের জন্য সেলফ চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট কাউন্টার ১১৫টি। ১৪টি স্পটে থাকবে ডিউটি ফ্রি শপ, সুপরিসর লাউঞ্জ ও বাণিজ্যিক স্পেস।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, অটোমেটিক চেক হবে চারটি লেয়ারে। এখানে যাত্রীর ব্যাগ দেখার জন্য খোলা লাগবে না। যদি কোনো সন্দেহ হয় তাহলে চার লেভেলে ব্যাগগুলো স্ক্যান হবে।

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে উড়োজাহাজ ও রানওয়েতে চলমান যানবহানের অবস্থান নির্ভুলভাবে নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণের সুবিধা রাখা হয়েছে।

বহুতল পার্কিংয়ে একসাথে রাখা যাবে ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য কার্গো টার্মিনালের আয়তন ৩৩ হাজার বর্গমিটার। যেখানে পুরো প্রক্রিয়া চলবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় একনেক। শুরুতে এর নির্মাণব্যয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা টাকা ধরা হলেও পরে তা আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকায়। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে।

প্রকল্পটির নির্মাণব্যয়ের বড় জোগান দিচ্ছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। আর বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অর্থায়ণ করছে বাংলাদেশ সরকার।

টার্মিনালের মূল ভবনের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। জাপানি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিমুজি আর কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান স্যামসাং যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

উদ্বোধনের অপেক্ষায় চোখ ধাঁধানো তৃতীয় টার্মিনাল

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩

উদ্বোধন সামনে রেখে নান্দনিকতায় মোড়ানো হয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। কাল শনিবার (৭ অক্টোবর)প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টার্মিনালটি সীমিত আকারে উদ্বোধন করবেন। আর এটি যাত্রীদের ব্যবহারের উপযোগী হবে ২০২৪ সালে। টার্মিনালের মূল অবকাঠামো এখন প্রস্তুত, চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। দেশের প্রধান বিমানবন্দরের পুরনো দুটি টার্মিনালের আয়তন ১ লাখ বর্গমিটার। আর ৩য় টার্মিনাল তৈরি হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জুড়ে।

দৃষ্টিনন্দন টার্মিনালের ভবনটির নকশা করেছেন সিঙ্গাপুরের স্থপতি রোহানি বাহরিন। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, ভারত, ফিলিপাইন, চায়না, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপের ভেলানাসহ বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের নকশাও করেছেন তিনি। তবে নান্দনিকতায় ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল ছাড়িয়ে গেছে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি ও তুরস্কের ইস্তানবুল বিমানবন্দরকেও।

বর্তমানে শাহজালালে যে দুটি টার্মিনাল আছে, সেগুলো বছরে প্রায় ৭০ লাখ যাত্রীকে সেবা দিতে পারে। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এ বছরে প্রায় ২ কোটি যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

নতুন এই টার্মিনালে একসঙ্গে পার্ক করা যাবে ৩৭টি উড়োজাহাজ, পুরনো দুটিতে করা যায় ২৯টি। থাকছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহি উড়োজাহাজ এয়ারবাস এ-৩৮০ এর উপযোগী দুইটিসহ মোট ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ।

নতুন এ টার্মিনালে রয়েছে অত্যাধুনিক ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট। স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ সুবিধাসহ বহির্গমন ও আগমনী ইমিগ্রেশন কাউন্টার ১২৮টি। নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ৪০টি কেবিন এক্সরে মেশিন, ২৭টি ব্যাগেজ ও ১১টি বডি স্ক্যানার। বহির্গমনের জন্য সেলফ চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট কাউন্টার ১১৫টি। ১৪টি স্পটে থাকবে ডিউটি ফ্রি শপ, সুপরিসর লাউঞ্জ ও বাণিজ্যিক স্পেস।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, অটোমেটিক চেক হবে চারটি লেয়ারে। এখানে যাত্রীর ব্যাগ দেখার জন্য খোলা লাগবে না। যদি কোনো সন্দেহ হয় তাহলে চার লেভেলে ব্যাগগুলো স্ক্যান হবে।

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে উড়োজাহাজ ও রানওয়েতে চলমান যানবহানের অবস্থান নির্ভুলভাবে নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণের সুবিধা রাখা হয়েছে।

বহুতল পার্কিংয়ে একসাথে রাখা যাবে ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য কার্গো টার্মিনালের আয়তন ৩৩ হাজার বর্গমিটার। যেখানে পুরো প্রক্রিয়া চলবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় একনেক। শুরুতে এর নির্মাণব্যয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা টাকা ধরা হলেও পরে তা আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকায়। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে।

প্রকল্পটির নির্মাণব্যয়ের বড় জোগান দিচ্ছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। আর বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অর্থায়ণ করছে বাংলাদেশ সরকার।

টার্মিনালের মূল ভবনের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। জাপানি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিমুজি আর কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান স্যামসাং যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।