ঢাকা ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৫১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:০৪:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪২৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইউক্রেনের খারকিভের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় হরোজা গ্রামে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আট বছর বয়সী এক শিশুসহ অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল তিনটা ১৫ মিনিটের দিকে ওই এলাকায় একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে এ হামলা চালানো হয়। খবর বিবিসির।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই এলাকায় লক্ষ্যবস্তু করার মতো কোনো সামরিক স্থাপনা নেই। সেখানে শুধু বেসামরিক লোকেরা বসবাস করেন।

খারকিভের আঞ্চলিক প্রধান ওলেহ সিনেহুবভ এ হামলাকে অঞ্চলটির ‘সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি নিশ্চিত করেন, নিহতরা সবাই ওই গ্রামের বাসিন্দা। এ হামলায় গ্রামটির মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মারা গেছে।

টেলিভিশনে দেওয়া বক্তৃতায় ওলেহ সিনেহুবভ বলেন, ‘গ্রামটির এক-পঞ্চমাংশ মানুষ মারা গেছেন একটি মাত্র সন্ত্রাসী হামলায়।’

এ হামলায় গ্রামের প্রতিটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেনকো বলেন, ‘প্রতিটি ঘর থেকে, প্রতিটি পরিবার থেকে, সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন।’

স্থানীয় প্রসিকিউটর দিমিত্রো চুবেনকোর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স ইউক্রেন জানায়, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানটি ছিল একজন ইউক্রেনীয় সৈন্যের। হামলায় নিহতদের মধ্যে তার স্ত্রী, সৈনিক ছেলে ও পুত্রবধূও রয়েছেন।

এই হামলা প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘এটিকে পাশবিক কাজও বলা যাবে না, কারণ এতে পশুদের অপমান হবে।’

ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রামটিকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘জেনে-শুনে এ হামলা চালানো হয়েছে। কে তাদের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র চালাতে পারে? কে? শুধুই চরম খারাপ লোক।’

গ্রামটি কুপিয়ানস্ক জেলার অংশ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভ্লাদিমির পুতিনের পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর থেকেই এ জেলায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্মুখ লড়াই হয়েছে। যুদ্ধের শুরুতে এটি রাশিয়ার বাহিনীর জন্য একটি প্রধান সরবরাহ কেন্দ্র ছিল, তবে কয়েক মাস যুদ্ধের পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে সেটি পুনরুদ্ধার করে কিয়েভ।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, হামলায় একটি ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। বিবিসি অবশ্য এ দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

রাশিয়া গ্রামটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল এমন সময়, যখন জেলেনস্কি স্পেনের গ্রানাডায় ইউরোপীয় নেতাদের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল সতর্ক করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্ব ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে অর্থায়নে দেশটির ক্ষমতাকে হুমকিতে ফেলছে। মার্কিন কংগ্রেসে সাম্প্রতিক বাজেট চুক্তিতে ইউক্রেনের জন্য তহবিল অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

বোরেল বলেন, যুদ্ধে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ঘাটতি হলে তা ইউরোপীয় কোনো দেশ পূরণ করতে সক্ষম হবে না।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) জেলেনস্কি ইউরোপীয় নেতাদের কাছে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, (ইউরোপের) অন্যান্য দেশগুলো রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য ইউক্রেনকে ধন্যবাদ জানাতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৫১

আপডেট সময় : ০৬:০৪:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩

ইউক্রেনের খারকিভের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় হরোজা গ্রামে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আট বছর বয়সী এক শিশুসহ অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল তিনটা ১৫ মিনিটের দিকে ওই এলাকায় একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে এ হামলা চালানো হয়। খবর বিবিসির।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই এলাকায় লক্ষ্যবস্তু করার মতো কোনো সামরিক স্থাপনা নেই। সেখানে শুধু বেসামরিক লোকেরা বসবাস করেন।

খারকিভের আঞ্চলিক প্রধান ওলেহ সিনেহুবভ এ হামলাকে অঞ্চলটির ‘সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি নিশ্চিত করেন, নিহতরা সবাই ওই গ্রামের বাসিন্দা। এ হামলায় গ্রামটির মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মারা গেছে।

টেলিভিশনে দেওয়া বক্তৃতায় ওলেহ সিনেহুবভ বলেন, ‘গ্রামটির এক-পঞ্চমাংশ মানুষ মারা গেছেন একটি মাত্র সন্ত্রাসী হামলায়।’

এ হামলায় গ্রামের প্রতিটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেনকো বলেন, ‘প্রতিটি ঘর থেকে, প্রতিটি পরিবার থেকে, সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন।’

স্থানীয় প্রসিকিউটর দিমিত্রো চুবেনকোর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স ইউক্রেন জানায়, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানটি ছিল একজন ইউক্রেনীয় সৈন্যের। হামলায় নিহতদের মধ্যে তার স্ত্রী, সৈনিক ছেলে ও পুত্রবধূও রয়েছেন।

এই হামলা প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘এটিকে পাশবিক কাজও বলা যাবে না, কারণ এতে পশুদের অপমান হবে।’

ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রামটিকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘জেনে-শুনে এ হামলা চালানো হয়েছে। কে তাদের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র চালাতে পারে? কে? শুধুই চরম খারাপ লোক।’

গ্রামটি কুপিয়ানস্ক জেলার অংশ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভ্লাদিমির পুতিনের পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর থেকেই এ জেলায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্মুখ লড়াই হয়েছে। যুদ্ধের শুরুতে এটি রাশিয়ার বাহিনীর জন্য একটি প্রধান সরবরাহ কেন্দ্র ছিল, তবে কয়েক মাস যুদ্ধের পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে সেটি পুনরুদ্ধার করে কিয়েভ।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, হামলায় একটি ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। বিবিসি অবশ্য এ দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

রাশিয়া গ্রামটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল এমন সময়, যখন জেলেনস্কি স্পেনের গ্রানাডায় ইউরোপীয় নেতাদের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল সতর্ক করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্ব ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে অর্থায়নে দেশটির ক্ষমতাকে হুমকিতে ফেলছে। মার্কিন কংগ্রেসে সাম্প্রতিক বাজেট চুক্তিতে ইউক্রেনের জন্য তহবিল অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

বোরেল বলেন, যুদ্ধে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ঘাটতি হলে তা ইউরোপীয় কোনো দেশ পূরণ করতে সক্ষম হবে না।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) জেলেনস্কি ইউরোপীয় নেতাদের কাছে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, (ইউরোপের) অন্যান্য দেশগুলো রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য ইউক্রেনকে ধন্যবাদ জানাতে পারে।