০৪:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারও সঙ্গে কথা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সফরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তিনি জানান, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তবে সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কেউ কিছু জিজ্ঞাসাও করেনি।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফরের নানা দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় এক সাংবাদিক মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভানের সঙ্গে বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। আমার মনে পড়ে না, এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। আমাকে কেউ এ ধরনের কথা জিজ্ঞেসও করেনি। ২০০৭-৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, এরপর এটা কেউ চায়? এই পদ্ধতি তো বিএনপি নষ্ট করে দিয়েছে।

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আন্দোলন করে যাচ্ছে, আমরা তো কোনো বাধা দিচ্ছি না। তারা তো আন্দোলন করে যাচ্ছে, লোক সমাগম করে যাচ্ছে, খুব ভালো কথা। এতকাল চুরিচামারি করে যত পয়সা বানিয়েছিল এবং যত টাকা মানিলন্ডারিং হয়েছিল, সেগুলো এখন ব্যবহার হচ্ছে। অন্তত সাধারণ মানুষের কাছে কিছু টাকা তো যাবে। তারা যত আন্দোলন করবে, সাধারণ মানুষের পকেটে কিছু টাকা যাবে। মানুষ কিছুটা টাকা পাক এই দুঃসময়ে, সেটা তো ভালো।

তিনি বলেন, এই টাকাগুলো বের হওয়া দরকার তো। সেই টাকাও বের হচ্ছে, মানুষও কিছু টাকা পাচ্ছে। আমি বলেছি, কিছু বলার দরকার নাই তারা আন্দোলন করতে থাকুক। তবে হ্যাঁ, মানুষের যদি কোনো ক্ষতি করতে চেষ্টা করে অগ্নিসন্ত্রাস ওই ধরনের কিছু করে তখন তো ছাড়ব না। কারণ আমাদের সঙ্গে তো জনগণ আছে, আমাদের কিছু করা লাগবে না। জনগণকে ডাক দিলে তারাই ঠান্ডা করে দেবে। যখন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল তখন সাধারণ মানুষই কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল, এবারও তা হবে। তাদের সেট লোক আছে আসে, চলে যায়, খায়-দায়। মানুষ যদি কিছু টাকা পয়সা পায় তাতে ক্ষতি কি। আমি সাংবাদিকদের বলব, তাদের এই টাকার উৎস কি সেটা খবর নেওয়ার দরকার, তারা এত টাকা কোথায় থেকে পায় এবং এত টাকা কীভাবে খরচ করে, সেটার একটু খোঁজ নেওয়া দরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, বলেন, সামনে পূজা, আমরা সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করি এবং করব। আমরা অনুরোধ করেছি পূজামণ্ডপগুলো যেখানে সেখানে না করে, কলকাতায় এত বেশি জনসংখ্যা কয়টা পূজামণ্ডপ হয় সেই হিসেবে তো বাংলাদেশে অনেক বেশি হয়। তারপরও আমাদের স্থানীয় জনগণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই সচেতন আছে এটার নিরাপত্তার দেওয়ার জন্য। বিএনপির আমলের অত্যাচার থেকে হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কেউ বাদ যায়নি। আবার সেটা যেন না করতে পারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সবাইকে সচেতন থাকতে পারে।

সরকারপ্রধান বলেন, তারা যদি দুর্গাপূজার দিকে কোনো দৃষ্টিই না দেয় তারপরও যদি আন্দোলন করতে থাকে, তারা তো তারিখ দিয়েই যাচ্ছে অমুক তারিখ ফেলে দিবে, তমুক তারিখ ফেলে দিবে। দিতে থাক অসুবিধা নাই, আমি এটাতে মাইন্ড করছি না। আমি মনে করি ভালো। আন্দোলনটা থাকলে মানুষ বেশ গরম থাকে, আমার পার্টিও ভালো থাকে, তখন আবার তারা নেমে পড়ে। মাঝে একটু ডিল দিয়েছিল কেউ নাই বলে, এখন এমপি সাহেবরাও দৌড়াচ্ছে এলাকায়, এখন সবাই দৌড়াদৌড়ি, ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছে। যার যার পজিশন ভাটায় টান দিয়েছিল, এখন দেখি তারা ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে পূজার সময় যেন কোনো অপকর্ম না করতে পারে, সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। আমি সবুজ জলবায়ু তহবিলে অর্থায়ন এবং ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ ফান্ডকে কার্যকর করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী জানান, জ্যাক সুলিভান নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সন্ত্রাস দমনের মতো সরকারের অর্জনের প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তিনি আবারও বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও জানান, সভায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে জোরদারের বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছে দুদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থানকে যেমন আরও সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী। সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল বলে আমি মনে করি।’

গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অধিবেশন শেষ হওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এক সপ্তাহ অবস্থান শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য যান। সেখান থেকে গত বুধবার (৪ অক্টোবর) দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারও সঙ্গে কথা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ০৩:২২:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সফরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তিনি জানান, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তবে সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কেউ কিছু জিজ্ঞাসাও করেনি।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফরের নানা দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় এক সাংবাদিক মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভানের সঙ্গে বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। আমার মনে পড়ে না, এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। আমাকে কেউ এ ধরনের কথা জিজ্ঞেসও করেনি। ২০০৭-৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, এরপর এটা কেউ চায়? এই পদ্ধতি তো বিএনপি নষ্ট করে দিয়েছে।

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আন্দোলন করে যাচ্ছে, আমরা তো কোনো বাধা দিচ্ছি না। তারা তো আন্দোলন করে যাচ্ছে, লোক সমাগম করে যাচ্ছে, খুব ভালো কথা। এতকাল চুরিচামারি করে যত পয়সা বানিয়েছিল এবং যত টাকা মানিলন্ডারিং হয়েছিল, সেগুলো এখন ব্যবহার হচ্ছে। অন্তত সাধারণ মানুষের কাছে কিছু টাকা তো যাবে। তারা যত আন্দোলন করবে, সাধারণ মানুষের পকেটে কিছু টাকা যাবে। মানুষ কিছুটা টাকা পাক এই দুঃসময়ে, সেটা তো ভালো।

তিনি বলেন, এই টাকাগুলো বের হওয়া দরকার তো। সেই টাকাও বের হচ্ছে, মানুষও কিছু টাকা পাচ্ছে। আমি বলেছি, কিছু বলার দরকার নাই তারা আন্দোলন করতে থাকুক। তবে হ্যাঁ, মানুষের যদি কোনো ক্ষতি করতে চেষ্টা করে অগ্নিসন্ত্রাস ওই ধরনের কিছু করে তখন তো ছাড়ব না। কারণ আমাদের সঙ্গে তো জনগণ আছে, আমাদের কিছু করা লাগবে না। জনগণকে ডাক দিলে তারাই ঠান্ডা করে দেবে। যখন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল তখন সাধারণ মানুষই কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল, এবারও তা হবে। তাদের সেট লোক আছে আসে, চলে যায়, খায়-দায়। মানুষ যদি কিছু টাকা পয়সা পায় তাতে ক্ষতি কি। আমি সাংবাদিকদের বলব, তাদের এই টাকার উৎস কি সেটা খবর নেওয়ার দরকার, তারা এত টাকা কোথায় থেকে পায় এবং এত টাকা কীভাবে খরচ করে, সেটার একটু খোঁজ নেওয়া দরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, বলেন, সামনে পূজা, আমরা সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করি এবং করব। আমরা অনুরোধ করেছি পূজামণ্ডপগুলো যেখানে সেখানে না করে, কলকাতায় এত বেশি জনসংখ্যা কয়টা পূজামণ্ডপ হয় সেই হিসেবে তো বাংলাদেশে অনেক বেশি হয়। তারপরও আমাদের স্থানীয় জনগণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই সচেতন আছে এটার নিরাপত্তার দেওয়ার জন্য। বিএনপির আমলের অত্যাচার থেকে হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কেউ বাদ যায়নি। আবার সেটা যেন না করতে পারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সবাইকে সচেতন থাকতে পারে।

সরকারপ্রধান বলেন, তারা যদি দুর্গাপূজার দিকে কোনো দৃষ্টিই না দেয় তারপরও যদি আন্দোলন করতে থাকে, তারা তো তারিখ দিয়েই যাচ্ছে অমুক তারিখ ফেলে দিবে, তমুক তারিখ ফেলে দিবে। দিতে থাক অসুবিধা নাই, আমি এটাতে মাইন্ড করছি না। আমি মনে করি ভালো। আন্দোলনটা থাকলে মানুষ বেশ গরম থাকে, আমার পার্টিও ভালো থাকে, তখন আবার তারা নেমে পড়ে। মাঝে একটু ডিল দিয়েছিল কেউ নাই বলে, এখন এমপি সাহেবরাও দৌড়াচ্ছে এলাকায়, এখন সবাই দৌড়াদৌড়ি, ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছে। যার যার পজিশন ভাটায় টান দিয়েছিল, এখন দেখি তারা ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে পূজার সময় যেন কোনো অপকর্ম না করতে পারে, সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। আমি সবুজ জলবায়ু তহবিলে অর্থায়ন এবং ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ ফান্ডকে কার্যকর করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী জানান, জ্যাক সুলিভান নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সন্ত্রাস দমনের মতো সরকারের অর্জনের প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তিনি আবারও বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও জানান, সভায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে জোরদারের বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছে দুদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থানকে যেমন আরও সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী। সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল বলে আমি মনে করি।’

গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অধিবেশন শেষ হওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এক সপ্তাহ অবস্থান শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য যান। সেখান থেকে গত বুধবার (৪ অক্টোবর) দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।