ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:২০:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৩৪১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশকে এভিয়েশন হাবে পরিণত করার লক্ষ্যে ‘স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার সংযোগ’ স্লোগান নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন (সফট ওপেনিং) করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এই টার্মিনালের পুরোপুরি ব্যবহার শুরু হবে আগামী বছর থেকে।

শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল ১০টা ১০ মিনিটে তিনি শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এরিয়ায় এসে পৌঁছান। এসময় দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ -এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্সাল এম মফিদুর রহমান।

উদ্বোধনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল রুটে বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে। এই সুযোগ ও সুবিধা কাজে লাগাতে দেশের সকল বিমানবন্দরকে আধুনিক করা হচ্ছে। ভৌগলিক অবস্থার কারণে একসময় বাংলাদেশ হবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের হাব।

উদ্বোধনস্থলে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং কথা বলেন। পরে তিনি পুরো টার্মিনাল ঘুরে দেখেন। প্রধানমন্ত্রী লাগেজ চেকিং করান, বোর্ডিং পাস নেন এবং সাধারণ যাত্রী মতো করে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার হন। পরে তিনি প্রি বোর্ডিং সিকিউরিটি স্ক্যান করান এবং বোর্ডিং ব্রিজে যান।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিংয়ের মধ্য দিয়ে দেশ-বিদেশের মানুষের জন্য একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সম্বলিত টার্মিনালের দ্বার উন্মোচিত হলো। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এ টার্মিনালের। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেশ-বিদেশের যাত্রীরা এ টার্মিনালের সবধরনের সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

তৃতীয় টার্মিনালে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের করিডোরে ঢুকলেই বুকিং কাউন্টার। এখান থেকে লাগেজ বুকিং করে যাত্রীরা যাবেন ইমিগ্রেশনে। পরে বডি স্ক্যানার আর অটোমেটিক লাগেজ চেক করা হবে।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘এই করিডোর পার হওয়ার জন্য যাত্রীরা স্ট্রেইট এসকেলেটর ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। নান্দনিক লাউঞ্জ, লিফট, আধুনিক বোর্ডিং ব্রিজ দিয়েই ফ্লাইটে উঠে যাবেন যাত্রীরা। অত্যাধুনিক বডি স্ক্যানার, লাগেজ চেকিং মেশিনসহ সবই আছে। বিশ্বের অন্যান্য বিমানবন্দরের সকল সুবিধাই পাবেন যাত্রীরা। আশা করা হচ্ছে ২০২৪ সালের মধ্যে তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবেন যাত্রীরা।’

২০১৭ সালের অক্টোবরে নতুন একটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প পাস করা হয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায়। ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকায় নতুন এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালের এপ্রিলে। এর মধ্যে জাপানের সহায়তা ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। সিঙ্গাপুরের স্থপতি রুহানি বাহরিনের নকশায় নির্মাণ করা হয় এই টার্মিনাল।

অত্যাধুনিক বোর্ডিং কাউন্টার, ইমিগ্রেশন, চেকিং, নান্দনিক লাউঞ্জ, ট্রানজিট সুবিধা, বোর্ডিং ব্রিজ, সুবিশাল করিডোর, স্কেলেটর, লাগেজ বেল্টসহ সব সুবিধাই রাখা হয়েছে নতুন টার্মিনালে।

তিন বছরেই শেষ হয়েছে ৯০ ভাগ কাজ। বাকি কাজও শেষ হবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই। এ প্রকল্প থেকে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৭ শ কোটি টাকা। যা দিয়ে আরও কিছু অতিরিক্ত কাজ করার পরিকল্পনা করছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, শাহজালাল বিমানবন্দরের পুরনো দুটি টার্মিনালে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার যাত্রী সেবা পাচ্ছেন। সে হিসাবে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা পাচ্ছেন। নতুন এই টার্মিনালের ফলে বছরে অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব।

এদিকে, এই তৃতীয় টার্মিনাল চালু হওয়ার আগেই বিশ্বের বিভিন্ন বিমান সংস্থা বাংলাদেশের বাজার ধরতে চাচ্ছে। এরইমধ্যে জমাও পড়েছে কিছু আবেদন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন

আপডেট সময় : ০৬:২০:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

বাংলাদেশকে এভিয়েশন হাবে পরিণত করার লক্ষ্যে ‘স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার সংযোগ’ স্লোগান নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন (সফট ওপেনিং) করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এই টার্মিনালের পুরোপুরি ব্যবহার শুরু হবে আগামী বছর থেকে।

শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল ১০টা ১০ মিনিটে তিনি শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এরিয়ায় এসে পৌঁছান। এসময় দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ -এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্সাল এম মফিদুর রহমান।

উদ্বোধনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল রুটে বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে। এই সুযোগ ও সুবিধা কাজে লাগাতে দেশের সকল বিমানবন্দরকে আধুনিক করা হচ্ছে। ভৌগলিক অবস্থার কারণে একসময় বাংলাদেশ হবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের হাব।

উদ্বোধনস্থলে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং কথা বলেন। পরে তিনি পুরো টার্মিনাল ঘুরে দেখেন। প্রধানমন্ত্রী লাগেজ চেকিং করান, বোর্ডিং পাস নেন এবং সাধারণ যাত্রী মতো করে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার হন। পরে তিনি প্রি বোর্ডিং সিকিউরিটি স্ক্যান করান এবং বোর্ডিং ব্রিজে যান।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিংয়ের মধ্য দিয়ে দেশ-বিদেশের মানুষের জন্য একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সম্বলিত টার্মিনালের দ্বার উন্মোচিত হলো। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এ টার্মিনালের। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেশ-বিদেশের যাত্রীরা এ টার্মিনালের সবধরনের সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

তৃতীয় টার্মিনালে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের করিডোরে ঢুকলেই বুকিং কাউন্টার। এখান থেকে লাগেজ বুকিং করে যাত্রীরা যাবেন ইমিগ্রেশনে। পরে বডি স্ক্যানার আর অটোমেটিক লাগেজ চেক করা হবে।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘এই করিডোর পার হওয়ার জন্য যাত্রীরা স্ট্রেইট এসকেলেটর ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। নান্দনিক লাউঞ্জ, লিফট, আধুনিক বোর্ডিং ব্রিজ দিয়েই ফ্লাইটে উঠে যাবেন যাত্রীরা। অত্যাধুনিক বডি স্ক্যানার, লাগেজ চেকিং মেশিনসহ সবই আছে। বিশ্বের অন্যান্য বিমানবন্দরের সকল সুবিধাই পাবেন যাত্রীরা। আশা করা হচ্ছে ২০২৪ সালের মধ্যে তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবেন যাত্রীরা।’

২০১৭ সালের অক্টোবরে নতুন একটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প পাস করা হয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায়। ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকায় নতুন এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালের এপ্রিলে। এর মধ্যে জাপানের সহায়তা ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। সিঙ্গাপুরের স্থপতি রুহানি বাহরিনের নকশায় নির্মাণ করা হয় এই টার্মিনাল।

অত্যাধুনিক বোর্ডিং কাউন্টার, ইমিগ্রেশন, চেকিং, নান্দনিক লাউঞ্জ, ট্রানজিট সুবিধা, বোর্ডিং ব্রিজ, সুবিশাল করিডোর, স্কেলেটর, লাগেজ বেল্টসহ সব সুবিধাই রাখা হয়েছে নতুন টার্মিনালে।

তিন বছরেই শেষ হয়েছে ৯০ ভাগ কাজ। বাকি কাজও শেষ হবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই। এ প্রকল্প থেকে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৭ শ কোটি টাকা। যা দিয়ে আরও কিছু অতিরিক্ত কাজ করার পরিকল্পনা করছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, শাহজালাল বিমানবন্দরের পুরনো দুটি টার্মিনালে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার যাত্রী সেবা পাচ্ছেন। সে হিসাবে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা পাচ্ছেন। নতুন এই টার্মিনালের ফলে বছরে অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব।

এদিকে, এই তৃতীয় টার্মিনাল চালু হওয়ার আগেই বিশ্বের বিভিন্ন বিমান সংস্থা বাংলাদেশের বাজার ধরতে চাচ্ছে। এরইমধ্যে জমাও পড়েছে কিছু আবেদন।