ঢাকা ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

টানা বৃষ্টির পর এবার ঝড়ের পূর্বাভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:০৩:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪২৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা বৃষ্টির পর এবার ঢাকাসহ ১৮ জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অফিস। এর সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। তবে রোববার ঝড়-বৃষ্টির তীব্রতা কমতে পারে বলে জানানো হয়েছে। সক্রিয় মৌসুমি বায়ু, সাগরে লঘুচাপ। আর এর প্রভাবে রাজধানীসহ বৃষ্টিতে ভিজছে সারা দেশ। মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই বৃষ্টি নানা মাত্রায় ঝরছে সারা দেশে।

ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আজ (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অর্থাৎ রংপুর-রাজশাহী বিভাগে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসছে। আগামী চব্বিশ ঘন্টায় এটা আরও কমে আসবে। তবে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে। পূর্বাভাস মিলেছে ঝড়ের।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে— বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি এখন অবস্থান করছে দেশের উত্তর-পশ্চিমে। এর প্রভাবেই উত্তাল সমুদ্র। বন্দরে জারি রয়েছে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত।

শুক্রবার ভোর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে। আর ঢাকায় তা ছিল ৬৫ মিলিমিটার।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় পড়েছে নানা প্রভাব। গাজীপুরে মাটির ঘরের দেয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে এক দম্পতি ও এক শিশুর। ময়মনসিংহে বজ্রপাতে মারা গেছেন আরও দুজন। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় পানির নিচে চলে গেছে রাস্তাঘাট-রেললাইন। কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল।

প্রবল বর্ষণে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই জলাবদ্ধ সাভারের টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক। এতে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় বেড়েছে ভোগান্তি।

গাড়িচালকরা বলছেন, ভারী বৃষ্টিতে রাস্তায় বেড়েছে ভোগান্তি। যেখান থেকে বৃষ্টির জমা পানি নামবে, সেই ড্রেনেজ ব্যবস্থার মুখ আটকে গেছে। তাই পানি সরছে না,বাড়ছে জলাবদ্ধতা।

পথচারীরা আবার বলছেন, রাস্তায় পানি বেড়েছে, টানা বৃষ্টি এই সুযোগে রিকশা ভাড়া বেড়েছে। ১০ টাকার ভাড়া রিকশাওয়ালা চাইছে ৪০ টাকা।

টাঙ্গাইলে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ২৩০ মিলিমিটার। এতে জলমগ্ন শহরের নানা এলাকা। গাজীপুরে এ ভোগান্তির পাশাপাশি ঘরের দেয়াল ধসে ঘটেছে প্রাণহানি।

ময়মনসিংহের চরপাড়া, ধোপাখোলা বেশ কিছু এলাকায় পানির নিচে রাস্তাঘাট। গফরগাঁওয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেছে চাচা-ভাতিজার। কিশোরগঞ্জে শহরের প্রধান সড়কসহ তলিয়েছে অলিগলি। কানিকাটায় টানা বৃষ্টির পানিতে নিচে চলে গেছে রেললাইন। টানা বৃষ্টির এই জলাবদ্ধতা দেখা গেছে নেত্রকোণা, নরসিংদী, মেহেরপুর, মৌলভীবাজারসহ নানা জেলায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

টানা বৃষ্টির পর এবার ঝড়ের পূর্বাভাস

আপডেট সময় : ০৬:০৩:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

টানা বৃষ্টির পর এবার ঢাকাসহ ১৮ জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অফিস। এর সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। তবে রোববার ঝড়-বৃষ্টির তীব্রতা কমতে পারে বলে জানানো হয়েছে। সক্রিয় মৌসুমি বায়ু, সাগরে লঘুচাপ। আর এর প্রভাবে রাজধানীসহ বৃষ্টিতে ভিজছে সারা দেশ। মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই বৃষ্টি নানা মাত্রায় ঝরছে সারা দেশে।

ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আজ (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অর্থাৎ রংপুর-রাজশাহী বিভাগে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসছে। আগামী চব্বিশ ঘন্টায় এটা আরও কমে আসবে। তবে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে। পূর্বাভাস মিলেছে ঝড়ের।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে— বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি এখন অবস্থান করছে দেশের উত্তর-পশ্চিমে। এর প্রভাবেই উত্তাল সমুদ্র। বন্দরে জারি রয়েছে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত।

শুক্রবার ভোর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে। আর ঢাকায় তা ছিল ৬৫ মিলিমিটার।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় পড়েছে নানা প্রভাব। গাজীপুরে মাটির ঘরের দেয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে এক দম্পতি ও এক শিশুর। ময়মনসিংহে বজ্রপাতে মারা গেছেন আরও দুজন। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় পানির নিচে চলে গেছে রাস্তাঘাট-রেললাইন। কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল।

প্রবল বর্ষণে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই জলাবদ্ধ সাভারের টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক। এতে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় বেড়েছে ভোগান্তি।

গাড়িচালকরা বলছেন, ভারী বৃষ্টিতে রাস্তায় বেড়েছে ভোগান্তি। যেখান থেকে বৃষ্টির জমা পানি নামবে, সেই ড্রেনেজ ব্যবস্থার মুখ আটকে গেছে। তাই পানি সরছে না,বাড়ছে জলাবদ্ধতা।

পথচারীরা আবার বলছেন, রাস্তায় পানি বেড়েছে, টানা বৃষ্টি এই সুযোগে রিকশা ভাড়া বেড়েছে। ১০ টাকার ভাড়া রিকশাওয়ালা চাইছে ৪০ টাকা।

টাঙ্গাইলে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ২৩০ মিলিমিটার। এতে জলমগ্ন শহরের নানা এলাকা। গাজীপুরে এ ভোগান্তির পাশাপাশি ঘরের দেয়াল ধসে ঘটেছে প্রাণহানি।

ময়মনসিংহের চরপাড়া, ধোপাখোলা বেশ কিছু এলাকায় পানির নিচে রাস্তাঘাট। গফরগাঁওয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেছে চাচা-ভাতিজার। কিশোরগঞ্জে শহরের প্রধান সড়কসহ তলিয়েছে অলিগলি। কানিকাটায় টানা বৃষ্টির পানিতে নিচে চলে গেছে রেললাইন। টানা বৃষ্টির এই জলাবদ্ধতা দেখা গেছে নেত্রকোণা, নরসিংদী, মেহেরপুর, মৌলভীবাজারসহ নানা জেলায়।