ঢাকা ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আফগানদের উড়িয়ে ভারতের দাপুটে জয়

ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪৩৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টপ অর্ডারের ব্যাটাররা আলো ছড়াতে না পারলেও মিডল অর্ডারে হাশমতুল্লাহ শহীদি ও আজমতউল্লাহ ওমরাজাইয়ের ব্যাটে ভারতের সামনে ২৭৩ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় আফগানিস্তান। চ্যালেঞ্জিং টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে রীতিমতো ঝড় তুলে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

রোহিত শর্মার বিশ্বরেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির সঙ্গে বিরাট কোহলির অপরাজিত হাফসেঞ্চুরিতে আট উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। টানা দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিশ্বকাপের আয়োজকরা।

বুধবার (১১ অক্টোবর) বিশ্বকাপের নবম ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হয় আফগানরা। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে রশিদ-নবিদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭২ রানে।

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ মিশনে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শুরু ভারতের। আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছে তারা। আফগানিস্তানের দেওয়া ২৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৬৫ বলেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন রোহিত শর্মা। এর মাধ্যমে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩১তম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ভারতীয় অধিনায়ক।

সেঞ্চুরি হাকানোর পথে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন রোহিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছেন হিটম্যান খ্যাত তারকা এই ব্যাটার। ক্যারিবীয় তারকা ক্রিস গেইলের ৫৫৩ টি ছক্কার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন তিনি।

চলমান বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই আইসিসির মেগা আসরটিতে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডও ছিল রোহিতের দখলে। তবে তার সঙ্গে সমান ৬টি সেঞ্চুরি নিয়ে রেকর্ড ভাগাভাগি করছিলেন স্বদেশি কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার। বিশ্বকাপে ৪৪ ইনিংসে শচীন শতক হাঁকিয়েছিলেন ৬টি, বিপরীতে ১৯ ইনিংসেই সপ্তম ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়েছেন রোহিত। একইসঙ্গে বিশ্বকাপে তার ১০০০ রানও পূর্ণ হয়েছে।

আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে আট উইকেটে ২৭২ রান তোলে আফগানিস্তান। জবাবে ১৫ ওভার হাতে রেখেই দুই উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান করে ভারত।

ওপেনিং জুটিতে রোহিত ও কিশান মিলে মাত্র ১৮.৪ ওভারে গড়েন ১৫৬ রানের জুটি। ৪৭ বলে ৪৭ রান করে রশিদ খানের বলে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে কিশান ফিরলে ভাঙে ওপেনিং জুটি। কিশান আউট হলেও ৬৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত। বিশ্বকাপে যা ভারতের পক্ষে দ্রুততম। সার্বিকভাবেও এটি ভারতের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্রততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ৮৪ বলে ১৬ চার ও পাঁচ ছক্কায় সাজানো রোহিতের ১৩১ রানের ইনিংসটি থামে রশিদের বলে বোল্ড হয়ে।

দলীয় ২০৫ রানে রোহিত আউট হলেও ততক্ষণে ভারতের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। ভারতীয় ব্যাটারদের সামনে আফগান বোলারদের অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে পুরো ইনিংসজুড়ে। দ্বিতীয় উইকেট পতনের পরের সময়টুকু শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে অনায়াসে পাড়ি দেন বিরাট কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি তুলে কোহলি অপরাজিত থাকেন ৫৬ বলে ৫৫ রানে। শ্রেয়াস করেন ২৩ বলে অপরাজিত ২৫ রান। আফগানদের পক্ষে দুটি উইকেটই নেন রশিদ খান।

এর আগে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। শুরুটা বেশ দেখেশুনেই করে আফগানরা। রহমতউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান মিলে উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৩২ রান। জাদরানকে (২২) আউট করে জুটি ভাঙেন জসপ্রীত বুমরাহ। আরেক ওপেনার গুরবাজ (২১) আউট হন হার্দিক পান্ডিয়ার বলে। রহমত শাহকে (১৬) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন শার্দুল ঠাকুর। ৬৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় আফগানিস্তান।

সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক শহীদি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। চতুর্থ উইকেটে দুজনের ১২১ রানের জুটিতে কক্ষপথে ফেরে আফগানরা। ওমরজাইকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন পান্ডিয়া। পান্ডিয়ার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৬৯ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন ওমর। আরেক প্রান্তে শহীদি এগিয়ে যাচ্ছিলেন শতকের দিকে। কিন্তু, ৮৮ বলে ৮০ রান করে কুলদীপ যাদবের বলে লেগ বিফোর হলে থামে তার ঝলমলে ইনিংসটি।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে আফগানরা। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবীদের ছোট ছোট ইনিংসে ভর দিয়ে শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে ২৭২ রানের লড়াকু সংগ্রহ জমা করে আফগানিস্তান।

ভারতের পক্ষে ৩৯ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন বুমরাহ। ৪৩ রানে দুই উইকেট নেন পান্ডিয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান : ৫০ ওভারে ২৭২/৮। (গুরবাজ ২১, জাদরান ২২, রহমত ১৬, শহীদি ৮০, ওমর ৬২, নবী ১৯, নাজিব ২, রশিদ ১৬, মুজিব ১০*, নাভিন ৯*; বুমরাহ ১০-০৩৯-৪, সিরাজ ৯-০-৭৬-০, পান্ডিয়া ৭-০-৪৩-২, শার্দুল ৬-০-৩১-১, যাদব ১০-০-৪০-১, জাদেজা ৮-০-৩৮-০)।

ভারত : ৩৫ ওভারে ২৭৩/২। (রোহিত ১৩১, কিশান ৪৭, কোহলি ৫৫*, শ্রেয়াস ২৫* ; ফারুকি ৬-০-৫০-০, মুজিব ৮-০-৬৪-০, নাভিন ৫-০-৩১-০, ওমর ৪-০-৩৪-০, নবী ৪-০-৩২-০, রশিদ ৮-০-৫৭-২ )

ফল : ভারত আট উইকেটে জয়ী।

নিউজটি শেয়ার করুন

আফগানদের উড়িয়ে ভারতের দাপুটে জয়

আপডেট সময় : ০৩:৫৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

টপ অর্ডারের ব্যাটাররা আলো ছড়াতে না পারলেও মিডল অর্ডারে হাশমতুল্লাহ শহীদি ও আজমতউল্লাহ ওমরাজাইয়ের ব্যাটে ভারতের সামনে ২৭৩ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় আফগানিস্তান। চ্যালেঞ্জিং টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে রীতিমতো ঝড় তুলে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

রোহিত শর্মার বিশ্বরেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির সঙ্গে বিরাট কোহলির অপরাজিত হাফসেঞ্চুরিতে আট উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। টানা দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিশ্বকাপের আয়োজকরা।

বুধবার (১১ অক্টোবর) বিশ্বকাপের নবম ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হয় আফগানরা। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে রশিদ-নবিদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭২ রানে।

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ মিশনে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শুরু ভারতের। আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছে তারা। আফগানিস্তানের দেওয়া ২৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৬৫ বলেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন রোহিত শর্মা। এর মাধ্যমে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩১তম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ভারতীয় অধিনায়ক।

সেঞ্চুরি হাকানোর পথে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন রোহিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছেন হিটম্যান খ্যাত তারকা এই ব্যাটার। ক্যারিবীয় তারকা ক্রিস গেইলের ৫৫৩ টি ছক্কার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন তিনি।

চলমান বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই আইসিসির মেগা আসরটিতে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডও ছিল রোহিতের দখলে। তবে তার সঙ্গে সমান ৬টি সেঞ্চুরি নিয়ে রেকর্ড ভাগাভাগি করছিলেন স্বদেশি কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার। বিশ্বকাপে ৪৪ ইনিংসে শচীন শতক হাঁকিয়েছিলেন ৬টি, বিপরীতে ১৯ ইনিংসেই সপ্তম ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়েছেন রোহিত। একইসঙ্গে বিশ্বকাপে তার ১০০০ রানও পূর্ণ হয়েছে।

আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে আট উইকেটে ২৭২ রান তোলে আফগানিস্তান। জবাবে ১৫ ওভার হাতে রেখেই দুই উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান করে ভারত।

ওপেনিং জুটিতে রোহিত ও কিশান মিলে মাত্র ১৮.৪ ওভারে গড়েন ১৫৬ রানের জুটি। ৪৭ বলে ৪৭ রান করে রশিদ খানের বলে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে কিশান ফিরলে ভাঙে ওপেনিং জুটি। কিশান আউট হলেও ৬৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত। বিশ্বকাপে যা ভারতের পক্ষে দ্রুততম। সার্বিকভাবেও এটি ভারতের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্রততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ৮৪ বলে ১৬ চার ও পাঁচ ছক্কায় সাজানো রোহিতের ১৩১ রানের ইনিংসটি থামে রশিদের বলে বোল্ড হয়ে।

দলীয় ২০৫ রানে রোহিত আউট হলেও ততক্ষণে ভারতের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। ভারতীয় ব্যাটারদের সামনে আফগান বোলারদের অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে পুরো ইনিংসজুড়ে। দ্বিতীয় উইকেট পতনের পরের সময়টুকু শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে অনায়াসে পাড়ি দেন বিরাট কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি তুলে কোহলি অপরাজিত থাকেন ৫৬ বলে ৫৫ রানে। শ্রেয়াস করেন ২৩ বলে অপরাজিত ২৫ রান। আফগানদের পক্ষে দুটি উইকেটই নেন রশিদ খান।

এর আগে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। শুরুটা বেশ দেখেশুনেই করে আফগানরা। রহমতউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান মিলে উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৩২ রান। জাদরানকে (২২) আউট করে জুটি ভাঙেন জসপ্রীত বুমরাহ। আরেক ওপেনার গুরবাজ (২১) আউট হন হার্দিক পান্ডিয়ার বলে। রহমত শাহকে (১৬) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন শার্দুল ঠাকুর। ৬৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় আফগানিস্তান।

সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক শহীদি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। চতুর্থ উইকেটে দুজনের ১২১ রানের জুটিতে কক্ষপথে ফেরে আফগানরা। ওমরজাইকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন পান্ডিয়া। পান্ডিয়ার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৬৯ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন ওমর। আরেক প্রান্তে শহীদি এগিয়ে যাচ্ছিলেন শতকের দিকে। কিন্তু, ৮৮ বলে ৮০ রান করে কুলদীপ যাদবের বলে লেগ বিফোর হলে থামে তার ঝলমলে ইনিংসটি।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে আফগানরা। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবীদের ছোট ছোট ইনিংসে ভর দিয়ে শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে ২৭২ রানের লড়াকু সংগ্রহ জমা করে আফগানিস্তান।

ভারতের পক্ষে ৩৯ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন বুমরাহ। ৪৩ রানে দুই উইকেট নেন পান্ডিয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান : ৫০ ওভারে ২৭২/৮। (গুরবাজ ২১, জাদরান ২২, রহমত ১৬, শহীদি ৮০, ওমর ৬২, নবী ১৯, নাজিব ২, রশিদ ১৬, মুজিব ১০*, নাভিন ৯*; বুমরাহ ১০-০৩৯-৪, সিরাজ ৯-০-৭৬-০, পান্ডিয়া ৭-০-৪৩-২, শার্দুল ৬-০-৩১-১, যাদব ১০-০-৪০-১, জাদেজা ৮-০-৩৮-০)।

ভারত : ৩৫ ওভারে ২৭৩/২। (রোহিত ১৩১, কিশান ৪৭, কোহলি ৫৫*, শ্রেয়াস ২৫* ; ফারুকি ৬-০-৫০-০, মুজিব ৮-০-৬৪-০, নাভিন ৫-০-৩১-০, ওমর ৪-০-৩৪-০, নবী ৪-০-৩২-০, রশিদ ৮-০-৫৭-২ )

ফল : ভারত আট উইকেটে জয়ী।