অস্বস্তিতে পড়েছেন বাজারে আসা মধ্য ও নিম্নবিত্ত
- আপডেট সময় : ০৬:২০:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩
- / ৪৯০ বার পড়া হয়েছে
গত সপ্তাহের তুলনায় বেশিরভাগ সবজির দামই বেড়েছে। বাজারে ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। বৃষ্টির প্রভাবে যোগান কমেছে সবজির, বলছেন বিক্রেতারা। এদিকে, পেঁয়াজ, আলু, রসুন, ডিম বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দরেই। কিছুটা বেড়েছে ডালের দামও। আর শীতকালীন সবজি ক্রেতা পর্যায়ে নাগালে আসছে না দাম। এই অবস্থায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন বাজার করতে আসা মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো।
শীতকালে বাজারে সাধারণত লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, দেশি পিঁয়াজ, ভারতীয় পিঁয়াজ, বেগুন, মুলা, লালশাক, পালংশাক, পটোল, ঢেঁড়স, বরবটি, ঝিঙা, পেঁপে, আলু, করলা, কচু, শসাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরপুর থাকে। তবে এ বছর টানা বৃষ্টির কারণে সবজি উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। যে কারণে বাজারে সবজি তুলনামূলক কম। তাই, সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরেই থাকছে শীতের সবজি।
আজ (শুক্রবার) সকালে রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা এলাকার বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে সিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বেগুন ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর বেগুনি রঙের গোল বেগুনের দাম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি, মুলা ৭০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজি। এ ছাড়াও শসা ৮০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, আলু ৫৫ টাকা কেজি, ফুলকপি ৪০ টাকা (ছোট), বাঁধাকপি ৩০ টাকা (ছোট) দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৯০ টাকায়। গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি বর্তমানে হচ্ছে ৯৫ টাকায়।
বাজারে ভারতীয় টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, আগে কেজি ছিল ১২০ টাকা। চাল কুমড়া প্রতিটি ৯০ টাকা; মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৮০ টাকা; চিচিঙ্গা ৮০; পটল ৬০; বরবটি ১২০ ও ধুন্দল ৮০-১০০ টাকা কেজি।
বাজার করতে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী শামীম হাসান বলেন, শুক্রবার এলেই সবজি, মাছ-মাংসের দাম বেড়ে যায়। পরশু বাজার করে নিয়ে গেছি, ঢেঁড়স ছিল ৫০ টাকা, আজকে নাকি ৮০ টাকা। দুইদিনেই দেশে কী এমন হয়ে গেলো যে ৩০ টাকা দাম বেড়ে গেল? তার মানে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো দাম বাড়ায়। আর ব্যবসায়ীদের এই অনিয়ম যেন দেখার কেউ নেই।
এদিকে দুই দিনের ব্যবধানে ডিমের দামও বেড়েছে প্রতি ডজনে ১০ টাকার মতো। গেল সপ্তাহে প্রতি ডজন লাল ডিম ছিল ১৫৫ টাকা। শুক্রবার প্রতি ডজন লাল ডিম ১৬০-১৬৫ টাকা, সাদা ডিম ডজন প্রতি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ডিমের সঙ্গে মুরগির দামও বেড়েছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। এ সপ্তাহে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে কক এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে কক ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি আর গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রুই, পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দামে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। বাজারে ইলিশ মাছ না থাকায় বেড়েছে অন্যান্য মাছের চাহিদা। আর এই চাহিদাকে পুঁজি করে প্রায় সব ধরণের মাছ কেজিতে ২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
সাহানা আখতার নামে একজন বলেন, আজকের বাজারে সবকিছুরই দাম বেশি মনে হচ্ছে। মুলার কেজি ৮০ টাকা, যা সাধারণত ৩০/৪০ টাকার মধ্যেই থাকে। বাজারে সিম এসেছে অন্তত আরও ১৫-২০ আগে, অথচ দাম এখনো ২০০ টাকা কেজি। দাম জিজ্ঞেস করে চলে আসা ছাড়া আর কিছু করার আছে?
তিনি আরও বলেন, বাজারে জিনিসপত্রের এতো দাম, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কেনার অবস্থা নেই। যে সবজিরই দাম জিজ্ঞেস করি, ৭০/৮০ টাকার নিচে কিছুই নেই। বাজারে এলেই হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়। মাছ-মাংস কেনার অবস্থা নেই। ভর্তা-ভাত, সবজি খেয়ে থাকবো সেটাও অবস্থা নেই। আমরা গরীব মানুষ কতোটা বিপদে আছি বলে বোঝানোর ভাষা নেই।