বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। আন্দোলনের মাধ্যমেই এ সরকারকে বিদায় দিতে হবে। তিনি বলেন, তলে তলে আসলে কিছুই হয়নি। গণতান্ত্রিক বিশ্ব তাদের ক্ষমতা থেকে সরে যেতে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বলেছে।
শনিবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দরের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবীতে অনশন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে মুক্ত না করে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না করে বিশ্রামও নেয়া যাবে না। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সাবেক সরকারি কর্মকর্তারা সংহতি জানান।
অনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আশঙ্কা জানিয়ে বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত কোন অঘটন ঘটলে এই সরকারকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মির্জা আব্বাস। অনশনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেন, অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজপথে যদি আমাদের ওপর আঘাত আসে, আমরা যদি পাল্টা আঘাত করতে না পারি, আমাদের উপর নির্যাতন আরও বাড়বে।
বিচারের নামে অবিচার করবেন না জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন আপনারা নির্বাচন করতে পারবেন না। আপনারা বাড়িতে থাকেন। বেতন বাতা নেন। আমরা সরকারকে বিদায় করি। তারপর নির্বাচন করবেন।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, তারা বড় বড় কথা বলেন৷ মুখের কথায় দেশ চলবে, মুখের কথায় কাজ হবে। আজকে আমরা অনশন করছি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, এবারের লড়াই আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই। ফ্যাসিবাদ বিদায় করার লড়াই। এই লড়াই আমাদের বিজয় হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। অন্যথায় এই সরকারকে চরমমূল্য দিতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পূজার পর আরও শক্ত কর্মসূচি নিয়ে হাজির হব। এই অবৈধ দখলদার সরকারের মসনদ ভেঙে যাবে। সরকার পূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা বাধাতে চায়। যাতে আমরা আন্দোলন করতে না পারি। কিন্তু এটা আমরা বুঝি। জনগণ আরও ভালো বোঝে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে আশ শনিবার বেলা ১১টার দিকে এ অনশন শুরু হয়। ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর ও দক্ষিণ এর আয়োজন করে।
ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম এর সভাপতিত্বে আরও অংশ নেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, জমিয়তে ওলামা ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দীন ইকরাম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামান হায়দার, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আবু তাহের, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জেএএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর প্রমুখ।
মির্জা ফখরুলকে জুস খাইয়ে অনশন ভাঙান অলি আহমেদ, মির্জা আব্বাসকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী এবং প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ অনশনকারীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এছাড়া সারা দেশে একই দাবিতে বিএনপি এ অনশন কর্মসূচি পালন করছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বিএনপি তিন ঘণ্টা এ কর্মসূচি পালন করে। দুপুর ২টায় এ কর্মসূচি শেষ হয়।