সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়ী কবি ও লেখক লুইস গ্লুক মারা গেছেন। তিনি আমেরিকার সাবেক ‘পোয়েট লরিয়েট’ ছিলেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। লুইস গ্লুকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফারার, স্ট্রস অ্যান্ড গিরোক্সের প্রকাশক ও লুইস গ্লুকের সম্পাদক জোনাথন গ্যালাসি। তিনি বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার ৮০ বছর বয়সে এই কীর্তিমান লেখকের মৃত্যু হয়েছে।
২০২০ সালে সাহিত্য নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন লুইস গ্লুক। তাঁর সাহিত্যকর্মকে দুঃখ জাগানিয়া, স্মৃতি জাগানিয়া ও দার্শনিক অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন বলে উল্লেখ করেছিল নোবেল কমিটি। নোবেল কমিটির বিচারকেরা তাঁর লেখার প্রশংসা করে বলেছিলেন, দ্ব্যর্থহীন কাব্যিক কণ্ঠস্বরের অধিকারী ছিলেন লুইস গ্লুক। তিনি বেশির ভাগ সময়েই ছোট ছোট কবিতা লিখেছেন, তবে তাঁর কবিতাগুলো সংক্ষিপ্ত হলেও তীক্ষ্ণ বক্তব্যধর্মী ছিল।
আমেরিকার নিউ ইয়র্কে বাস করতেন লুইস গ্লুক। জীবদ্দশায় তিনি বেশ কয়েকটি গদ্য, প্রবন্ধ ও কবিতার বই লিখেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্মে শাস্ত্রীয় পুরাণ, শেক্সপিয়র ও এলিয়টের ব্যাপক প্রভাব ছিল। ‘ওয়াইল্ড আইরিস’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯৯৩ সালে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন লুইস গ্লুক। তাঁর অন্যান্য আলোচিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে দ্য সেভেন এজস, দ্য ট্রায়াম্ফ অফ অ্যাকিলিস, ভিটা নোভা ইত্যাদি।
পুলিৎজার ছাড়াও তিনি বোলিংজেন পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া ২০০৩–২০০৪ মেয়াদে লুইস গ্লুক হোয়াইট হাউসে ‘পোয়েট লরিয়েট’ হিসবে কাজ করেছেন। ১৯৪৩ সালের ২২ এপ্রিল নিউ ইয়র্ক সিটিতে জন্মেছিলেন লুইস গ্লুক। তাঁর বাবা ড্যানিয়েল গ্লুক একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। আর ব্যাট্রিস গ্লুক ছিলেন গৃহীনি।
সারাহ লরেন্স কলেজ এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন বিখ্যাত এই মার্কিন লেখক। ছাত্রাবস্থাতেই তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয় ইয়র্কার, আটলান্টিক ও অন্যান্য ম্যাগাজিনে। লুইস গ্লুকের প্রথম কবিতার বই ‘ফার্স্টবর্ন’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৮ সালে।
লুইস গ্লুকের পারিবারিক জীবন ছিল বিচ্ছেদপূর্ণ। দুবার বিয়ে করেছিলেন তিনি এবং দুবারই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। ১৯৬৭ সালে প্রথম বিয়ে করেছিলেন চার্লস হার্টজ জুনিয়রকে। তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর ১৯৭৭ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন জন ড্রানোকে। এই দম্পতির নোয়াহ নামে একজন পুত্র রয়েছে।