ঢাকা ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বাংলাদেশকে ৫ পরামর্শ দিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৫০:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪৩৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আগামী নির্বাচন নিয়ে সংলাপ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধসহ পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। রোববার (১৫ অক্টোবর) ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পাঁচটি পরামর্শের কথা জানিয়েছে।

চলতি মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত ঢাকা সফর করেছে প্রতিনিধি দলটি। যুক্তরাষ্ট্র ফিরে তারা মোট ৫টি মতামত তুলে ধরেছে। মতামতের প্রথমেই সংলাপের আহবান করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে অনুরোধ করা হয়। সেই সঙ্গে নাগরিকের ভিন্ন মতকেও সম্মান জানাতে বলা হয়েছে।

দেশের নাগরিক যেন অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেয়া হয়। রাজনৈতিক সহিংসতাকারী অপরাধীদেরকে জবাবদিহি করার প্রতিও আহবান জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে প্রতিনিধিদল বলেন, ‘যদি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করেন এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা না হয়, তবে দেশের প্রধান বিরোধীদল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটের পরিকল্পনা করছে। যদিও এসব দাবি মেনে নিতে অস্বীকার করেছে সরকার। ফলে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের নাগরিকরা তাদের রাজনৈতিক পছন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ওপর থেকেও তাদের আস্থা উঠে যাচ্ছে। ব্যাপক অনাস্থা, রাজনৈতিক সংলাপের অভাবের কারণে উত্তেজনা ও সহিংসতা বাড়ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের জন্য বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যার মধ্যে আপসহীন রাজনীতি, একপেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কঠোর রাজনৈতিক বক্তব্য, রাজনৈতিক সহিংসতা, অনিশ্চয়তা ও ভয়ের ব্যাপক পরিবেশ, নাগরিকদের অবস্থান, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি রয়েছে। রাজনৈতিক নেতা এবং অন্য অংশীজন, নারী, তরুণ এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীর মধ্যেও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশ একটি নির্বাচনের সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচন গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি দেশের অঙ্গীকারের একটি পরীক্ষা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পরিস্থিতি যাচাই করতে গত শনিবার ঢাকায় এসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের ৬ সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) যৌথভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রাক নির্বাচন সমীক্ষা মিশন পরিচালনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের পরামর্শগুলো হলো:

১। সহনশীল বক্তব্য এবং নির্বাচনী ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ করতে হবে।
২। নির্বাচনের সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে।
৩। অহিংস কর্মকাণ্ডে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অপরাধীদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।
৪। সব দলকে অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
৫। নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে।

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ পর্যালোচনা করতে গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ঢাকায় আসে আমেরিকার একটি প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলটি। ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় ছিলেন। এই সফরে তাঁরা নির্বাচন কমিশন, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নাগরিক প্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি, বিদেশি কূটনীতিক এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। দেখা করেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গেও।

এরআগে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত জুলাইয়ে ঢাকা সফর করে ইইউর একটি প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। প্রায় দুই সপ্তাহের এ সফরে কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, নির্বাচন কমিশন, নাগরিক সমাজ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যম এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে পর্যবেক্ষক দলটি।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশকে ৫ পরামর্শ দিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল

আপডেট সময় : ০৫:৫০:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

আগামী নির্বাচন নিয়ে সংলাপ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধসহ পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। রোববার (১৫ অক্টোবর) ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পাঁচটি পরামর্শের কথা জানিয়েছে।

চলতি মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত ঢাকা সফর করেছে প্রতিনিধি দলটি। যুক্তরাষ্ট্র ফিরে তারা মোট ৫টি মতামত তুলে ধরেছে। মতামতের প্রথমেই সংলাপের আহবান করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে অনুরোধ করা হয়। সেই সঙ্গে নাগরিকের ভিন্ন মতকেও সম্মান জানাতে বলা হয়েছে।

দেশের নাগরিক যেন অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেয়া হয়। রাজনৈতিক সহিংসতাকারী অপরাধীদেরকে জবাবদিহি করার প্রতিও আহবান জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে প্রতিনিধিদল বলেন, ‘যদি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করেন এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা না হয়, তবে দেশের প্রধান বিরোধীদল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটের পরিকল্পনা করছে। যদিও এসব দাবি মেনে নিতে অস্বীকার করেছে সরকার। ফলে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের নাগরিকরা তাদের রাজনৈতিক পছন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ওপর থেকেও তাদের আস্থা উঠে যাচ্ছে। ব্যাপক অনাস্থা, রাজনৈতিক সংলাপের অভাবের কারণে উত্তেজনা ও সহিংসতা বাড়ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের জন্য বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যার মধ্যে আপসহীন রাজনীতি, একপেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কঠোর রাজনৈতিক বক্তব্য, রাজনৈতিক সহিংসতা, অনিশ্চয়তা ও ভয়ের ব্যাপক পরিবেশ, নাগরিকদের অবস্থান, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি রয়েছে। রাজনৈতিক নেতা এবং অন্য অংশীজন, নারী, তরুণ এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীর মধ্যেও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশ একটি নির্বাচনের সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচন গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি দেশের অঙ্গীকারের একটি পরীক্ষা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পরিস্থিতি যাচাই করতে গত শনিবার ঢাকায় এসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের ৬ সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) যৌথভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রাক নির্বাচন সমীক্ষা মিশন পরিচালনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের পরামর্শগুলো হলো:

১। সহনশীল বক্তব্য এবং নির্বাচনী ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ করতে হবে।
২। নির্বাচনের সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে।
৩। অহিংস কর্মকাণ্ডে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অপরাধীদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।
৪। সব দলকে অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
৫। নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে।

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ পর্যালোচনা করতে গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ঢাকায় আসে আমেরিকার একটি প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলটি। ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় ছিলেন। এই সফরে তাঁরা নির্বাচন কমিশন, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নাগরিক প্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি, বিদেশি কূটনীতিক এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। দেখা করেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গেও।

এরআগে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত জুলাইয়ে ঢাকা সফর করে ইইউর একটি প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। প্রায় দুই সপ্তাহের এ সফরে কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, নির্বাচন কমিশন, নাগরিক সমাজ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যম এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে পর্যবেক্ষক দলটি।