সোমবার (১৬ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জাতিসংঘের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় জাতিসংঘ।
নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি জাতিসংঘ। বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই আমরা।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে স্টিফেন ডুজাররিক বলেন, আমরা এমন একটি পরিবেশ দেখতে চাই, যেখানে মানুষজন যে কোনো পক্ষে কথা বলতে পারবে প্রতিশোধের ভয় ছাড়া। এ ছাড়া ম্যান্ডেট না পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না জাতিসংঘ।
সাংবাদিক মুশফিক ফজল আনসারী এক প্রশ্ন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ইইউ ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে তারা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না। মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধীদের মধ্যে সংলাপের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমান সরকার সব উপায়ে বিরোধীদের ওপর আক্রমণ করছে।
আমরা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জেনেছি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অবস্থান সম্পর্কে জেনেছি। বর্তমান এই নিষ্পেষণমূলক ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ইস্যুতে জাতিসংঘের সর্বশেষ অবস্থান জানতে চান আনসারী।
জবাবে স্টিফেন ডুজাররিক বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ইস্যুতে অবস্থানের কোনো পরিবর্তন করেনি জাতিসংঘ। বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই আমরা। একই সঙ্গে এমন একটি পরিবেশ দেখতে চাই, যেখানে মানুষজন যে কোনো পক্ষে কথা বলতে পারবে প্রতিশোধের ভয় ছাড়া। এ ছাড়া ম্যান্ডেট না পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না জাতিসংঘ।
এর আগে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২ অক্টোবর দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না এবং নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে চায় না।
তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশিরা নিজেরাই যা চায় যুক্তরাষ্ট্রও সেটিই চায়: আর তা হচ্ছে- অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়া সকলেই তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে যে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক – ঠিক যেমনটা আমরাও চাই।
গত মে মাসের শেষে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। জানানো হয়, বাংলাদেশের ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী’ ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া হবে না।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গত ২২ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে জানান, তার দেশ সেই ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন এর আওতায়। এসব ব্যক্তির পাশাপাশি তাদের পরিবারের নিকটতম সদস্যরাও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ‘অযোগ্য’ বিবেচিত হতে পারেন।