ঢাকা ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৭:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৫৩৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভোটের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। ইসি রাজনৈতিক বিরোধে মাথা না ঘামিয়ে, গুছিয়ে এনেছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সব কাজ। এরই মধ্যে প্রায় ১২ ধরনের সরঞ্জাম কেনাকাটাও প্রায় শেষ। ব্যালট বাক্সসহ এসব সামগ্রী আসতে শুরু করেছে কমিশনে। আগামী সপ্তাহে পাঠানো হবে জেলা পর্যায়ে। এখন শুধু তফসিল ঘোষণার অপেক্ষা।

সংবিধান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। আর এর দিন গণনা শুরু হচ্ছে ১ নভেম্বর। সে মাসেই আসছে তফসিল। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে কমিশনের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ।

নির্বাচন প্রশ্নে বড় দুই দলের রাজনৈতিক মতভেদে মাথা ঘামাচ্ছে না ইসি, করছে না সমঝোতার অপেক্ষাও। ভোটগ্রহণে ব্যালট বাক্স-ব্যালট পেপার থেকে শুরু করে স্ট্যাম্প প্যাড, লাল গালাসহ ১২ ধরনের সরঞ্জাম কেনাকাটা শেষ পর্যায়ে।

এবার ৪২ হাজার ১০৩ কেন্দ্রে ভোটকক্ষ প্রায় ৬২ হাজার। এতে কক্ষ-প্রতি একটি ও কেন্দ্র-প্রতি একটি বাড়তি ধরে ব্যালট বাক্স লাগছে ৩ লাখ ২৫ হাজার। তাই নতুন করে কিনতে হচ্ছে ৮০ হাজার। আগে এসব বিদেশ থেকে আনা হলেও এবার কেনা হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে।

ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ‘ভোটগ্রহণে প্রয়োজনীয় অধিকাংশ সরঞ্জামই আমরা পেয়ে গেছি। শুধু স্ট্যাম্প প্যাডটা বাকি, সেটাও চলতি মাসের শেষের দিকে চলে আসবে।’

নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানোর আগে চলছে যাচাই-বাছাই। সব ঠিক থাকলে জেলা ও আঞ্চলিক অফিসে যাবে শিগগিরই। সেখান থেকেই ভোটের আগে পৌঁছাবে কেন্দ্রে।

অশোক কুমার দেবনাথ আরও জানান, এবারের নির্বাচনে ইসির নতুন একটি সিদ্ধান্ত হলো সব সরঞ্জাম পাওয়ার পর আবার তা যাচাই-বাছাই হবে। এর পর কমিশনের অনুমোদন পেলে জেলা পর্যায়ে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ হালনাগাদ অনুসারে, দেশে এখন ভোটার ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন। বিপরীতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রায় ৯ লাখ। আর ভোটের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্তত ১১ লাখের মতো কর্মচারী-কর্মকর্তা থাকছেন নানা দায়িত্বে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে কমিশন। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়েছে। চলছে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ। আগামী ২ নভেম্বরের মধ্যে আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা প্রস্তুত করার জন্য মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।

নির্বাচনী কেনাকাটার কাজও প্রায় শেষ। সব মালামাল ইসিতে আসতে শুরু করেছে। আর প্রথমে তিনবার টেন্ডার দিয়েও স্ট্যাম্প প্যাড কিনতে পারেনি ইসি। যদিও পরে একটি কোম্পানিকে এই কাজ দেওয়া হয়েছে। তাই এগুলো ইসিতে পৌঁছাতে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। আর ব্যালটসহ অন্যান্য ছাপার কাজ বিজি প্রেসকে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া এখন থেকে সংসদ নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাঠপর্যায়ের সব অফিসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবকেও চিঠি দিয়েছে কমিশন।

ইতিমধ্যে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এটি চলবে নভেম্বর মাসজুড়ে। তফসিল ঘোষণার পর তাঁরা মাঠপর্যায়ে ৯ লক্ষাধিক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের (প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার) প্রশিক্ষণ দেবেন। এ ছাড়া চলছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। গতকাল শেষ হয়েছে বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দুই দিনব্যাপী প্রথম ধাপের প্রশিক্ষণ। দ্বিতীয় ধাপে ২৮ ও ২৯ অক্টোবর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি

আপডেট সময় : ০৭:৩৭:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

ভোটের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। ইসি রাজনৈতিক বিরোধে মাথা না ঘামিয়ে, গুছিয়ে এনেছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সব কাজ। এরই মধ্যে প্রায় ১২ ধরনের সরঞ্জাম কেনাকাটাও প্রায় শেষ। ব্যালট বাক্সসহ এসব সামগ্রী আসতে শুরু করেছে কমিশনে। আগামী সপ্তাহে পাঠানো হবে জেলা পর্যায়ে। এখন শুধু তফসিল ঘোষণার অপেক্ষা।

সংবিধান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। আর এর দিন গণনা শুরু হচ্ছে ১ নভেম্বর। সে মাসেই আসছে তফসিল। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে কমিশনের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ।

নির্বাচন প্রশ্নে বড় দুই দলের রাজনৈতিক মতভেদে মাথা ঘামাচ্ছে না ইসি, করছে না সমঝোতার অপেক্ষাও। ভোটগ্রহণে ব্যালট বাক্স-ব্যালট পেপার থেকে শুরু করে স্ট্যাম্প প্যাড, লাল গালাসহ ১২ ধরনের সরঞ্জাম কেনাকাটা শেষ পর্যায়ে।

এবার ৪২ হাজার ১০৩ কেন্দ্রে ভোটকক্ষ প্রায় ৬২ হাজার। এতে কক্ষ-প্রতি একটি ও কেন্দ্র-প্রতি একটি বাড়তি ধরে ব্যালট বাক্স লাগছে ৩ লাখ ২৫ হাজার। তাই নতুন করে কিনতে হচ্ছে ৮০ হাজার। আগে এসব বিদেশ থেকে আনা হলেও এবার কেনা হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে।

ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ‘ভোটগ্রহণে প্রয়োজনীয় অধিকাংশ সরঞ্জামই আমরা পেয়ে গেছি। শুধু স্ট্যাম্প প্যাডটা বাকি, সেটাও চলতি মাসের শেষের দিকে চলে আসবে।’

নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানোর আগে চলছে যাচাই-বাছাই। সব ঠিক থাকলে জেলা ও আঞ্চলিক অফিসে যাবে শিগগিরই। সেখান থেকেই ভোটের আগে পৌঁছাবে কেন্দ্রে।

অশোক কুমার দেবনাথ আরও জানান, এবারের নির্বাচনে ইসির নতুন একটি সিদ্ধান্ত হলো সব সরঞ্জাম পাওয়ার পর আবার তা যাচাই-বাছাই হবে। এর পর কমিশনের অনুমোদন পেলে জেলা পর্যায়ে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ হালনাগাদ অনুসারে, দেশে এখন ভোটার ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন। বিপরীতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রায় ৯ লাখ। আর ভোটের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্তত ১১ লাখের মতো কর্মচারী-কর্মকর্তা থাকছেন নানা দায়িত্বে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে কমিশন। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়েছে। চলছে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ। আগামী ২ নভেম্বরের মধ্যে আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা প্রস্তুত করার জন্য মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।

নির্বাচনী কেনাকাটার কাজও প্রায় শেষ। সব মালামাল ইসিতে আসতে শুরু করেছে। আর প্রথমে তিনবার টেন্ডার দিয়েও স্ট্যাম্প প্যাড কিনতে পারেনি ইসি। যদিও পরে একটি কোম্পানিকে এই কাজ দেওয়া হয়েছে। তাই এগুলো ইসিতে পৌঁছাতে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। আর ব্যালটসহ অন্যান্য ছাপার কাজ বিজি প্রেসকে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া এখন থেকে সংসদ নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাঠপর্যায়ের সব অফিসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবকেও চিঠি দিয়েছে কমিশন।

ইতিমধ্যে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এটি চলবে নভেম্বর মাসজুড়ে। তফসিল ঘোষণার পর তাঁরা মাঠপর্যায়ে ৯ লক্ষাধিক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের (প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার) প্রশিক্ষণ দেবেন। এ ছাড়া চলছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। গতকাল শেষ হয়েছে বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দুই দিনব্যাপী প্রথম ধাপের প্রশিক্ষণ। দ্বিতীয় ধাপে ২৮ ও ২৯ অক্টোবর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।