‘স্মার্ট দেশের স্মার্ট সৈনিক হবে আজকের শিশুরা’
- আপডেট সময় : ১০:৫০:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩
- / ৫০৬ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকের শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সৈনিক। এজন্য শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষা ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার। সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধের অস্ত্র কেনার পরিবর্তে সেই অর্থে সারাবিশ্বের শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের দাবী জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ১০টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং সাতটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। কিশোর-কিশোরীদের সাইবার অপরাধ রোধে ১৩২১৯ নম্বরের হেল্পলাইন সেবা, স্মার্ট ৩৩৩, স্মার্ট প্রেগনেন্সি মনিটরিং সিস্টেম এবং সমন্বিত ই-টোল কালেকশন সেবাসহ আরও মোট ১০টি ই-সেবা প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।
বছরব্যাপী অনুষ্ঠিত শিশুকিশোরদের বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের শেখ রাসেল পদক ও স্মার্ট বাংলাদেশ পুরস্কারও প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষায় মানুষ করতে হবে। শিশুর্দের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।
সরকার প্রধান বলেন, সামরিক শাসকরা ক্ষমতায় আসার পর দেশে, শিশুদের সঠিক ইসিহাস জানতে দেয়নি।
যুদ্ধে অস্ত্রের পেছনে খরচ না করে সেই অর্থ সারা বিশ্বের শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ব্যয় করতে বিশ্ব নেতাদের আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধের সময় কী অবস্থা হতে পারে, সেটা আমাদের নিজেদের জীবন দিয়ে দেখেছি। আমার চোখে দেখেছি- লাশ পড়ে আছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায়। আজকে সারা পৃথিবীতে যে যুদ্ধ চলছে, কিছুদিন আগে দেখলাম ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, এখন আবার ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের, ইসরায়েলেও শিশু মারা যাচ্ছে, ফিলিস্তিনেও মানুষ মারা যাচ্ছে। গতকাল দেখলাম হাসপাতালে বোম মেরে মানুষ মারছে। রক্তাক্ত সেই শিশুদের চেহারা। আমি বিশ্ব নেতাদেরকে বলব, যুদ্ধ বন্ধ করেন। অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। যুদ্ধ-অস্ত্র মানুষের মঙ্গল আনে না। সবচেয়ে কষ্টে আছি আমরা নারীরা, আর যুবকেরা দেয় জীবন। সন্তানরা পিতা-মাতা হারা হচ্ছে। তাদের কী যে বেদনা সেটা আমরা জানি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে আমার পরিবারের সবাইকে হত্যার পর রিফিউজি হিসেবে আমি ও আমার বোনকে বিদেশে থাকতে হয়েছে। রিফিউজি হিসেবে থাকার কষ্ট আমরা বুঝি। নিজের নাম-পরিচয় দিতে পারব না, অন্যের দেশ, ভাষা আলাদা, সেখানে থাকতে হবে, নিজের দেশে কবে যাব সে নিশ্চয়তা নেই। সেভাবেই ছয়টি বছর কাটিয়ে এসেছি।’
পরে শেখ রাসেলকে নিয়ে তথ্যচিত্র ও ত্রিমাত্রিক এনিমেশন চিত্র দেখানো হয়। একটি ভিডিও বার্তায় শেখ রাসেলের সাথে নিজের স্মৃতিচারণ করেন ভারতীয় সাবেক সেনা কর্মকর্তা অশোক কুমার তারা। শেখ রাসেলকে নিয়ে লেখা ‘স্মরণের আবরণে শেখ রাসেল’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রাধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৬৪ সালের আজকের এই দিনে (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন শেখ রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নরপিশাচরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল তাকেও। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে তৃতীয়বারের মতো আজ ‘শেখ রাসেল দিবস’ পালনের প্রতিপাদ্য ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়।