ফিলিস্তিনের গাজার একটি হাসপাতালে ইসরায়েলের বিমান হামলায় পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার উদ্বেগ আরও বেড়েছে। এতে বুধবার (১৮ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজার একটি হাসপাতালে ইসরায়েলের বিমান হামলায় কয়েকশ মানুষ নিহত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা বেড়েছে। এতে ওই অঞ্চল থেকে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা আরও বেড়েছে। ফলে বুধবার জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে গেছে।
এদিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১ দশমিক ৫৫ ডলার বা ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি উঠে গেছে ৯১ দশমিক ৪৫ ডলারে। অপর বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের (ডব্লিউটিআই) দাম ১ দশমিক ৬৬ ডলার বা ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল দাঁড়িয়েছে ৮৮ দশমিক ৩২ ডলারে।
এদিন উভয় বেঞ্চমার্কের দাম বেড়ে বিগত দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চে উঠেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে গাজা শহরের কেন্দ্রস্থল আল-আহলিল আরব হাসপাতালে একাধিক বিস্ফোরণ হয়। এতে অন্তত ৫০০ জন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনার জন্য ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা এক অপরের ওপর দোষারোপ করছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এই ঘটনার প্রভাবে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়ার শঙ্কা বেড়েছে।
কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার বিশ্লেষক বিবেক ধর জানিয়েছেন, ইসরাইল-হামাসের মধ্যকার এই সংঘাত যদি দীর্ঘায়িত হয় এবং এই সংঘাতে ইরান সরাসরি জড়িয়ে পড়ে, তাহলে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলারে উঠে যেতে পারে।
ইসরাইল-হামাস সংঘাত শুরুর পর থেকেই বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। ব্রেন্ট ক্রুড ও ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) উভয় বেঞ্চমার্কই শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। এতে গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআইয়ের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।
এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। গত বছরের জুনে এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ১২০ ডলারের ওপরে উঠে যায়। যদিও পরে তা পর্যায়ক্রমে কমতে থাকে। ফলে চলতি বছরের মে মাসে তা কমে ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলারের কাছাকাছি নামে। কিন্তু ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণায় আবারও উর্ধ্বমুখী হতে থাকে অপরিশোধিত জ্বালানির দাম। যার কারণে এক পর্যায়ে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল ৯৫ ডলারের কাছাকাছি উঠে যায়।