ঢাকা ১২:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইসরায়েলকে অস্ত্র দেয়ার প্রতিবাদে মার্কিন পররাষ্ট্র কর্মকর্তার পদত্যাগ

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪২৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হামাস-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে ইসরায়েলে অস্ত্র সহযোগিতা বাড়াতে আমেরিকার নেওয়া পদক্ষেপের বিরোধিতা করে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তা জশ পল পদত্যাগ করেছেন।

জশ পল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন অভিজ্ঞ ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক-সামরিক এবং পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগের পরিচালক ছিলেন। তিনি মার্কিন মিত্রদের কাছে অস্ত্র হস্তান্তরের বিষয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানোর বাড়ানোর মার্কিন প্রশাসনের নীতির সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করলেন জশ পল।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় টানা ১৩ দিন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। উপত্যকাটির শাসকগোষ্ঠী হামাসের রকেট হামলার প্রতিবাদে এমন হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। নির্বিচারে চালানো এই হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে বেসামরিক মানুষ। হামাস নির্মূলে চালানো এই হামলায় মানা হচ্ছে না যুদ্ধ সম্পর্কিত কোন নীতিমালা। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের ঘনিষ্ট মিত্র ইসরায়েলের হামলাকে সমর্থন জানিয়ে সেখানে অস্ত্র সহায়তার পাশাপাশি দুটি বিমানবাহী রণতরীও পাঠিয়েছে ভূমধ্যসাগরে। সেই সঙ্গে হামাসকে জঙ্গি সংগঠন বলতেও পিছুপা হয়নি ওয়াশিংটন। হামাস নির্মূলে গাজায় ভয়াবহ অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমারা। সেখানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে পানি-জ্বালানি-খাবার সরবরাহ। অবরোধ ও হামলায় সরাসরি ভুক্তভোগী হচ্ছেন গাজায় বসবাসকারী প্রায় ২৩ লাখ নারী-শিশু-বৃদ্ধ।

গাজা সংকটে নিজ দেশের প্রেসিডেন্ট এবং ওয়াশিংটনের নেয়া পদক্ষেপে তীব্র আপত্তি ও ঘৃণা জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের যে বিভাগটি বিদেশে অস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে কাজ করে, পদত্যাগকৃত ওই কর্মকর্তা সেই বিভাগেই কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

পদত্যাগের বিষয়ে জশ পল তাঁর লিঙ্কডইন-এ লিখেছেন, ‘সংঘাতে এক পক্ষকে আরো অস্ত্র দেওয়া সহ কয়েকটি বড় নীতিগত সিদ্ধান্তের সমর্থনে আমি কাজ করতে পারি না। আমি বিশ্বাস করি এসব সিদ্বান্ত অদূরদর্শী, ধ্বংসাত্মক, অন্যায্য এবং আমরা যে মূল্যবোধ প্রকাশ্যে সমর্থন করি তার বিপরীত।

ইসরায়েলের ওপর হামাসের অস্বাভাবিক আক্রমণের কথা স্বীকার করে পল আরো বলেছেন, ‘আমি  বিশ্বাস করি ওই হামলার ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া ফিলিস্তিনিদের আরো গভীর দুর্ভোগের দিকে নিয়ে যাবে।

গত ১১ বছর ধরে ‘নৈতিক আপস’ করে ওই ব্যুরোতে কাজ করছিলেন জানিয়ে পল বলেছেন, ‘আমি আজকে চলে যাচ্ছি কারণ আমি বিশ্বাস করি যে ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানো প্রসারিত করা এবং ত্বরান্বিত করা মার্কিন প্রশাসনের একটি প্রাণঘাতী সিদ্ধান্ত। আমি এ বিষয়ে দর কষাকষির শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছি।’

পদত্যাগের পর সংবাদ মাধ্যম হাফপোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তিনি অনুভব করেছেন যে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ তিনি জানতেন যে তিনি মার্কিন সরকারকে মানবিক নীতির জন্য চাপ দিতে পারবেন না।

তিনি বলেন, ‘বিতর্কিত অস্ত্র বিক্রির নীতি পরিবর্তন করার জন্য বিতর্ক এবং আলোচনা করে আমি আমার প্রচেষ্টা চালিয়েছি।’

বুধবার পলের পদত্যাগের ঘোষণা প্রকাশ্যে আসার পর দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর অনেকটা অবাক হয়েছেন। অনেকটা শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকে তাকে বলেছেন, আমরা একই রকম অনুভব করি এবং বুঝতে পারি।

পল হাফপোস্টকে বলেছেন, ‘তিনি গত সপ্তাহে ছুটিতে ছিলেন। এটি বেশ সৌভাগ্যের ছিল কারণ আমি মনে করি, যদি আমি না থাকতাম তবে এটি নিয়ে ভাবার এবং পদত্যাগ করার সময় দেওয়ার পরিবর্তে আমাকে বরখাস্ত করা হত।’

তবে এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র পলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে হাফপোস্ট জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইসরায়েলকে অস্ত্র দেয়ার প্রতিবাদে মার্কিন পররাষ্ট্র কর্মকর্তার পদত্যাগ

আপডেট সময় : ০৭:৫৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

হামাস-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে ইসরায়েলে অস্ত্র সহযোগিতা বাড়াতে আমেরিকার নেওয়া পদক্ষেপের বিরোধিতা করে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তা জশ পল পদত্যাগ করেছেন।

জশ পল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন অভিজ্ঞ ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক-সামরিক এবং পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগের পরিচালক ছিলেন। তিনি মার্কিন মিত্রদের কাছে অস্ত্র হস্তান্তরের বিষয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানোর বাড়ানোর মার্কিন প্রশাসনের নীতির সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করলেন জশ পল।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় টানা ১৩ দিন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। উপত্যকাটির শাসকগোষ্ঠী হামাসের রকেট হামলার প্রতিবাদে এমন হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। নির্বিচারে চালানো এই হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে বেসামরিক মানুষ। হামাস নির্মূলে চালানো এই হামলায় মানা হচ্ছে না যুদ্ধ সম্পর্কিত কোন নীতিমালা। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের ঘনিষ্ট মিত্র ইসরায়েলের হামলাকে সমর্থন জানিয়ে সেখানে অস্ত্র সহায়তার পাশাপাশি দুটি বিমানবাহী রণতরীও পাঠিয়েছে ভূমধ্যসাগরে। সেই সঙ্গে হামাসকে জঙ্গি সংগঠন বলতেও পিছুপা হয়নি ওয়াশিংটন। হামাস নির্মূলে গাজায় ভয়াবহ অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমারা। সেখানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে পানি-জ্বালানি-খাবার সরবরাহ। অবরোধ ও হামলায় সরাসরি ভুক্তভোগী হচ্ছেন গাজায় বসবাসকারী প্রায় ২৩ লাখ নারী-শিশু-বৃদ্ধ।

গাজা সংকটে নিজ দেশের প্রেসিডেন্ট এবং ওয়াশিংটনের নেয়া পদক্ষেপে তীব্র আপত্তি ও ঘৃণা জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের যে বিভাগটি বিদেশে অস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে কাজ করে, পদত্যাগকৃত ওই কর্মকর্তা সেই বিভাগেই কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

পদত্যাগের বিষয়ে জশ পল তাঁর লিঙ্কডইন-এ লিখেছেন, ‘সংঘাতে এক পক্ষকে আরো অস্ত্র দেওয়া সহ কয়েকটি বড় নীতিগত সিদ্ধান্তের সমর্থনে আমি কাজ করতে পারি না। আমি বিশ্বাস করি এসব সিদ্বান্ত অদূরদর্শী, ধ্বংসাত্মক, অন্যায্য এবং আমরা যে মূল্যবোধ প্রকাশ্যে সমর্থন করি তার বিপরীত।

ইসরায়েলের ওপর হামাসের অস্বাভাবিক আক্রমণের কথা স্বীকার করে পল আরো বলেছেন, ‘আমি  বিশ্বাস করি ওই হামলার ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া ফিলিস্তিনিদের আরো গভীর দুর্ভোগের দিকে নিয়ে যাবে।

গত ১১ বছর ধরে ‘নৈতিক আপস’ করে ওই ব্যুরোতে কাজ করছিলেন জানিয়ে পল বলেছেন, ‘আমি আজকে চলে যাচ্ছি কারণ আমি বিশ্বাস করি যে ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানো প্রসারিত করা এবং ত্বরান্বিত করা মার্কিন প্রশাসনের একটি প্রাণঘাতী সিদ্ধান্ত। আমি এ বিষয়ে দর কষাকষির শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছি।’

পদত্যাগের পর সংবাদ মাধ্যম হাফপোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তিনি অনুভব করেছেন যে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ তিনি জানতেন যে তিনি মার্কিন সরকারকে মানবিক নীতির জন্য চাপ দিতে পারবেন না।

তিনি বলেন, ‘বিতর্কিত অস্ত্র বিক্রির নীতি পরিবর্তন করার জন্য বিতর্ক এবং আলোচনা করে আমি আমার প্রচেষ্টা চালিয়েছি।’

বুধবার পলের পদত্যাগের ঘোষণা প্রকাশ্যে আসার পর দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর অনেকটা অবাক হয়েছেন। অনেকটা শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকে তাকে বলেছেন, আমরা একই রকম অনুভব করি এবং বুঝতে পারি।

পল হাফপোস্টকে বলেছেন, ‘তিনি গত সপ্তাহে ছুটিতে ছিলেন। এটি বেশ সৌভাগ্যের ছিল কারণ আমি মনে করি, যদি আমি না থাকতাম তবে এটি নিয়ে ভাবার এবং পদত্যাগ করার সময় দেওয়ার পরিবর্তে আমাকে বরখাস্ত করা হত।’

তবে এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র পলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে হাফপোস্ট জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি।