ঢাকা ০৬:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশে বৈদেশিক রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ বিলিয়ন ডলারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৩:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪১৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী গত ১৩ জুলাই থেকে দেশের গ্রস বা মোট রিজার্ভের হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই অনুসারে গত বৃহস্পতিবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ০৭ বিলিয়ন ডলারে। এ দিয়ে সাড়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এতে বিশ্ববাজারে তেল, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। ফলে আমদানি ব্যয়ও বৃদ্ধি পায়। সেই থেকে দেশের বিদেশি মুদ্রার মজুত কমছে।

আইএমএফের নথি অনুযায়ী, চলতি হিসাবের ঘাটতির সাময়িক উন্নতি হয়। পাশাপাশি করোনা মহামারির সময় বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। তাতে ২০২১ সালের আগস্টে দেশের মোট রিজার্ভ রেকর্ড ৪০ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের পৌঁছে।

পরে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। বৈদেশিক চাহিদায় মন্দা দেখা যায়। একই সঙ্গে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। ফলে রিজার্ভের দ্রুত পতন ঘটতে শুরু করে। ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে মোট রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে।

২০২৩ সালে প্রায় প্রতি মাসে রিজার্ভ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার করে কমছে। আমদানি ব্যয়ে লাগাম টেনেও পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। ব্যাংকে সংকট থাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের জরুরি ক্রয় এবং বকেয়া বিল পরিশোধে রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। এতে পুরো অর্থনীতি নাজুক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।

ইতোমধ্যে ঘাটতি মেটাতে আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। যার অন্যতম শর্ত ছিল বৈশ্বিক ঋণদাতা গোষ্ঠীটির ব্যালেন্স অব পেমেন্টস এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম৬) অনুযায়ী রিজার্ভ হিসাব করতে হবে। এরই মধ্যে তা শুরু হয়েছে।

আইএমএফের ঋণের শর্ত অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে নিট রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার কথা। তবে গ্রস রিজার্ভের চেয়ে নিট রিজার্ভ আরও প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার কম। এর মানে এখন নিট রিজার্ভ রয়েছে ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে। আগামী ডিসেম্বরে তা ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হবে। কিন্তু সেটা আদৌ সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না।

সম্প্রতি নিজস্ব পদ্ধতিতেও বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়নের পরিমাণ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই হিসাব অনুযায়ী, এখন দেশের রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। সাধারণত, প্রতি মাসে গড়ে বিদেশ থেকে পণ্য কেনার জন্য ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়। সেই হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ৪ মাসের মতো আমদানি খরচ মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।

এর বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। এটি শুধু আইএমএফকে দেয়া হয়। কিন্তু প্রকাশ করা হয় না। আইএমএফ সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশে বৈদেশিক রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ বিলিয়ন ডলারে

আপডেট সময় : ০৯:৩৩:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী গত ১৩ জুলাই থেকে দেশের গ্রস বা মোট রিজার্ভের হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই অনুসারে গত বৃহস্পতিবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ০৭ বিলিয়ন ডলারে। এ দিয়ে সাড়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এতে বিশ্ববাজারে তেল, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। ফলে আমদানি ব্যয়ও বৃদ্ধি পায়। সেই থেকে দেশের বিদেশি মুদ্রার মজুত কমছে।

আইএমএফের নথি অনুযায়ী, চলতি হিসাবের ঘাটতির সাময়িক উন্নতি হয়। পাশাপাশি করোনা মহামারির সময় বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। তাতে ২০২১ সালের আগস্টে দেশের মোট রিজার্ভ রেকর্ড ৪০ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের পৌঁছে।

পরে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। বৈদেশিক চাহিদায় মন্দা দেখা যায়। একই সঙ্গে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। ফলে রিজার্ভের দ্রুত পতন ঘটতে শুরু করে। ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে মোট রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে।

২০২৩ সালে প্রায় প্রতি মাসে রিজার্ভ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার করে কমছে। আমদানি ব্যয়ে লাগাম টেনেও পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। ব্যাংকে সংকট থাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের জরুরি ক্রয় এবং বকেয়া বিল পরিশোধে রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। এতে পুরো অর্থনীতি নাজুক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।

ইতোমধ্যে ঘাটতি মেটাতে আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। যার অন্যতম শর্ত ছিল বৈশ্বিক ঋণদাতা গোষ্ঠীটির ব্যালেন্স অব পেমেন্টস এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম৬) অনুযায়ী রিজার্ভ হিসাব করতে হবে। এরই মধ্যে তা শুরু হয়েছে।

আইএমএফের ঋণের শর্ত অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে নিট রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার কথা। তবে গ্রস রিজার্ভের চেয়ে নিট রিজার্ভ আরও প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার কম। এর মানে এখন নিট রিজার্ভ রয়েছে ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে। আগামী ডিসেম্বরে তা ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হবে। কিন্তু সেটা আদৌ সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না।

সম্প্রতি নিজস্ব পদ্ধতিতেও বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়নের পরিমাণ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই হিসাব অনুযায়ী, এখন দেশের রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। সাধারণত, প্রতি মাসে গড়ে বিদেশ থেকে পণ্য কেনার জন্য ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়। সেই হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ৪ মাসের মতো আমদানি খরচ মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।

এর বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। এটি শুধু আইএমএফকে দেয়া হয়। কিন্তু প্রকাশ করা হয় না। আইএমএফ সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার।