গত সপ্তাহের মতোই উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা। রাজধানীর বাজারে বেড়েছে আদার দাম। বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩০০ টাকা কেজিতে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে বেশির ভাগ সবজির। বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। মাছ-মাংসের বাজারেও দাম বাড়তি।
তবে সবজির এমন উচ্চমূল্য বিপাকে ফেলছে সাধারণ ক্রেতাদের। কাঁচাবাজার করতে আসা ক্রেতা আলামিন হোসেন বলেন, সব কিছুর দামই তো বেড়েছে। আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষরা যে টিকে থাকব, তার অবস্থা নেই। মাছ-মাংসের কথা তো বাদই দিলাম, শাক-সবজির দামও যদি এমন বাড়ে, তাহলে তিন বেলার জায়গায় দু-বেলা খেতে হবে।
আরেক ক্রেতা জসীম উদ্দিন বলেন, গরিব মানুষের সস্তার খাবার হলো শাক সবজি। সেটার দামও যদি এমন থাকে তাহলে খাবে কি? যে টাকা নিয়ে আসলে আগে ব্যাগ ভরে সবজি নিয়ে বাড়িতে যেতাম, এখন সেই পরিমাণ টাকায় ব্যাগের অর্ধেকও ভরে না।
আজ শুক্রবার রাজধানীর টাউন হল বাজার, মিরপুর, মহাখালী, রামপুরা, বনশ্রী, কাওরান বাজার, মালিবাগ, শান্তিনগর বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
টিসিবির হিসাব বলছে, গত এক সপ্তাহে আদার দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ পর্যন্ত। আমদানি কম হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।
এদিকে বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে আর আমদানি পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা। ঢেঁড়স-পটল-চিচিঙা-ঝিঙা-কাঁকরোলের কেজি ৮০ টাকা আর কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়, সিম ২০০ টাকা, করলা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, লাউ ৭০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, কুমড়া ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৯০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং গাজর ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, শসা কেজি ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ১০ টাকা কমেছে ডিমের দাম। বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
মাছ বাজারেও নেই স্বস্তি। পাঙাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে। রুই, কাতলা, কালিবাউশ ও মৃগেল বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
সপ্তাহ ঘুরলেও মুরগি ও গরুর মাংসের দামের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায় আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৫০ টাকায়।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) মোহাম্মদপুর স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি পাকিস্তানি (লাল) মুরগির দাম ২৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, দেশি মুরগির দাম প্রতিকেজি ৪৮০ টাকা। এদিকে গরুর মাংস কিনতে কেজিতে গুনতে হচ্ছে ৮০০ টাকা। খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা।
বাজার করতে আসা ক্রেতা রিফাত হোসেন বলেন, বর্তমানে বাজারের যে অবস্থা, গরু বা মুরগি কেনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আমাদের কষ্ট তো আর কেউ বোঝে না।